জামায়াতকে নিয়ে কৌশল?
২২ জানুয়ারি ২০১৪
নির্বাচন পরবর্তী সময়ে জামায়াতকে নিয়ে বিএনপির ওপর চাপ বাড়ছে৷ বিশেষ করে, জামায়াতের কারণে সহিংসতার দায় নিতে হচ্ছে বিএনপিকে৷ এ নিয়ে সরকারের দিক থেকে যেমন বিএনপির ওপর চাপ আছে৷ আন্তর্জাতিক মহল থেকেও চাপ অব্যাহত আছে৷ তারা কোনোভাবেই সহিংসতাকে গ্রহণ করছেন না৷
তাই সোমবার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের সমাবেশে জামায়াত না থাকার কারণ খুঁজছেন অনেকেই৷ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল মাহবুবুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘জামায়াত কর্মসূচিতে থাকলে অনেক প্রশ্ন এবং ভীতি চলে আসে৷ সোমবার সমাবেশে জামায়াতের অনুপস্থিতির কারণে বিএনপি স্বস্তিতে আছে৷ আর জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির জোটগত সম্পর্ক সাময়িক এবং কৌশলগত৷''
তবে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. ওসমান ফারুখ বলেন ভিন্ন কথা৷ তিনি বলেন, ‘‘সোমবারের সমাবেশে জামায়াত প্রকাশ্যে অংশ নেয়নি৷ সমাবেশের মধ্যে যে তারা উপস্থিত ছিল না সেটা নিশ্চিত নয়৷'' জামায়াত নেতাদের ব্যক্তিগত নিরপত্তার কারণে এমনটি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘বিএনপির অনেক নেতাও কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারেননি৷''
আর বিশ্লেষকরা একে দেখছেন বিএনপির চাপ কমানোর কৌশল হিসেবে৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বিএনপি অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক চাপ কমিয়ে আনতে হয়ত কৌশল নিয়েছে৷ জামায়াতের কাছ থেকে একটু দূরত্ব বজায় রেখে চলা শুরু করেছে৷'' কিন্তু শেষ পর্যন্ত জামায়াতকে বাদ দেয়া বিএনপির পক্ষে সম্ভব নয় বলেই মনে করেন তিনি৷ তিনি বলেন, ‘‘এই দূরত্ব রেখে বিএনপি হয়ত কয়েকমাস দেখবে তার ফল কি হয়৷ আর তাতে যদি কোনো ফল না আসে, বিএনপিকে যদি আবার হরতাল-অবরোধে যেতে হয়, তাহলে জামায়াতকে তার লাগবেই৷ নিকট অতীতে তার প্রমাণ আছে৷'' শান্তনু মজুমদার বলেন, ভোটের হিসাব করলেও জামায়াতকে বিএনপির প্রয়োজন৷
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শফিউল আলমও মনে করেন যে, বিএনপি আপাতত জামায়াতকে কৌশলগত কারণেই একটু দূরে রাখাতে চায়৷ তবে শেষ পর্যন্ত এটা বিএনপি-জামায়াতের সম্পর্কে নতুন কোনো মোড় নেবে কিনা – তা বুঝতে হলে আরো অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করেন তিনি৷