চার নেতার জামিন, সিবিআই অফিসে ছয় ঘণ্টা মমতা
১৭ মে ২০২১সকালে সিবিআই গিয়ে তাদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে এসে গ্রেপ্তার করে। নারদ-কেলেঙ্কারিতে যুক্ত অভিযোগে। দুই বর্তমান মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও ফিরহাদ হাকিম এবং সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমান বিধায়ক মদন মিত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয় সাবেক মেয়র ও মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও। শোভন বিজেপি-তে যোগ দিলেও বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না।
দলের নেতাদের এই ভাবে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোজা চলে যান সিবিআই অফিসে। নজিরবিহীনভাবে তিনি মোট ছয় ঘণ্টা সেখানে ছিলেন। তার দাবি ছিল, তার মন্ত্রী ও নেতাদের এই ভাবে গ্রেপ্তার করা বেআইনি। তাকেও গ্রেপ্তার করতে হবে সিবিআই-কে। কলকাতার নিজাম প্যালেসে সিবিআই অফিসের বাইরে তখন বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন কয়েকশ তৃণমূল কর্মী।
তারপর মামলা যায় সিবিআই কোর্টে। ভার্চুয়ালি শুনানি হয়। সিবিআইয়ের যুক্তি ছিল, এই চারজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। তদন্ত এখনো চলছে। তারা এখনো প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম। তাই তাদের জেলে রাখা হোক। ঘটনা হলো, ২০১৭ সালে এই মামলার তদন্ত শুরু করে সিবিআই। চার বছর পর তারা এদিন চার্জশিট পেশ করেছে।
অভিযুক্তদের পক্ষে অন্যতম আইনজীবী ও তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ''আমি আদালতে বলেছি, আজ যেভাবে নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেপ্তার করা হয়, তা সব নজির ভেঙে দিয়েছে। গত ৭ মে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, পুলিশ কাউকে অযথা আটক করবে না। করোনার জন্য তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা পুরোপুরি সিবিআইয়ের প্রতিশোধমূলক কাজ। ২০১৪ থেকে ২০২১ পর্যন্ত ফিরহাদ ও সুব্রত মন্ত্রী। তারা কোথাও পালাননি। মামলার পর সাত বছরে যদি প্রমাণ নষ্ট না হয়ে থাকে, প্রভাব বিস্তার না করে থাকে, তা হলে জামিন কেন হবে না?''
কল্যাণ জানিয়েছেন, ''আমি আদালতে আরো জানিয়েছিলাম, কেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী ও মুকুল রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়নি? তাদের নামেও তো একই অভিযোগ আছে। তাছাড়া আমি বলেছি, সংবিধান অনুযায়ী, রাজ্যপাল এই সিদ্ধান্ত একতরফা নিতে পারেন না।''
সিবিআই আদালতের বিশেষ বিচারক চারজনকেই অন্তর্বর্তী জামিন দেন।
রায়ের পর তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, ''আমি খুব খুশি। আমরা আইনের রাস্তায় লড়েছি। সিবিআই যা বলেছিল সব বাজে কথা।'' আর রাজ্য বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''আদালতের রায়ে এই তদন্ত হচ্ছে। এর সঙ্গে বিজেপি বা কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো যোগ নেই। আইন আইনের পথে চলবে।''
জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এবিপি আনন্দ)