1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ক্ষুদ্রঋণের ফাঁদে আটকে যাচ্ছে ভারতের গরিব জনগোষ্ঠী

১৭ জানুয়ারি ২০১১

ক্ষুদ্রঋণের ধারণাটি জনপ্রিয় হয়েছে মূলত গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মাধ্যমে৷ যদিও এখন তা বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে পৌঁছেছে অন্যান্য দেশেও৷ তবে ক্ষুদ্রঋণ আশীর্বাদ না হয়ে কোথাও বা পরিণত হয়েছে মরণ ফাঁদে৷

https://p.dw.com/p/zyaJ
বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে সাবলম্বী এখন অনেকেছবি: picture-alliance/GUDONG

নব্বইয়ের দশক থেকে ভারতেও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ক্ষুদ্রঋণ৷ অল্প সুদে অল্প ঋণ নিয়ে কিছু একটা কাজ শুরু করার প্রচেষ্টা চালাতে এগিয়ে আসতে থাকে গরিব শ্রেণীর মানুষ৷ কিন্তু এখন নানা বিতর্ক এবং কেলেঙ্কারিতে ম্লান হয়ে যাচ্ছে এই ক্ষুদ্রঋণের সাফল্য৷ অভিযোগ উঠছে, ক্ষুদ্রঋণ দাতা প্রতিষ্ঠানগুলো নাকি গরিব মানুষদের কাছ থেকে অধিক হারে মুনাফা করছে৷ এছাড়া সুদের হার বাড়ানোরও খবর পাওয়া গেছে৷ শুধু তা-ই নয়, এসব প্রতিষ্ঠানের হয়রানির শিকার হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে অনেকেই৷ ভারতের অন্ধ্র প্রদেশেই নাকি এপর্যন্ত ক্ষুদ্রঋণ শোধ করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে ৮৮ জন৷

Jahresrückblick Oktober 2006 Bangladesh Nobelfriedenspreis an Muhammed Junus
ক্ষুদ্রঋণের ধারণাটি জনপ্রিয় হয়েছে মূলত গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মাধ্যমেছবি: AP

ক্ষুদ্রঋণের ফাঁদে আটকে পড়া এমনি একজন চেন্নাই এর বিমলা রাজন৷ তিনি দারিদ্র্যের কষাঘাত থেকে মুক্তি পেতে সাত বছর আগে ছুটে যান এক ক্ষুদ্রঋণ দাতা প্রতিষ্ঠানের কাছে৷ ঋণ গ্রহীতা নারীদের একটি গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত হন তিনি৷ এই গ্রুপের মাধ্যমে তিনি প্রথমবার ৮৫ ইউরো ঋণ গ্রহণ করেন৷ ঋণ নেওয়ার সময় রাজন সব্জির ব্যবসা করার কথা বলেন৷ কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সেই টাকা দিয়ে ব্যবসা না করে বরং বাড়ি-ঘরের কাজে ব্যয় করেন তিনি৷

আর ঋণের টাকা শোধ করতেন নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে কর্মরত রাজনের স্বামী৷ কিন্তু প্রথম ঋণ শোধ না হতেই আবারও ৮৫ ইউরো ঋণ নেন রাজন৷ এভাবে কয়েক বছরের মধ্যে তৃতীয় দফা ঋণ নেন ৩৪৫ ইউরো৷ এরপর আবারও ২৬০ ইউরো ব্যাংক ঋণ নেন তিনি৷ এক পর্যায়ে সব্জি ব্যবসা শুরু করলেও তাতেও লাভ না হয়ে বরং ক্ষতির মধ্যে পড়েন রাজন৷ এভাবে এক ঋণ শোধ করতে আরেক ঋণ নিতে গিয়ে ঋণের চক্রে আষ্টেপৃষ্ঠে আটকা পড়েন রাজন এবং তাঁর পরিবার৷

এভাবে দরিদ্র মানুষ একবার ঋণের জালে আটকা পড়লে সেখান থেকে বেরুনোর আর কোন পথ খুঁজে পাচ্ছেন না৷ তাই ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থা সুফল না এনে বরং উল্টো মরণ ফাঁদ হয়ে উঠছে গরিব মানুষদের জন্য৷ এ অবস্থায় ক্ষুদ্রঋণ প্রক্রিয়াকে ঠেলে সাজানোর দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে৷

প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন