ক্ষণিকের জয় উপভোগ করতে পারলেন না জনসন
২৩ অক্টোবর ২০১৯যে কোনো মূল্যে ৩১শে অক্টোবর ব্রেক্সিট কার্যকর করার প্রতিশ্রুতি পালন করতে কার্যত ব্যর্থ হলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন৷ মঙ্গলবার সংসদ ব্রেক্সিট চুক্তি কার্যকর করতে তাঁর আনা প্রথম প্রস্তাব অনুমোদন করায় প্রথমে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পেরেছিলেন তিনি৷ কিন্তু সেই আনন্দ বেশিক্ষণ টেকে নি৷ কারণ এর কয়েক মিনিট পর দ্বিতীয় এক প্রস্তাবের মাধ্যমে সংসদ গোটা প্রক্রিয়ার জন্য আরও সময় আদায় করতে চেয়েছিল৷ বিরোধীদের যুক্তি ছিল, মাত্র তিন দিনের মধ্যে এমন জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়৷ সেই প্রস্তাব অনুমোদনের পর ক্ষুব্ধ জনসন ব্রেক্সিট চুক্তি সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া থামিয়ে দিয়েছেন৷ প্রধানমন্ত্রীর দফতর জানিয়েছে, ইইউ ব্রেক্সিটের সময়সীমা বাড়ানোর অনুরোধ মেনে নিলে একমাত্র আগাম নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদে এই অচলাবস্থা কাটানো সম্ভব৷ অবশ্য সেই পদক্ষেপের জন্যও সংসদের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে৷
লন্ডনের এই ঘটনাপ্রবাহ পর্বেক্ষণ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নও ব্রিটেনের অনুরোধ মেনে ব্রেক্সিটের সময়সীমা তৃতীয়বারের মতো পিছিয়ে দেবার তোড়জোড় করছে৷ ইইউ দেশগুলির সরকারের পরিষদের প্রধান ডোনাল্ড টুস্ক শীর্ষ নেতাদের সেই পরামর্শ দেবেন বলে জানিয়েছেন৷ তাঁর মতে, আপাতত চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়ানোর এটাই একমাত্র পথ৷ তবে জরুরি শীর্ষ সম্মেলন ডাকার বদলে লিখিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে চান তিনি৷ নীতিগতভাবে ব্রেক্সিট পিছিয়ে দিতে রাজি হলেও তার সময়সীমা নিয়ে ইইউ নেতাদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে৷ বিশেষ করে ফ্রান্স ব্রেক্সিটের মেয়াদ বড়জোর কয়েক দিনের জন্য বাড়াতে প্রস্তুত৷ তার মধ্যেই ব্রিটিশ সংসদে আইনি প্রক্রিয়া শেষ হবে বলে সে দেশ আশা করছে৷
ইইউ-র সিদ্ধান্তের উপর ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে৷ ব্রাসেলস দীর্ঘ বিলম্ব মেনে নিলে ব্রিটেনে আগাম নির্বাচন অথবা দ্বিতীয় গণভোট আয়োজন করা সম্ভব হতে পারে৷ কিন্তু সেই মেয়াদ কম হলে ব্রিটেনের সংসদের উপর আইনি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার জন্য চাপ বাড়বে৷ ঠিক সময়ে সেই কাজ শেষ না করলে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট অনিবার্য হয়ে পড়বে৷
বরিস জনসন জানিয়েছেন, তিনি ইইউ নেতাদের সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করবেন৷ তিনি এখনো ৩১শে অক্টোবর ব্রেক্সিট কার্যকর করার পক্ষে অবিচল রয়েছেন৷ ইইউ নেতাদেরও সেই কথা জানিয়ে তিনি আবার সংসদে ফিরে যেতে চান৷ জনসনের যুক্তি, আইন করে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের সম্ভাবনা দূর করার পর সংসদকে এই চুক্তির ভিত্তিতেই ব্রেক্সিট মেনে নিতে হবে৷ অতএব সেই কাজে দেরি না করাই উচিত৷ সংসদে বিরোধীরা অবশ্য এই দুর্দশার জন্য জনসনকেই দায়ী করছে৷ লেবার পার্টির নেতা জেরেমি কর্বিন বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নিজেই তাঁর দূর্ভাগ্যের রচয়িতা৷''
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, ডিপিএ)