গোটা উত্তর ভারত বন্যাপীড়িত
২১ সেপ্টেম্বর ২০১০যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলেছে ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ৷ দিল্লিতেও যমুনার জল বিপদসীমার ওপরে৷
আবহাওয়াবিদদের মতে গত ৪০ বছরে উত্তর ভারতে এতো বৃষ্টি আর হয়নি৷ গঙ্গা, রামগঙ্গা ও যমুনার জল অনেক জায়গায় বিপদসীমার ওপরে৷ সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত উত্তরাখন্ড৷ এ’পর্যন্ত ঐ রাজ্যে বন্যা ও বৃষ্টিজনিত কারণে মারা গেছে মোট ৬৫ জন৷ আলমোড়া ও নৈনিতালে প্রবল বৃষ্টি, তেহরি বাঁধের জলাধার থেকে জল ছাড়ার ফলে গঙ্গা ও ভাগিরথীর দুকূল ছাপিয়ে গেছে৷ দুপাশের নিচু এলাকাগুলি প্লাবিত৷ মন্দির শহর হরিদ্বার বন্যার দাপট থেকে রেহাই পায়নি৷ ত্রাণ ও উদ্ধার কাজে নেমেছে সেনা এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী৷ দিল্লি-হরিদ্বার জাতীয় সড়ক যান চলাচলের জন্য এখন বন্ধ৷ আট হাজার পরিবারকে সরানো হয়েছে নিরাপদ জায়গায়৷ দেরাদুনে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে৷ ফলে চারধাম-সহ বিভিন্ন তীর্থে পূণ্যার্থীদের যাত্রা ব্যাহত৷ আটকা পড়েছে বদ্রিনাথ ধামের পথে বহু তীর্থযাত্রী৷ তার মধ্যে আছে বহু বাঙালি৷ কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী মঙ্গলবার আকাশপথে উত্তরাখন্ড ও উত্তরপ্রদেশের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন৷
উত্তর প্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে৷ মৃত্যু হয়েছে আজ আরো চারজনের৷ এই নিয়ে চলতি বর্ষা মরশুমে বৃষ্টি ও বন্যার কারণে মারা গেল মোট ১২০ জন৷ বেরিলি, বাদাউন, পিলিভিট ও শাহজাহানপুরের প্রায় ২০০ গ্রাম বানভাসি৷ গঙ্গা ও কোশির জলে আরো ১০টি জেলা প্লাবিত৷ বিজনোরে রামগঙ্গা নদীর ওপরে একটি জলাধার উপচে আশপাশের অঞ্চল ভাসিয়ে দিয়েছে৷ বহু লোক আটকা পড়েছে৷ ভেঙেছে প্রচুর ঘরবাড়ি৷ ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে চাষাবাদের৷ দিল্লি-লক্ষ্ণৌ জাতীয় সড়কে জল আসায় যান চলাচল বন্ধ৷ রাজ্যের মায়াবতী সরকার বন্যাত্রাণে আরো ২০ কোটি টাকা দিয়েছে৷
দিল্লিতে নতুন করে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে হরিয়ানার হাতনিকুন্ড জলাধার থেকে সাড়ে সাত লাখ কিউসেক জল ছাড়ার ফলে ৷ দিল্লিতে যমুনা নদীর জল বিপদসীমার ওপরে৷ পুরানো যমুনা ব্রিজে রেল ও সড়ক পরিবহন বন্ধ ৷ আবহ দপ্তরের এক প্রধান কর্মকর্তা জানাচ্ছেন, আগামি দুদিন দিল্লি ও আশপাশের রাজ্য পাঞ্জাব , হরিয়ানা, হিমাচলপ্রদেশ ও উত্তরাখন্ডে বৃষ্টি হতে পারে৷ বর্ষা এখনও যায়নি৷ তবে বৃষ্টির পরিমাণ ধীরে ধীরে কমবে৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী