1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে'

সমীর কুমার দে ঢাকা
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

চলতি বছরেই অনুষ্ঠিত হতে পারে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন৷ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি৷ এসময় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা৷

https://p.dw.com/p/2sRrX
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A.M. Ahad

খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডপ্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ বলছে, খালেদা জিয়া চুরি করেছেন, আদালত তার বিচার করেছে৷ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফের মতে টাকা চুরির মামলার সঙ্গে নির্বাচনের কোন সম্পর্ক নেই৷ এতে নির্বাচনে কোন প্রভাব পড়বে না৷ তিনি বলেন, ‘‘তাই যদি হয় তাহলে তো কোন দুর্নীতি মামলারই বিচার করা যাবে না৷ আইনের চোখে সবাই সমান৷ কে দুর্নীতি করেছে সেটা কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ নয়, চুরি করেছে বিচার হয়েছে, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ৷ যারা রায় নিয়ে রাজনীতি করছে তারা আইনের শাসনে বিশ্বাসী নয়৷ এই দণ্ডের সঙ্গে রাজনীতি ও নির্বাচনের কোন সম্পর্ক থাকা উচিত নয়৷ সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন হবে৷ নির্বাচনে আসা বা না আসা বিএনপি’র দলের অভ্যন্তরীন বিষয়৷''

‘এই দণ্ডের সঙ্গে রাজনীতি ও নির্বাচনের কোন সম্পর্ক থাকা উচিত নয়’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রায়ের মধ্য দিয়ে দেশে রাজনৈতিক সংকট ঘনীভূত হবে না বরং বিএনপির অভ্যন্তরীণ সংকট ঘনীভূত হবে৷ সেটার লক্ষণ আমরা টের পাচ্ছি৷ এই দুর্নীতি মামলা এই সরকার করেনি, সরকারের কোনো হস্তক্ষেপও নেই৷ বেগম জিয়া যদি নিয়মিত হাজিরা দিতেন, এই মামলায় রায় অনেক আগেই শেষ হয়ে যেত৷ তিনি নিজেই দেরি করে নির্বাচনকে সামনে রেখে এই পর্যন্ত মামলা টেনে নিয়ে এসেছেন৷ এটার জন্য তো বিএনপি দায়ী, এটার জন্য বেগম জিয়া ও তার বিজ্ঞ আইনজীবীরা দায়ী৷'

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী অবশ্য জানিয়েছেন, নির্বাচনের জন্য বিএনপি প্রস্তুতি নিচ্ছে৷ তিনি বলেন, ‘‘বিএনপি জনগণের উপর আস্থা রাখে৷ কারণ আমরা জনগণের উপর নির্ভরশীল একটি দল৷ আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তা দেখে তারা মনে করছে তাকে বাইরে রেখে নির্বাচন করলে লাভ হবে না৷

‘বিএনপি সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী এবং নির্বাচনে যেতে সব সময়ই প্রস্তুত’

কিন্তু বিএনপি সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী এবং নির্বাচনে যেতে সব সময়ই প্রস্তুত৷ সরকার বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখতে খালেদা জিয়াকে কারাদণ্ড দিয়েছে৷ সরকার যে বিএনপিকে ভয় পায়, এর মাধ্যমে তার প্রতিফলন ঘটল৷ আমাদের প্রতিটি জেলায়, উপজেলায় এমনকি ইউনিয়নে নির্বাচনের প্রস্তুতি রয়েছে৷ খালেদা জিয়া কারা অন্তরীণ থাকায় প্রস্তুতিতে কোন সমস্যা হবে না৷ সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশের বাইরে থেকে নির্দেশনা দিচ্ছেন৷ স্থায়ী কমিটি কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছে৷''

চেয়ারপার্সন কারাগারে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন দেশের বাইরে তাতে কি দল পরিচালনায় কোন সমস্যা হচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তির যুগে এটা কোন বিষয় না৷ লন্ডন থেকে কথা বললেও মনে হবে তিনি পাশের রুমেই আছেন৷ এটা কোন সমস্যা না৷ আমাদের কাজ ঠিকমতোই চলছে৷''

‘কারাদণ্ড হওয়ার পর খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিলে তার প্রতি মানুষের সহানুভূতি বাড়বে’

খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড সামনের নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী৷ তিনি বলেন, ‘‘এখন দেখার বিষয় খালেদা জিয়া নির্বাচনে অযোগ্য হন কি-না৷ আর যদি সেটা হয় তাহলে বিএনপি তো বলছেই তারা খালেদা জিয়াকে বাদ রেখে নির্বাচনে অংশ নেবে না৷ বিএনপি নির্বাচনে না গেলে সেটা হবে একতরফা নির্বাচন৷ ২০১৪ সালেও আমরা এমন নির্বাচন দেখেছি৷ সেটা কিন্তু কারো কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি৷ এবারও যদি তেমন কিছু হয় তাহলে দেশ কিন্তু একটা সংকটের মধ্যে পড়বে৷ আমাদের অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যা কোনভাবেই সাধারণ মানুষের কাছে কাম্য নয়৷''

বিএনপি নির্বাচনে না এলে আওয়ামী লীগ কি করতে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক চৌধুরী বলেন, ‘‘দেশের সাধারণ মানুষ মনে করে সরকারি দলের একটা প্রভাব এই রায়ের উপর আছে৷ ফলে মানুষ আওয়ামী লীগকেই দায়ী করবে৷ আর কারাদণ্ড হওয়ার পর খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিলে তার প্রতি মানুষের সহানুভূতি বাড়বে৷ কারণ এটা ২ কোটি কয়েক লাখ টাকা চুরির মামলা৷ অথচ হাজার হাজার কোটি টাকা চুরির মামলার বিচার হচ্ছে না৷ দেশ থেকে বিপুল পরিমান টাকা পাচারের মামলারও বিচার হচ্ছে না৷ এই মামলাটার বিচার কিন্তু দ্রুত করা হলো৷ ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে এটা নিয়ে এক ধরনের সন্দেহ-অবিশ্বাস থাকবেই৷''

আপনার কোন মন্তব্য থাকলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে৷