ঘুস দিন, সেবা নিন?
কাঙ্খিত সেবা পেতে ঘুস দিতে হয় বাংলাদেশের জনগণকে৷ টিআইবি পরিচালিত ‘সেবাখাতে দুর্নীতি: জাতীয় খানা জরিপ ২০১৭’ শীর্ষক গবেষণায় দেখা গেছে ২০১৭ সালে সেবা পেতে ১৮৬৭ দশমিক ১ কোটি টাকা ঘুস দিতে হয়েছে জনগণকে৷
নিরাপত্তা পেতে ঘুস
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ দীর্ঘ দিনের৷ টিআইবি পরিচালিত জরিপেও দেখা গেছে, সর্বাধিক দুর্নীতিগ্রস্ত খাত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা এবং ২০১৭ সালে এ খাতে খানা প্রতি ঘুস প্রদানের হার শতকরা ৭২ দশমিক ৫ ভাগ৷ সংস্থাটির কাছ থেকে সেবা নিতে গিয়ে গড়ে প্রতিটি খানাকে ৬ হাজার ৯৭২ টাকা ঘুস দিতে হয়েছে৷
পরিচয়পত্র পেতেও ঘুস
পাসপোর্ট পাওয়া নাগরিকের অধিকার৷ কিন্তু টিআইবি জরিপ বলছে, এ অধিকার পেতে ২০১৭ সালে খানা প্রতি ঘুস প্রদানের হার ছিল শতকরা ৬৭ দশমিক ৩ ভাগ৷ এ খাতে খানাপ্রতি গড় ঘুসের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৮৮১ টাকা৷
তৃতীয় অবস্থানে বিআরটিএ
সম্প্রতি নিরাপদ সড়কের দাবিতে করা ছাত্র আন্দোলনের সময়ও রাস্তায় দলবেঁধে ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন কিংবা ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালানোর প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল৷ কিন্তু ওঝার ঘাড়েই যে ভূত! টিআইবি জরিপে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সেবা দিতে গিয়ে ঘুস নেয়ার তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে৷
আরো যারা ঘুস নেন
টিআইবি করা এ জরিপে সেবা দিতে গিয়ে ঘুসগ্রহণকারী অন্য সংস্থাগুলো হলো যথাক্রমে: বিচারিক সেবা (৬০ দশমিক শতাংশ), ভূমিসেবা (৪৪ দশমিক ৯ শতাংশ), শিক্ষা (সরকারি ও এমপিওভুক্ত) (৪২ দশমিক ৯ শতাংশ) এবং স্বাস্থ্য (৪২ দশমিক ৫ শতাংশ)৷
বেড়েছে ঘুস প্রদানের পরিমাণ
টিআইবি বলছে, জাতীয়ভাবে প্রাক্কলিত মোট ঘুসের পরিমাণ ২০১৫ সালে ছিল ৮ হাজার ৮২১ দশমিক ৮ কোটি টাকা৷ ২০১৭ সালে তা এক হাজার ৮৬৭ দশমিক ১ কোটি টাকা বা শতকরা ২১ দশমিক ২ ভাগ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০ হাজার ৬৮৮ দশমিক ৯ কোটি টাকা , যা ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের (সংশোধিত) শতকরা ৩ দশমিক ৪ ভাগ৷
ঘুস না দিলে সেবা দেয়া হয় না
‘ঘুস না দিলে কাঙ্খিত সেবা পাওয়া যায় না’ এমনটি মনে করেন জরিপে অন্তর্ভুক্ত শতকরা ৮৯ খানা৷ ২০১৫ সালে এ সংখ্যা ছিল শতকরা ৭০ দশমিক ৯ ভাগ৷ টিআইবি বলছে, ‘‘এর মাধ্যমে ধারণা করা যায় যে, দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ তুলনামূলক বৃদ্ধি পেয়েছে৷’’