চোরাই সিডি কেনার পক্ষে জার্মানিতে চাপ বাড়ছে
২ ফেব্রুয়ারি ২০১০বিশ্বের যে সামান্য কয়েকটি দেশে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য গোপন রাখার ব্যবস্থা রয়েছে, তার মধ্যে সুইজারল্যান্ডের স্থান শীর্ষে৷ অর্থাৎ সেখানে আপনি অ্যাকাউন্ট খুলে মোটা অঙ্কের অর্থ জমা রাখতে পারেন – আপনার নাম-ধাম-পরিচয় গোপন থেকে যাবে৷ গোপনীয়তার এই নিশ্চয়তা থাকার ফলে গোটা বিশ্বের অনেক ধনী ব্যক্তি নিজেদের অবৈধ অর্থ এই সব দেশের ব্যাঙ্কে গচ্ছিত রাখেন৷ বিশ্বজোড়া আর্থিক ও অর্থনৈতিক সঙ্কটের জের ধরে অবশ্য সুইজারল্যান্ড সহ কয়েকটি দেশের উপর আন্তর্জাতিক চাপ বেড়ে গেছে৷ ফলে বাধ্য হয়েই অনেক ক্ষেত্রে গ্রাহকদের গোপনীয়তার এই প্রতিশ্রুতি ভাঙতে হচ্ছে৷ বিষয়টি এতকাল সরকারী পর্যায়েই সীমাবদ্ধ ছিল – এবার আসরে নেমেছে এক তথ্য চোর, যার দাবি, তার হাতে মূল্যবান তথ্য রয়েছে৷ সে দাবি করছে, যে ১,৫০০ জার্মান নাগরিকের গোপন অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য তার কাছে রয়েছে৷ জার্মান সরকার এই সব মানুষদের চিহ্নিত করে যদি বকেয়া কর ও জরিমানা আদায় করে, সেক্ষেত্রে প্রায় ১০ কোটি ইউরো বাড়তি অর্থ রাজকোষে চলে আসবে বলে চোরের দাবি৷ পারিশ্রমিক হিসেবে সে ২৫ লক্ষ ইউরো দাবি করছে৷
বলাই বাহুল্য, অর্থনৈতিক সঙ্কটের এই বাজারে এত বড় অঙ্কের বকেয়া কর আদায় করতে পারলে জার্মান সরকারের সুবিধাই হবে৷ বিরোধী সামাজিক গণতন্ত্রী দল সহ অনেক মহলই সিডি কেনার পক্ষে সওয়াল করছে৷ কিন্তু প্রশ্ন উঠছে নৈতিকতা নিয়ে – চোরের কাছ থেকে কোন সরকার তথ্য কিনছে, বিষয়টি যথেষ্ট অস্বস্তিকর৷ সুইজারল্যান্ডের সরকারও এমন পদক্ষেপ না নেওয়ার জন্য জার্মান সরকারকে চাপ দিচ্ছে৷ তবে সরকার সম্ভবত ঐ তথ্য কিনে নেবে বলেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে৷ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল স্বয়ং দ্রুত ঐ সিডি জোগাড় করতে চান৷ তবে তার আগে আইনি জটিলতা কাটানোর চেষ্টা করছে সরকার৷ উল্লেখ্য, প্রায় ২ বছর আগে জার্মানির বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা অর্থের বিনিময়ে লিশ্টেনস্টাইনের গোপন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে তা কাজে লাগিয়েছিল৷ সেই কেলেঙ্কারির জের ধরে বেশ কিছু স্বনামধন্য ব্যক্তির নাম ফাঁস হয়ে যায় এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন, সম্পাদনা: সাগর সরওয়ার