চিকিৎসায় বার্লিন প্রাচীর
২৭ জানুয়ারি ২০১৫রস্টক বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে কাজ করেন কিডনি বিশেষজ্ঞ ডা. স্টেফেন মিৎসনার৷ সাবেক পূর্ব জার্মান আমলে তিনি সেখানেই পড়ালেখা করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘বার্লিন প্রাচীর পতনের আগেও আমরা এখানকার ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের মূল গবেষণা কেন্দ্রে কাজ করেছি৷ কিডনি সংক্রান্ত রোগ, ডায়ালিসিস ও প্রতিস্থাপনের জন্য এই হাসপাতালের সুনাম ছিল আগে থেকেই৷ সেজন্য আমার মতো শিক্ষার্থীরা এখানে পড়তে আসতো৷''
প্রাচীরের যখন পতন হয় তখন ছাত্র ছিলেন মিৎসনার৷ হাসপাতালের ভেতর পরিবর্তনের ততটা লক্ষণ না থাকলেও বাইরের পরিবেশটা অন্যরকম ছিল বলে জানান তিনি৷
লাইপশিসের ‘সোমবারের বিক্ষোভ'-এর আদলে রস্টকেও সেসময় বিক্ষোভ হয়েছিল৷ মিৎসনার সহ অন্য শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন৷ তাঁদের মূল লক্ষ্য ছিল রস্টকে অবস্থিত সাবেক পূর্ব জার্মানির গোয়েন্দা পুলিশ স্টাসি-র সদরদপ্তর৷ স্টাসি সদস্যরা বিক্ষোভের ছবি ও ভিডিও তুলেছিলেন৷ শিক্ষার্থীরা সেটা না জানলেও বুঝতে পারছিলেন যে, তাদের কেরিয়ার হুমকির মুখে৷
প্রাচীর পতনের ঘটনা মিৎসনারের ভাগ্য খুলে দিয়েছিল৷ তিনি তাঁর পরিবারের সঙ্গে এক হচে পেরেছিলেন৷ এছাড়া কৃত্রিম লিভার নিয়ে আরও গবেষণা করার সুযোগ পেয়েছিলেন৷ তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিতে তিনি এ বিষয়ে একটি আলোচনা-সভায় যোগ দেয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন৷
সেখান থেকে পাওয়া তথ্য এবং আরও গবেষণা শেষে মিৎসনার ও তাঁর সহকর্মীরা কয়েক বছর আগে একটি কৃত্রিম লিভার তৈরি করেন, যেটা রক্তে থাকা বিষাক্ত উপাদান পরিষ্কার করে৷ সারা বিশ্বের লিভার রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুপথযাত্রীদের বাঁচাতে এই ডিভাইসটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে৷ বিজ্ঞানীরা এখন রক্ত পরিষ্কারের আরও একটি প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করছেন, যেটা বিষযুক্ত রক্ত পরিষ্কার করবে৷ এক্ষেত্রে প্রথম পরীক্ষায় ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে৷
বার্লিন প্রাচীরের পতন ছাড়া নিজের গবেষণা নিয়ে এতদূর আসতে পারতেন না, বলে মনে করেন মিৎসনার৷ অর্থাৎ পরিবর্তনটা তাঁর জন্য ছিল একটা নতুনের শুরু৷