শরণার্থী কিশোররা শরীর বেচছে
২৫ এপ্রিল ২০১৭হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির স্বাস্থ্য ও মানবাধিকার কেন্দ্রের ড. ভাসিলেইয়া এবং প্রফেসর জ্যাকলিন প্রতিবেদনে ‘গ্রিসে অভিবাসী শিশুদের যৌন শোষণ ও অপব্যবহারের ক্রমবর্ধমান মহামারীর'' কথা বলেছেন৷ ডয়চে ভেলের আন্থে কারাসাভা বিষয়টি পরখ করতে অকুস্থলে গিয়েছিলেন৷
গ্রিসের রাজধানী এথেন্সের কেন্দ্রে পেদিয়ন তু আরেয়স নামের সুবিশাল যে উদ্যান আছে, তার কাছের একটি বাস স্টপে এখন এই ‘দেহ ব্যবসা' চলে৷ আলি নামের এক পাকিস্তানি কিশোর তার ভাঙা ভাঙা ইংরেজিতে আন্থেকে ‘ভালো দাম দেওয়ার' প্রতিশ্রুতি দেয়৷
আরেক কিশোর জানায়, আন্থে ছেলের বদলে মেয়ে পছন্দ করলে তারও ব্যবস্থা করে দেয়া যাবে৷ এই কিশোরের নামও আলী৷ দুই ‘আলি'-র বয়সই ১৭৷ এই দুই কিশোরের কাছ থেকে জানা যায়, তারা দশ- পনেরো ইউরোর জন্য ‘তা' করে থাকে, কন্ডোম ছাড়াই৷ এভাবে জার্মানি যাবার জন্য নগদ টাকা সংগ্রহ করছে বলেও জানায় তারা৷
অরক্ষণীয়
১১-১২ বছরের শিশুদেরও এভাবে অর্থ উপার্জন করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন গবেষকরা৷ মনে রাখা দরকার, গ্রিসে যে ৬২,৩৭৫ অভিবাসী আটকা পড়েছে, তাদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অপ্রাপ্তবয়স্ক৷ তাদের মধ্যে ২,৩০০ জন আবার অভিভাবকহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে গ্রিসে এসেছে৷
যে শিশুরা তাদের দেহ বেচছে, গোড়ায় তাদের মধ্যে আফগান আর সিরীয় শিশুর সংখ্যাই নাকি বেশি ছিল৷ তাদের কারো কারো বয়স নাকি ১০ বছরের বেশি ছিল না৷ পরে ইরাকি, ইরানি আর ক্রমেই আরো বেশি পাকিস্তানি এই ‘সেক্স মার্কেটে' আসতে শুরু করে৷ অভিভাবকহীন অপ্রাপ্তবয়স্কদের মাত্র ৮ শতাংশ মেয়ে আর তাদের দশ জনের মধ্যে নয় জনের বয়সই ১৪ বছরের কম বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ৷
পার্কের মধ্যেই গাছের ডালে পর্দা টাঙিয়ে তার পিছনে ব্যবসা চলতে দেখেছেন আন্থে কারাসাভা৷ অথচ পার্কে বেসরকারি সিকিউরিটি গার্ড থেকে শুরু করে উদ্যানকর্মী, সবই আছে৷
এক প্যাকেট সিগারেটের জন্য
হার্ভার্ডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই যৌন ব্যবসায়ের ক্রেতা বা গ্রাহকরা ৩৫ বা তার বেশি বয়সের পুরুষ৷ এই পার্কটি ও এর কাছের ভিক্টোরিয়া স্কোয়্যার বহু বছর ধরে মাদক আর দেহ ব্যবসায়ের কেন্দ্র ছিল এবং এখনও আছে৷ শুধু ‘বিক্রেতারা' এখন অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশু৷ এখন নাকি এক প্যাকেট সিগারেট কিংবা এক বেলা পেট ভরে খাওয়ার জন্যে ১৫ বছরের কিশোররা স্বেচ্ছায় অন্যের যৌন লালসার শিকার হয়৷
এ বছর এই অপ্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ১,৩৫২ জনকে আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ ৯০০ জন এখনও পথে৷ এছাড়া তাদের কেউই জার্মানি বা অনুরূপ কোনো দেশে যাওয়ার স্বপ্ন ছাড়তে কিংবা গ্রিসে থেকে যাওয়ার কথা ভাবতে রাজি নয়৷
আন্থে কারাসাভা/এসি