গোয়ায় রুশীদের বিরুদ্ধে অপ্রীতি বাড়ছে
৯ মার্চ ২০১০এককালীন পোর্তুগীজ উপনিবেশ গোয়া হল ভারতের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় বীচ রিসর্ট বা সৈকতাবাসগুলির মধ্যে অন্যতম৷ গোয়া চিরকালই ছিল বিদেশী ট্যুরিস্টদের প্রিয় অন্যান্য স্থানগুলির চেয়ে একটু আলাদা৷ ষাটের দশক থেকে হিপিদের তীর্থ, জামাকাপড় থেকে গঞ্জিকাসেবন, ইংরিজি গানা থেকে আপ রুচি খানা, সব কিছুতেই গোয়ায় যেন একটা উদারতার এবং সহনশীলতার ভাব ছিল৷ কিন্তু রুশীরা সেই গোয়া আবিষ্কার করার পর এক ধরণের নতুন বিরোধ শুরু হয়েছে৷ এবং সে বিরোধ ধর্ষণ এবং হত্যাকাণ্ডেও পর্যবসিত হতে পারে৷
এ কোন গোয়া?
এ'বছরের সূচনায় এক রুশ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে উত্তর গোয়ার মর্জিম গ্রামে এক ট্যাক্সিচালককে খুন করার অভিযোগ ওঠে৷ যার ফলে পরে গণবিক্ষোভেরও আয়োজন করা হয়৷ অন্য দিকে রয়েছে গত জানুয়ারিতে একটি ন'বছরের রুশী মেয়েকে এবং গত ডিসেম্বরে এক ২৫ বছর বয়সী রুশী মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ৷ সেই সঙ্গে রয়েছে সাধারণভাবে গোয়ায় অপরাধ বাড়া নিয়ে উদ্বেগ৷ স্থানীয়দের আশঙ্কা যে রুশী মাফিয়া গোয়ায় কালো টাকাকে সাদা করা থেকে শুরু করে, কল গার্ল, অস্ত্রশস্ত্র, মাদক, সব কিছু নিয়ে ব্যবসা চালাচ্ছে৷
‘‘লিটল রাশিয়া''
এছাড়া আরেকটি ব্যবধান হল ভাষা৷ রুশীরা ইংরিজিতে বিশেষ পোক্ত নয়৷ তারা গোয়ায় এসেই অন্য রুশীদের খোঁজে যায়, যে কারণে উত্তর গোয়ার মর্জিম এলাকাটির নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘‘লিটল রাশিয়া''৷ ক্ষুদে রাশিয়ায় আজ প্রচুর রুশীদের বাস৷ কিরিলিক হরফে লেখা প্ল্যাকার্ডও দেখতে পাওয়া যাবে৷ বীচ কি বার-এ রুশ ভাষা শোনা যাবে৷ রেস্তরাঁয় মেনু পাওয়া যাবে রুশ ভাষায়৷ তা'তে আশ্চর্য হবার কিছু নেই, কেননা বছরে ৪৫,০০০ রুশী পর্যটক এসে গোয়ায় প্রায় ৮৮ মিলিয়ন ডলার পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে যাচ্ছে৷
‘‘চরিত্র নষ্ট''
অপরদিকে সেই রুবল-এর কল্যাণেই নাকি রুশীরা সহজেই বীচের ধারে বার চালানোর লাইসেন্স পাচ্ছে৷ তারা নাকি বিদেশীদের জমি-বাড়ি কেনার উপর বাধানিষেধের কোনো ধারই ধারে না, এই সব অভিযোগ এখন শোনা যাচ্ছে গাঁয়ের প্রবীণদের কাছ থেকে৷ পর্যটন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, গোয়াকে গোটা পরিবারের জন্য গন্তব্য করার সঙ্গে রাশিয়ান মাফিয়ার উপস্থিতি মেলে না৷ এছাড়া কিছু রূশী নাকি প্রায় বিবস্ত্র হয়েই বীচে ঘোরোফেরা করে, যার ফলে স্থানীয় লোকেদের ‘‘চরিত্র নষ্ট'' এবং স্কুলের ছেলেমেয়েদের আঁতকে ওঠার অভিযোগ উঠেছে৷ বিশ্বায়ন, উন্নয়ন এবং বাণিজ্যের এই দিকটা আন্তরিক না হাস্যকর, তা কে বলবে?
প্রতিবেদক : অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা : হোসাইন আব্দুল হাই