অস্ত্র শিল্পে বিনিয়োগ বাড়ানোর কৌশল
২৮ মার্চ ২০২২কয়েক মাস আগেও কেউ হয়ত ভাবতেই পারেননি ইউরোপে আবার যুদ্ধ হতে পারে৷ অনেক অস্ত্র বিক্রি কোম্পানিগুলো তখন অস্তিত্ত্ব রক্ষার লড়াইয়েই ব্যস্ত৷ রীতিমতো ধুঁকছিল তারা৷ তাই কর্মীদের অবসর ভাতা কমিয়েছে কোনো কোনো কোম্পানি৷বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নেয়ায় অনেক প্রতিষ্ঠানের তখন সম্পদের পরিমানও কমেছে৷ কিন্তু রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে রাতারাতি৷ অনেক বিনিয়োগকারী নতুন করে আগ্রহী হচ্ছেন অস্ত্র শিল্পের প্রতি৷ তাদের বড় একটা অংশ মনে করে, অস্ত্র খাতে বিনিয়োগকে এখন ‘টেকসই বিনিয়োগের' মর্যাদা দেয়া উচিত৷
সম্প্রতি ইউক্রেন যুদ্ধের দৃষ্টান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিটি ব্যাংকের দুই বিশ্লেষক বলেছেন, মুক্ত গণতন্ত্রের মূল্যবোধ রক্ষায় ভূমিকা রাখে অস্ত্র, তাই এই খাতের বিনিয়োগও ‘টেকসই বিনিয়োগ'৷ এছাড়া সুইডিশ ব্যাংক এসইবির সাম্প্রতিক উদ্যোগও সবার নজর কেড়েছে৷ প্রতিরক্ষা খাতে বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে ইতিমধ্যে নতুন পলিসি ঘোষণা করেছে তারা৷
এদিকে এতদিন সামরিক শক্তি বৃদ্ধির বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিলেও ইইউ অঞ্চলের দেশগুলোর ভাবনায়ও দ্রুত বড় ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ ইইউ কমিমনও পরিবর্তনশীল এ ধারাকে সমর্থন দিতে চায়৷ অস্ত্র খাতে বিনিয়োগকে সবুজ (টেকসই), নাকি বাদামি (অ-টেকসই) ক্যাটাগরিতে ফেলা হবে তা অবশ্য এখনো ঠিক করেনি ইউরোপীয় কমিশন, তবে জোটভুক্ত দেশগুলোর নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে৷
জার্মানির প্রতিরক্ষা শিল্পের লবিস্ট গ্রুপ বিডিএসভি-র প্রধান হান্স ক্রিস্টফ আৎসপোডিয়েনও ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে জাতীয় নিরাপত্তা জোরদার করার পরামর্শ দিয়েছেন৷ তার মতে, ইইউ-র উচিত প্রতিরক্ষা শিল্পকে এখনই ‘সমাজকে টেকসই করার' প্রয়োজনীয় উপাদান হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া৷
অস্ত্র খাতে বিনিয়োগকে সবুজ ক্যাটাগরিভুক্ত করে এই খাতে বিনিয়োগকে এখনো সরাসরি উৎসাহিত করা না হলেও বিনিয়োগ বৃদ্ধি অবশ্য থেমে নেই৷
নিজেদের সীমিত সামরিক শক্তিকে আপাতত মেনে নিয়ে সম্প্রতি ইউক্রেনকে ১৫০০ অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক এবং অ্যান্টি-এয়ারক্রাফ্ট ক্ষেপণাস্ত্র দেয়ার অঙ্গীকার করেছে জার্মানি৷ পাশাপাশি নিজেদের সামরিক শক্তি বাড়াতে ২০২২ সালের বাজেটে সামরিক খাতে বরাদ্দ ১০০ বিলিয়ন ইউরো বাড়ানোর ঘোষণাও দিয়েছে সরকার৷ সামরিক খাতে বাজেট বৃদ্ধির কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে চ্য্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেছেন, ‘‘দেশের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্র রক্ষার জন্য আমাদের নিরাপত্তা খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে৷''
ক্রিস্টি প্লাডসন/ এসিবি