কোলনের কেন্দ্রীয় মসজিদ
৩১ ডিসেম্বর ২০১৩ইট, ইস্পাত, কাচ ও কাঠের তৈরি বিশাল স্থাপনাটি মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে ইতিমধ্যেই৷ আশা করা হচ্ছে অচিরেই এর কাজ শেষ হবে৷ কোলনের এহরেনফেল্ডে বহু মুসলিম ধর্মাবলম্বীর বাস৷ তাঁদের জন্য এই মসজিদটি শুধু উপাসনালয়ই নয়, সাংস্কৃতিক কেন্দ্রও বটে৷ এখানে নামাজের ঘর তো থাকছেই৷ এছাড়া থাকছে একটি গ্রন্থাগার, অফিস, বাজার ও দোকানপাট৷
নানা ধর্ম বর্ণের মিলন কেন্দ্র
এই স্থাপনাটির দায়িত্বে রয়েছে টার্কিশ-ইসলামিক ইউনিয়ন ফর রিলিজিয়াস অ্যাফায়ার্স বা ডিআইটিআইবি৷ আশা করা হচ্ছে, নানা ধর্ম বর্ণের মানুষের মিলন কেন্দ্র হবে মসজিদটি৷ জার্মানি ও অভিবাসীদের ভাবের আদান-প্রদানের জায়গা হবে৷ বলেন ডিআইটিআইবি-র বেকির আলবোগা৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘স্থাপনাটিকে খুঁটিয়ে দেখলে চোখে পড়বে৷ নারী, পুরুষ, তরুণ, বৃদ্ধ – সব বয়সি মানুষের জন্যই কিছু না কিছু রয়েছে এখানে৷ কেউ যদি নামাজ পড়তে চান কিংবা জার্মানির মুসলমানদের সম্পর্কে জানতে চান, তাঁদের জন্য থাকবে বিশেষ ব্যবস্থা৷ কেউ হয়ত অপূর্ব সুন্দর নামাজের ঘরটি শুধুই দেখতে আসতে পারেন৷ আর যাঁরা কেনাকাটা করতে চান, চা পান বা গল্পগুজব করতে আগ্রহী তাঁদের জন্যও রয়েছে সুব্যবস্থা৷ অভিবাসন ও ইন্টিগ্রেশন নিয়ে একটি প্রদর্শনীও থাকবে এখানে৷ এক কথায় বৈচিত্র্যময় এক স্থাপনা হবে এটি৷''
দর্শকরা এখনও দেখতে আসতে পারেন ভবনটি৷ তবে নির্মাণকাজ একেবারে শেষ হয়নি বলে সেখানে ঢুকতে চাইলে হেলমেট পরে নিতে হয়৷
সবাই আমন্ত্রিত
এই প্রসঙ্গে আইডিন বলেন, ‘‘এখন কনফারেন্স হলের বাকি কাজটা শেষ হচ্ছে৷ মাঝে মাঝে আমরা এটা ব্যবহারও করি৷ রোজার সময় আমরা অতিথিদের দাওয়াত করেছি৷ সবাই একসাথে ইফতার করেছি৷ প্রতিবেশীদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এখানে৷ এখন এটিকে ‘ওপেন ডে'-এর জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে৷ এই হলটিতে অতিথিদের সম্বর্ধনা জানানো হবে৷''
এই মসজিদে কোরান ও ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি সামাজিক কর্মকাণ্ডও চালানো হবে এর মধ্যে রয়েছে বয়োবৃদ্ধদের ও পরিবারকে সহায়তা ও পরামর্শ দান, টেলিফোনে সামাজিক পরামর্শ দেওয়া ইত্যাদি৷ এক কথায় ধর্মীয় ও সামাজিক পরিষেবা পাশাপাশি চলবে৷
এই প্রসঙ্গে আলবোগা বলেন, ‘‘সবার জন্য উন্মুক্ত মসজিদটি একটা বার্তাও বহন করে: আমি জার্মানিতে বাস করি৷ জার্মান মুসলমান৷ আমি খোলা মনের৷ আশা করি এই সমাজও আমার সঙ্গে খোলাখুলি আচরণ করবে৷ এছাড়া রাজনীতিবিদ, ইহুদি, ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের কাছ থেকেও আমরা উদার আচরণ আশা করি৷ প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়৷ মুসলিমরা এখানে ৫০ বছর ধরে বসবাস করছে, তারা যে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে থিতু হবে তা তো স্বাভাবিক ব্যাপার৷''
সংকোচ দূর হবে
দোকানপাট ও কেনা-বেঁচার ব্যবস্থা রাখায় মানুষের মন থেকে সংকোচ দূর হবে৷ অনেকে হয়ত ভাবতে পারে, আমি মসজিদে যেতে চাই কিন্তু ভেতরে যেতে ভরসা পাই না৷ বিপনি বিতানে গেলে মানুষের জড়তা ভেঙে যাবে৷
এই প্রসঙ্গে আইসে আইডিন জানান, ‘‘দোকানের আয় থেকে কিছু খরচও উঠে আসবে৷ নির্মাণ কাজ ছাড়াও পানি, বিদ্যুৎ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এসব বাবদও তো খরচ আছে৷ মুসলিম কম্যুনিটি সরকারি অর্থ পায় না, নির্মাণ কাজ, রক্ষণাবেক্ষণ, পরিষেবা ইত্যাদি বাবদ ব্যয় নিজেদেরই বহন করতে হয়৷''