ঘড়ির কাঁটায় আর পরিবর্তন চায় না ইইউ
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮বিশ্বযুদ্ধ ও গত শতকের সত্তরের দশকে তেল সংকটের সময় জ্বালানি সংরক্ষণ করতে বছরে একবার ঘড়ির কাঁটা এক ঘণ্টা এগিয়ে এনে, পরে আবার তা পিছিয়ে দেয়া হতো৷ ইইউর দেশগুলোতে ১৯৯৬ সালে আইন করে সেই ব্যবস্থা চালু করা হয়৷ সেই থেকে প্রতিবছর মার্চের শেষ রবিবার ঘড়ির কাঁটা এক ঘণ্টা এগিয়ে দেয়া হয়, আর অক্টোবরের শেষ রবিবারে তা আবারও পিছিয়ে আনা হয়৷
এই ব্যবস্থা সম্পর্কে নাগরিকদের মতামত জানতে ইউরোপীয় কমিশন সম্প্রতি একটি অনলাইন জরিপের আয়োজন করেছিল৷ এতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রায় ৪৬ লক্ষ নাগরিক অংশ নেন৷ প্রায় ৮০ শতাংশ উত্তরদাতা ঘড়ির কাঁটায় পরিবর্তন আনার পদ্ধতি বাতিলের পক্ষে ভোট দেন৷ উল্লেখ্য, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের প্রায় ৩০ লক্ষই ছিলেন জার্মান নাগরিক৷
জরিপের এই ফলাফল দেখে কমিশন ডেলাইট সেভিংস ব্যবস্থা বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে৷ যদিও সমালোচকরা বলছেন, ইইউর মোট জনসংখ্যার একটি সামান্য অংশ জরিপে অংশ নিয়েছিলেন৷
ইইউর পরিবহণ বিষয়ক কমিশনার ভিওলেটা বুলস শুক্রবার জানান, ২০১৯ সালের অক্টোবর থেকে ঘড়ির কাঁটায় পরিবর্তন আনার ব্যবস্থা বন্ধ করা হবে৷
তবে এই সিদ্ধান্ত মানা হবে কিনা, তা প্রতিটি সদস্যরাষ্ট্র ঠিক করবে৷ এজন্য বিষয়টি যার যার সংসদে পাস হয়ে আসতে হবে৷ আগামী এপ্রিলের মধ্যে সব দেশকে এ ব্যাপারে তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে হবে৷
আশঙ্কা
সব সদস্যরাষ্ট্র ইইউ'র এই সিদ্ধান্ত না-ও মানতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন৷ সেক্ষেত্রে একেক দেশে একেক সময়ব্যবস্থা চালু হতে পারে৷ ইইউ কমিশনার বুলস আশা করছেন, তাদের এই সিদ্ধান্ত সব দেশ মেনে নেবে৷
যাঁরা ডেলাইট সেভিংস বাতিলের পক্ষে, তাঁদের যুক্তি হচ্ছে, এখন স্মার্ট শহর, স্মার্ট ভবন, স্মার্ট সলিউশনসের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি চলে এসেছে৷ ফলে এখন নানাভাবে জ্বালানি সংরক্ষণের বিষয়টি চালু আছে৷ তাই ঘড়ির কাঁটায় পরিবর্তন এনে জ্বালানি সংরক্ষণের উপায় এখন সেকেলে হয়ে গেছে৷ তাছাড়া এই পদ্ধতির কারণে অনেকে স্বাস্থ্যগত ও ঘুম সংক্রান্ত সমস্যায় পড়েন বলে তাঁদের অভিযোগ৷
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট জঁ ক্লোদ ইয়ুংকার এই পদ্ধতি বাতিলের ভাবনাকে সমর্থন জানিয়েছেন৷
জেডএইচ/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স)