গাজায় মানুষের ঢল
৮ ডিসেম্বর ২০১২গাজায় ইসরায়েলি হামলার পর ফিলিস্তিনের রাজনীতিতে নতুন এক চিত্রের সৃষ্টি হয়েছে৷ একদিকে হামাসের জনপ্রিয়তা যেন সাধারণ মানুষের মধ্যে আরও বেড়ে গেছে৷ অন্যদিকে জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পক্ষে ভোট পশ্চিম তীরে মাহমুদ আব্বাসকে জনগণের আরও কাছে নিয়ে গেছে৷ তবে দুই দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব অবসানের কোন লক্ষণ এখনও দেখা যাচ্ছে না৷ যদিও শুক্রবার গাজা সিটিতে ফেরার পর হামাস নেতা খালেদ মিশাল প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তিনি সমঝোতার পথে এগোবেন এবং বিভেদ দূর করবেন৷
দীর্ঘ ৩৭ বছর পর ফিলিস্তিনের মাটিতে পা রাখলেন খালেদ মিশাল৷ সেই ১৯৭৫ সাল থেকে নিজ জন্মভূমির বাইরে রয়েছেন তিনি৷ ধীরে ধীরে তিনি হামাসের অন্যতম নেতায় পরিণত হন৷ ১৯৯৭ সালে ইসরায়েলের গোয়েন্দা বাহিনী মোসাদ তাঁকে হত্যার চেষ্টা করে৷ সেই সময় খালেদ মিশাল জর্ডানে অবস্থান করছিলেন৷ তবে মোসাদের সেই অভিযান শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়৷ এতদিন ধরে বিদেশে নির্বাসনে থাকার পর শেষ পর্যন্ত শুক্রবার ফিলিস্তিনে পা ফেলেন ৫৬ বছরের এই রাজনীতিক৷ এটাকে হামাসের বিজয় বলে মনে করছেন অনেকে৷ যেমন গাজার অধিবাসী আবু ওয়ালিদ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘‘ইসরায়েল গাজার এই বিজয় দেখে নিশ্চয়ই রাগে ফুঁসছে৷''
শনিবার হামাসের ২৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে মিশালের দেশে ফেরা৷ বার্তা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, লক্ষাধিক মানুষ সমবেত হয়েছে এই প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে৷ আল কাতিবা কমপ্লেক্সে উপস্থিত জনতার বেশিরভাগই নারী বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি৷ হামাসের সামরিক শাখা আল কাসেম ব্রিগেডের সদস্যরা কড়া নজর রেখেছে সেখানে৷ কাতার, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, মিশর, বাহরাইনসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা এতে যোগ দেবেন বলে জানানো হয়েছে৷
উল্লেখ্য, ১৯৮৭ সালে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে শুরু হয় ইন্তিফাদা বা প্রতিরোধ আন্দোলন৷ সেই সময় হামাস প্রতিষ্ঠিত হয় এবং দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে৷ ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগ্রামে সমর্থন দিয়েছে হামাস৷ পরে রাজনৈতিকভাবেও তারা প্রতিষ্ঠিত হয়৷ বিগত ২০০৬ সালের নির্বাচনে গাজাতে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় হামাস৷ তবে ক্ষমতার ভাগাভাগি নিয়ে ফাতাহ দলের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে তারা৷ হামাস-ফাতাহ দ্বন্দ্ব ফিলিস্তিনের সমস্যা সমাধানে অন্যতম বাধা বলে মনে করেন পর্যবেক্ষকরা৷
আরআই/এএইচ (এপি, এএফপি, রয়টার্স)