ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন ট্রাম্প
৩০ জুলাই ২০১৮২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ নিয়ে তদন্ত যত এগিয়ে চলেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ বিষয়ে তাঁর ক্ষোভ ততই উগরে দিচ্ছেন৷ রবিবার একাধিক টুইট বার্তায় তিনি তদন্তকারী দলের প্রধান ও প্রাক্তন এফবিআই প্রধান রবার্ট মালারকে সরাসরি আক্রমণ করেছেন৷ এমনকি ‘স্বার্থের সংঘাত' থাকায় মালার আদৌ এমন দায়িত্ব পালনের যোগ্য নন বলেও দাবি করেন তিনি৷ ট্রাম্প মালারকে চ্যালেঞ্জ করে লেখেন, তিনি কি কখনো তাঁদের মধ্যে অতীতের বিদ্বেষভরা সম্পর্কের বিষয়টি স্বীকার করবেন? নিজেই এই প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিয়ে ট্রাম্প লেখেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি মালারকে এফবিআই প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন৷ তার ঠিক এক দিন পরেই নাকি মালার ‘স্পেশাল কাউন্সিল' হিসেবে রাশিয়া কেলেঙ্কারির তদন্ত টিমের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান৷ এছাড়া সাবেক এফবিআই প্রধান জেমস কোমি-ও মালার-এর ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলে দাবি করেন ট্রাম্প৷
প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে তাঁর টিম রাশিয়ার সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল, এমন অভিযোগ আবার সম্পূর্ণ অস্বীকার করে ট্রাম্প উলটে পক্ষপাতের অভিযোগ করেছেন৷ তাঁর দাবি, বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক দল গোটা প্রক্রিয়ার উপর নানা রকম প্রভাব খাটিয়ে চলেছে৷ সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে হোয়াইট হাউসের এক আইনজীবীকেও তদন্ত টিমে ঢোকানো হয়েছে৷ ২০১৬ সালের নির্বাচনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিন্টন টাকা ঢেলে প্রতারণাপূর্ণ এক ডসিয়ে বা দলিল তৈরি করিয়ে তার ভিত্তিতে এই তদন্ত শুরু করিয়েছেন বলেও দাবি করেন ট্রাম্প৷
উল্লেখ্য, সম্প্রতি জানা গেছে যে ট্রাম্পের প্রাক্তন ব্যক্তিগত আইনজীবী মাইকেল কোয়েন তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকটি সংলাপ রেকর্ড করেছিলেন৷ তার মধ্যে একটি এরই মধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে৷ কিছু যৌন কেলেঙ্কারি ছাড়াও কোয়েন দাবি করেছেন, যে প্রার্থী হিসেবে ট্রাম্প তাঁর টিমের সঙ্গে রাশিয়ার অবৈধ যোগাযোগের বিষয়টি জানতেন৷ ফলে ট্রাম্পের অস্বস্তি আরও বেড়ে চলেছে৷
এদিকে ট্রাম্পের বর্তমান আইনজীবী ও নিউ ইয়র্ক শহরের প্রাক্তন মেয়র রুডি জুলিয়ানি দাবি করেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সম্ভবত রবার্ট মালারের কিছু প্রশ্নের জবাব দিতে পারেন৷ অর্থাৎ কিছু বিষয়ে তাঁকে জেরা করা যেতে পারে৷ এ বিষয়ে শর্ত স্থির করতে দু'পক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছে৷ চলতি অথবা আগামী সপ্তাহেই ট্রাম্প এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে দাবি করেন জুলিয়ানি৷
এমন প্রেক্ষাপটে অ্যামেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে প্রস্তাবিত শীর্ষ বৈঠক নিয়ে কিছু অগ্রগতি দেখা গেছে৷ ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিংকিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের সঙ্গে প্রথম আনুষ্ঠানিক শীর্ষ বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর প্রতি যে নরম মনোভাব দেখিয়েছিলেন, অ্যামেরিকায় দলমতনির্বিশেষে তা কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছিল৷ প্রবল চাপের মুখে পড়েও ট্রাম্প চলতি বছরেই রুশ প্রেসিডেন্টকে ওয়াশিংটন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন৷ তারপর আরও সমালোচনা ও মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ সংক্রান্ত তদন্তের প্রেক্ষাপটে তিনি সেই আমন্ত্রণের সময়সীমা আগামী বছরের শুরুতে পিছিয়ে দেবার কথা বলেন৷ এবার পুটিন নিজেই ট্রাম্পকে মস্কোয় আমন্ত্রণের প্রস্তাব দিয়েছেন৷ হোয়াইট হাউস এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে৷
এসবি/জেডএইচ (রয়টার্স, এএফপি)