1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরো সংকট

১৬ মে ২০১২

গ্রিসে নতুন নির্বাচন, ফ্রান্সের নতুন প্রেসিডেন্টের ঘোষিত নীতি – একের পর এক অনিশ্চয়তার ফলে ইউরো এলাকার ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে৷ মন্দার হাত থেকে আপাতত অল্পের জন্য রক্ষা পেল ইউরোজোন৷

https://p.dw.com/p/14w3F
ছবি: dapd

জনরোষ বনাম বাস্তবতা

জনগণের ক্ষোভের প্রকাশ দেখা গেল ইউরোপের একাধিক নির্বাচনে৷ যে দল বা প্রার্থী সরকারি ব্যয় কমানোর কথা বলেছেন, তার পরাজয় ঘটেছে৷ গ্রিস, ফ্রান্স ও জার্মানির সবচেয়ে জনবহুল নর্থরাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্য – কোথাও মানুষ বাজেট ঘাটতি কমিয়ে সরকারি ব্যয়ের রাশ টানার প্রবক্তাদের রেহাই দেয় নি৷ কিন্তু বাস্তবে তার ফলে কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না৷

গ্রিসে নতুন সরকার গঠন নিয়ে রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটাতে ইটালির ধাঁচে শুধু বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সরকার গঠনের কথা চলছিল৷ সেই প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হওয়ায় আবার নতুন করে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ সেই নির্বাচনের ফল যাই হোক না কেন, ভবিষ্যতেও আন্তর্জাতিক আর্থিক সহায়তা পেতে হলে গ্রিসকে বোঝাপড়া অনুযায়ী অপ্রিয় সংস্কার চালিয়ে যেতেই হবে৷ অথবা ইউরো এলাকা থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে যেতে হবে, যা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়ে গেছে৷

ইউরোগ্রুপের প্রধান ও লুক্সেমবুর্গ'এর প্রধানমন্ত্রী জঁ ক্লোদ ইয়ুঙ্কার অবশ্য এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, ‘‘এক মুহূর্তের জন্যও আমি এই চিত্র কল্পনা করতে প্রস্তুত নই, যে গ্রিস ইউরো এলাকা ছেড়ে চলে যাবে৷ এটা একেবারেই অর্থহীন৷ এটা একটা প্রচারণা মাত্র৷ গ্রিসের গণতন্ত্রের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা দেখানো উচিত৷''

Regierungskrise in Griechenland
সরকার গঠনের আলোচনা ব্যর্থ হয়ে গেছেছবি: dapd

ফ্রান্সে নতুন দিশা

ফ্রান্সের নতুন প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ নির্বাচনের প্রচারে সরকারি ব্যয় বাড়ানোর বিষয়ে যাই বলে থাকুন না কেন, ক্ষমতায় এসে তাঁকে বাস্তব কাঠামোর মধ্যেই কাজ করতে হবে৷ মঙ্গলবার শপথ নেওয়ার সময় তিনি নতুন করে দেশ গড়ার অঙ্কীকার করেন৷ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল'এর সঙ্গে প্রথম বৈঠকে সেই বাস্তবেরই মুখোমুখি হলেন ওলঁদ৷ বাজেট ঘাটতি কমানোর দায়িত্ব মেনে নিয়েও অর্থনীতির পুনরুজ্জ্বীবনের লক্ষ্যে সরকারি কর্মসূচির আবেদন জানিয়েছেন তিনি৷ নীতিগতভাবে জার্মানি এই উদ্দেশ্য মেনে নিলেও এর জন্য বাড়তি সরকারি অর্থ ব্যয়ের বিরোধী৷

পুঁজিবাজারে অস্থিরতা

এই অবস্থায় ইউরোপের পুঁজিবাজারেও অস্থিরতা কাটছে না৷ অভিন্ন মুদ্রা ইউরো চালু আছে ১৭টি দেশে৷ সাম্প্রতিক সংকটের সময় মূলত জার্মানির অর্থনৈতিক সাফল্যই গোটা এলাকার চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করেছে৷ মঙ্গলবার প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী জার্মানির প্রবৃদ্ধির হার ০.৫ শতাংশ৷ ফলে ইউরো এলাকা এযাত্রায় অল্পের জন্য মন্দার হাত থেকে রক্ষা পেল৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও পুঁজিবাজার শান্ত হতে পারছে না৷ ইউরোপের দক্ষিণের দেশগুলির বিপর্যস্ত অবস্থার ফলে আশঙ্কা কিছুতেই কাটছে না৷

অদূর ভবিষ্যতেও একদিকে জার্মানি, অন্যদিকে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইসিবি'কেই পরিস্থিতি সামলাতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ গ্রিসের ভবিষ্যৎ ও ফ্রান্সে রাজনৈতিক পালাবদলের পর ইউরোপের অবস্থান কী হবে, তা জানার জন্য অপেক্ষা করছে পুঁজিবাজার৷ গ্রিস ইউরো এলাকা ত্যাগ করলে স্পেন ও ইটালিরও একই দশা হতে পারে, এমন আশঙ্কা নিয়েও দুশ্চিন্তায় ভুগছে বাজার৷ সোমবার ইউরো এলাকার অর্থমন্ত্রীরা অবশ্য এমন সব আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন৷

তবে ইউরো এলাকার ঐক্য টিকে থাকবে কি না, তা নিয়ে সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে৷ আইএমএফ'এর এক রিপোর্ট অনুযায়ী এই জোটে একবার ফাটল ধরলে তার ফল মারাত্মক হতে পারে৷ জার্মানি যদি এই অবস্থায় কড়া হাতে রাশ ধরে বাকিদের সঙ্গে নিয়ে এগোতে পারে, তবেই সংকট কাটার সম্ভাবনা দেখছেন বিশেষজ্ঞরা৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন (এএফপি, এপি, রয়টার্স)

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য