গাজা : যেখানে জীবিতের ঘর আর মৃতের কবরের অভাব
গাজা উপত্যকায় বাসস্থানের সংকট এখন এমন চরমে যে কবরস্থানেও ঘর বানিয়ে থাকছেন অনেকে৷ পাশাপাশি সদ্য মৃতদের সমাধিস্থ করাও হয়ে উঠেছে খুব বড় চ্যালেঞ্জ৷ দ্বিমুখী সংকট দিনদিন বাড়ছে৷ দেখুন ছবিঘরে...
কবরস্থানে কামিলদিয়া কুহাইল
ছবির এই নারীর নাম কামিলিয়া কুহাইল৷ গাজার শেখ শাবান কবরস্থানে দুই মাসের সন্তানকে ঘুম পাড়াচ্ছেন তিনি৷
মৃতরা কথা বলতে পারলে কী হতো?
আর কোথাও থাকার ব্যবস্থা না হওয়ায় কবরস্থানে বসবাসের ব্যবস্থা করেছেন কামিলিয়ার স্বামী৷ কবরস্থানে থাকতে কেমন লাগে জানতে চাইলে ৩০ বছর বয়সি কামিলিয়া বলেন, ‘‘উপায় নেই বলেই থাকি৷ মৃতরা যদি কথা বলতে পারতেন, তাহলে নিশ্চয়ই আমাদের বলতেন- এখান থেকে দূর হও তোমরা!’’
দুর্গন্ধের সঙ্গে বাস
কবরের ওপরেই গড়ে উঠেছে ছয় সন্তান ও স্বামী-স্ত্রী মিলিয়ে আটজনের থাকার ঘর৷ ছোট পরিসরের কারণে গাদাগাদি করেই থাকতে হয়৷ ঘরে সব সময় একটা দুর্গন্ধ থাকে৷ কিছুতেই দূর করা যায় না৷ কামিলিয়া বলেন, ‘‘ওটা মৃতদের গন্ধ৷’’
গোরস্থানে স্বপ্ন
কবরস্থানে পড়ছে কামিলিয়ার বড় মেয়ে লামিস৷ লেখাপড়া শিখে ভালো আয়ের কাজ করতে চায় ও৷ আয় এখনো অবশ্য করে৷ মৃতদের দাফন করার সময় পানি সরবরাহ করে, বিনিময়ে যা পায় তা সংসার চালানোর জন্য তুলে দেয় মায়ের হাতে৷
গাজায় ভূমির সংকট
কামিলিয়া কুহাইলার মতো অনেকেই এখন কবরস্থানে বাস করতে বাধ্য হচ্ছেন৷ গাজায় যুদ্ধ লেগেই থাকে৷ যুদ্ধে নতুন করে অনেক মানুষ ঘরছাড়া হয়৷ তাদের জন্য আবার ঘর তৈরি করা, যুদ্ধে বা স্বাভাবিকভাবে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের সমাহিত করা এখন খুব বড় এক চ্যালেঞ্জ৷ কারণ, সাত লাখ ৫০ হাজার অধিবাসীর শহর গাজায় বাসস্থান বাড়ছে না, মৃত্যুর সঙ্গে তাল মিলিয়ে কবরস্থানও বাড়ানো যাচ্ছে না!
দরকার ১৪ হাজার আবাসন
গাজার গৃহায়ণ উপ-মন্ত্রী নাজি সারহান জানান, গাজা উপত্যকার আবাসন সমস্যা দূর করতে হলে এখন কমপক্ষে ১৪ হাজার ঘর তৈরি করা দরকার৷এছাড়া কবরের জন্যও জায়গা দরকার৷ কারণ, ছোট-বড় মিলিয়ে যে ৬৪টি কবরস্থান রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে অনেকগুলোতেই এখন আর নতুন করে কাউকে সমাহিত করার জায়গা নেই৷
কবরস্থানও জরুরি প্রয়োজন
আর জায়গা না থাকায় গাজার মোট ২৪টি কবরস্থান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ শেখ রাদওয়ান কবরস্থানের ওয়াকফ গার্ড খালেদ হেজাজি জানান, পুরোনো কিছু কবরস্থান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকে বাড়ির কাছে কবরস্থানে জোর করে মৃত স্বজনদের সমাধিস্থ করছেন৷