‘গাদ্দাফির মৃত্যু নিয়ে আর কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই’
২০ অক্টোবর ২০১১
সির্তে বিশাল এক পাইপের মধ্যে গাদ্দাফি লুকিয়ে ছিলেন বা সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করছিলেন এবং সেই সময়েই হামলা করা হয়৷ গাদ্দাফির মৃতদেহের বেশ কিছু ছবি দেখানো হয় লিবিয়া টেলিভিশনে৷ এছাড়া মৃতদেহ পাইপের মধ্যে থেকে বের করার সময় অনেকেই ব্যক্তিগত সেল ফোন দিয়ে ছবি তোলে বা ভিডিও করে৷ সেই ভিডিও এবং ছবিগুলোও প্রকাশ করা হয়৷
লিবিয়া টেলিভিশনের পাশাপাশি বিবিসি এবং সিএনএনও এসব ভিডিও ফুটেজ এবং ছবি দেখাচ্ছে৷ রক্তাক্ত গাদ্দাফির শরীর৷ বোঝা যাচ্ছে বেশ কয়েকটি গুলি লেগেছে তাঁর শরীরে৷ মাথায় হয়তো একটি গুলি লেগে থাকতে পারে কারণ কপালের বাঁ পাশ এবং গলার কাছ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে রক্ত তা বেশ পরিষ্কার দেখা যাচ্ছিল৷ মৃত্যুর সময় গাদ্দাফির পরনে ছিল হালকা রঙের পোশাক যার ফলে রক্তের প্রতি ফোঁটা স্পষ্ট চোখে পড়ছে৷ চোখ হালকা খোলা, পুরোপুরি বন্ধ হয়নি৷ নিষ্প্রাণ চোখে তাকিয়ে আছেন মুয়াম্মার গাদ্দাফি৷
বিভিন্ন মহলের প্রতিক্রিয়া
লিবিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জালাল আল দিঘেলিও বেনগাজিতে এক সংবাদ সম্মেলনে গাদ্দাফির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন৷
জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন জানান, ‘‘গাদ্দাফির মৃত্যু লিবিয়ার জন্য ঐতিহাসিক এক ঘটনা হয়ে থাকবে৷ আমরা আজ প্রায় সারাদিন ধরেই গাদ্দাফির মারা যাওয়া নিয়ে বিভিন্ন প্রতিবেদন টেলিভিশনের পর্দায় দেখেছি৷’’
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন জানালেন, ‘‘এই দিনে সবার গাদ্দাফিকে নয়, মনে পড়ছে গাদ্দাফির নির্দেশে যাদের মেরে ফেলা হয়েছে, যারা গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়েছে তাদের৷ লিবিয়া আজ এসব নিরীহ এবং শান্তিকামী মানুষের জীবনের বিনিময়ে মুক্ত হয়েছে৷ ব্রিটেন লিবিয়ায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে যে ভূমিকা পালন করেছে তাতে আমি গর্বিত৷’’
ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলা সার্কোজি জানান, ‘‘গাদ্দাফির মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে লিবিয়ার কালো এক অধ্যায়ের অবসান হল৷ লিবিয়া এখন এগিয়ে যাবে গণতন্ত্রের দিকে৷ এনটিসির কাঁধে এখন দায়িত্ব বর্তাবে দেশে আইনের শাসন, রাজনৈতিক অধিকার এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করার৷’’
ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আল্যাঁ জুঁপে জানান, গাদ্দাফির মৃত্যুর মধ্য দিয়ে ৪২ বছরের দীর্ঘ শাসনের অবসান হল৷ এর মধ্যে দিয়েই লিবিয়ায় শুরু হবে গণতন্ত্রের শুভ যাত্রা৷ নতুন দিল্লীতে এক রাষ্ট্রীয় সফরে তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন৷
আল জাজিরা জানাচ্ছে, মুয়াম্মার গাদ্দাফির মৃতদেহ মিস্রাটার একটি মসজিদে রাখা হয়েছে৷ মিস্রাটার সুক তাওয়ানসা এলাকায় মসজিদটি অবস্থিত৷ গাদ্দাফির এক ছেলে সাইফ আল ইসলাম এখনও পলাতক বলে প্রকাশ পেলেও তাঁকে শেষ পর্যন্ত আটক করা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে৷
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন