গণতন্ত্র, তুই আবার কবে আসবি?
৮ জানুয়ারি ২০১৯তাই তো কীভাবে তোর ক্ষতি করা যায় সেই চেষ্টাই চলেছে গত কয়েক বছর ধরে৷ তোর বিভিন্ন অঙ্গে একের পর এক আঘাত করা হয়েছে৷ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, স্বাধীন হয়ে কাজ করার কথা যে নির্বাচন কমিশনের তার উপরও নজর পড়েছিল আমাদের তথাকথিত ঐ বন্ধুর৷ আর যে অঙ্গের মাধ্যমে তুই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতিস, সেই গণমাধ্যমের দখলও একসময় নিয়ে নেয় আওয়ামী লীগ৷
এত কিছুর পরও অবশ্য আমরা ভেবেছিলাম যে, আমাদের সবার বন্ধু সেনাবাহিনী তোর সঙ্গে সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করবে৷ কিন্তু তা-ও হলো না৷ তাঁরাও আমাদের ঐ তথাকথিত বন্ধুর সঙ্গে হাত মিলিয়ে ফেললো৷
ফলে নির্বাচনের বছর হওয়ায় ২০১৮ সালের শুরুতে আমরা যে আশা করেছিলাম, তোর সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা আবারও মজবুত হবে, তা আর হলো না৷ বরং তোকে চলেই যেতে হলো৷
অবশ্য এর জন্য শুধু এক বন্ধুর ঘাড়ে পুরো দোষ চাপিয়ে লাভ নেই৷ আমরা, মানে জনগণ, আর আমাদের আরেক বন্ধু বিএনপিও এর জন্য অনেকখানি দায়ী৷ কারণ, আওয়ামী লীগ যখন তোকে একের পর এক আঘাত করছিল, তখন আমরা আর বিএনপি, দুজনই চুপ করে ছিলাম৷ অথচ আমরা যদি তখন শক্ত প্রতিবাদ করতে পারতাম, তাহলে হয়ত আজ তোকে হারাতে হতো না৷
যাক, নতুন বছর এসেছে৷ এই বছরে আমরা আবার তোকে ফিরে পেতে চাই৷ আওয়ামী লীগ যদি সেটা হতে দিতে না চায়, তাহলে আমাদের আর বিএনপিকে চেষ্টা করে যেতে হবে৷ আওয়ামী লীগকে বোঝানোর চেষ্টা করতে হবে যে, বন্ধু হিসেবে আমাদের তোকে দরকার আছে৷ বিশ্বের দরবারে দেশের ‘স্ট্যাটাস' বাড়াতে তোকে প্রয়োজন৷
তবে আওয়ামী লীগ হয়ত তাদের কথাকেই গুরুত্ব দেবে, যারা শক্তিশালী৷ বিএনপি এখন সেই অবস্থায় নেই৷ ফলে বিএনপির প্রথম কাজ হবে, তার শরীরটা ঠিক করা৷ শুরু হতে হবে মাথা থেকে৷ মস্তিষ্ককে সচল হতে হবে, অলস হলে চলবে না, ভয় পেলে হবে না৷ মাথাকে বুঝতে হবে, শরীরের অন্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো তার কাছ থেকে সংকেত না পেলে, সাহস না পেলে নড়তে-চড়তে পারবে না৷
দেখা যাক, নতুন বছরে তোকে ফিরিয়ে আনতে আমরা কী করতে পারি৷ আমাদের জন্য দোয়া করিস৷
প্রিয় পাঠক, জাহিদুল হকের এই লেখাটি নিয়ে আপনার কি কিছু বলার আছে? তাহলে লিখুন নীচে, মন্তব্যের ঘরে৷