গ্রামীণ ব্যাংক
২৩ আগস্ট ২০১২গ্রামীণ ব্যাংকের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ নিয়ে সৃষ্ট বিতর্ক এখনো অব্যাহত রয়েছে৷ বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বুধবার বলেছেন, ‘‘গ্রামীণ ব্যাংকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নিয়োগের জন্য এক সপ্তাহের মধ্যে সার্চ কমিটি গঠন করা হবে৷'' একইসঙ্গে এই সার্চ কমিটির ‘চেয়ারম্যান' হিসেবে মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগের কোনো সম্ভাবনা নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি৷
গ্রামীণ ব্যাংক বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অধ্যাপক ইউনূসকে এড়িয়ে চলার একটি প্রবণতা বর্তমান সরকারের মধ্যে প্রকট৷ অথচ এই ব্যাংকের সঙ্গে সবচেয়ে ঘনিষ্ঠভাবে যিনি সম্পৃক্ত, তিনি হচ্ছেন অধ্যাপক ইউনূস৷ অর্থনীতিবিদ ড. আকবর আলী খান এই বিষয়ে বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে সরকার এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে৷ এতে করে সরকারের কী লাভ হবে, সেটা সরকারই বলতে পারবেন৷ তবে এধরনের বিতর্কে প্রতিষ্ঠানের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে৷''
ড. আকবর আলী খান বলেন, ‘‘(গ্রামীণ ব্যাংকের) নেতৃত্বে আকস্মিক পরিবর্তন হলে এবং প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক হলে এটির গ্রাহকদের আস্থা কমে যাবে৷ গ্রাহকদের আস্থা কমে গেলে প্রতিষ্ঠানটিও দুর্বল হয়ে যাবে৷ কারণ, গ্রামীণ ব্যাংকে আট হাজার কোটি টাকা জমা দিয়েছে ব্যাংকটির সদস্যরা৷''
গ্রামীণ ব্যাংক ইস্যুতে বর্তমান সরকারের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতবিরোধও ক্রমশ দৃশ্যমান হচ্ছে৷ ইতিমধ্যে একাধিকবার এই ইস্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সেদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টন তাঁর বাংলাদেশ সফরে এই বিষয়টি উল্লেখ করেছেন৷ ড. খান বলেন, ‘‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের নীতিতে অনঢ়৷ সরকারও তাদের অবস্থানে অনঢ়৷ কাজেই এই অনঢ় অবস্থানে থাকার ফলে কি পরিস্থিতি হয় সেটা আমাদের দেখতে হবে৷''
বাংলাদেশ সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা ‘গণতান্ত্রিক' উপায়ে গ্রামীণ ব্যাংকের সংকট নিরসনের প্রতি জোর দেন৷ তিনি বলেন, ‘‘গ্রামীণ ব্যাংকের অর্ডিনেন্স অনুসারে গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্যরা ব্যাংকটির ৭৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক৷ আরো ২২ শতাংশ শেয়ার তারা সরকারের কাছ থেকে কিনেছেন৷ কিন্তু সরকার কাগজপত্র এখনো চূড়ান্ত করেনি৷ এই কাগজপত্র চূড়ান্ত করলে ৯৭ শতাংশে শেয়ারের মালিক হচ্ছেন ব্যাংকটির সদস্যরা৷ কাজেই গণতান্ত্রিক রীতিনীতি অনুসারে গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্যদের হাতেই ব্যাংকটির পরিচালনার দায়িত্ব দিয়ে দেওয়া উচিত৷ সেটা করলে আস্থার সংকট হবে না এবং ব্যাংকটিও ভালোভাবে চলবে৷''
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ