ক্যাসিনোকাণ্ডে জড়িত দুই ভাইয়ের মামলার রায় পেছাল
৬ এপ্রিল ২০২২বুধবার ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ ইকবাল হোসেনের আদালতে এ মামলার রায় হওয়ার কথা থাকলেও বিচারক ছুটিতে থাকায় রায় পিছিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন এ আদালতের পেশকার সাইফুল ইসলাম৷
বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর শওকত আলম বলেন, এ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মনির কামাল রায়ের জন্য আগামী ২৫ এপ্রিল নতুন তারিখ ধার্য করে দিয়েছেন৷
এনু ও রুপন ছাড়া এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- মেরাজুল হক ভূঁইয়া শিপলু, রশিদুল হক ভূঁইয়া, সহিদুল হক ভূঁইয়া, জয় গোপাল সরকার, পাভেল রহমান, তুহিন মুন্সি, আবুল কালাম, নবীর হোসেন শিকদার ও সাইফুল ইসলাম৷ আসামি শিপলু, রশিদুল, সহিদুল ও পাভেল মামলার শুরু থেকে পলাতক৷ জামিনে আছেন তুহিন৷ এনু-রুপনসহ বাকি ৬ আসামি কারাগারে৷
ঢাকার ক্রীড়াক্লাবগুলোর ক্যাসিনো বন্ধে অভিযানের মধ্যে ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি গ্রেপ্তার করা হয় এই দুই ভাইকে৷ অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ১২টি মামলা হয়৷ তার মধ্যে ওয়ারী থানার অর্থ পাচার আইনের এ মামলা গত ১৬ মার্চ রাষ্ট্র এবং আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের পর্যায়ে আসে৷
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর শওকত আলম সেদিন বলেন, ‘‘ আমরা আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছি৷ কাজেই আশা করছি, আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা হবে৷’’
অন্যদিকে এনু-রুপনের আইনজীবী রাজীব সরকার বলেন, ‘‘ আসামিদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, আসলে তা সত্য নয়৷ রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি৷ কাজেই আমরা প্রত্যাশা করছি আসামিরা খালাস পাবেন৷ ’’
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের তৎকালীন নেতা দুই ভাই, তাদের এক কর্মচারী এবং তাদের এক বন্ধুর বাসায় অভিযান চালায় র্যাব৷
অভিযানে নগদ প্রায় পাঁচ কোটি টাকা, আট কেজি সোনা এবং ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়, যেগুলো জুয়ার টাকায় তৈরি সম্পদ বলে ওই সময় র্যাব জানিয়েছিল৷
এর মধ্যে এনুর কর্মচারী আবুল কালাম আজাদের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় দুই কোটি টাকা৷ এ ঘটনায় র্যাব কর্মকর্তা জিয়াউল হাসান ২৫ নভেম্বর ওয়ারী থানায় একটি মামলা করেন৷ মামলায় অভিযোগ করা হয়, এনু ও রুপন দীর্ঘদিন ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে ক্যাসিনো পরিচালনার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে আসছে৷ ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান পরিচালিত হলে তারা তাদের অপকর্ম আড়াল করার জন্য অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ গোপন করার জন্য কালামের কাছে রেখেছিল৷ কালাম তা গ্রহণ করে নিজের কাছে রাখে, যা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের অপরাধ৷ মামলাটি তদন্তের পর ২০২০ সালের ২১ জুলাই ১১ জনের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করেন সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ ছাদেক আলী৷
গত বছরের ৫ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন বিচারক৷ মামলার বিচার চলাকালে আদালত ২০ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়৷
এনু ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের একজন শেয়ারহোল্ডার ছিলেন৷ এছাড়া এনু গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও তার ভাই রূপন ভূঁইয়া থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন৷ গ্রেপ্তারের পর দল থেকে তাদের বহিষ্কার করা হয়৷
ক্যাসিনোবিরোধী সেই অভিযানে যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের বেশ কয়েকজন নেতার জুয়ার আখড়া চালানোর সম্পৃক্ততা প্রকাশ হয়৷ পরে দুদক অনুসন্ধানে নামে এবং ক্যাসিনো ও অবৈধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০টির বেশি মামলা করে৷
এনএস/কেএম (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)