কোণঠাসা সিরিয়া এবার কূটনৈতিক রণাঙ্গণে
২২ জুন ২০১১সিরিয়ার উপর আন্তর্জাতিক চাপ বর্তমানে প্রধানত যুক্তরাষ্ট্র আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের দিক থেকে হলেও চাপ যে বাড়ছে তা'তে কোনো সন্দেহ নেই৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন আজ বুধবারেই প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সঙ্গে যুক্ত চারটি কোম্পানি, এছাড়া আসাদ প্রশাসনের সাতজন সমর্থকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ ঐ সমর্থকদের মধ্যে তো তিনজন ইরানি কর্মকর্তাও আছে৷ তাদের মধ্যে একজন আবার বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর সদস্য৷ এই ইরানিরা নাকি সিরীয় সরকারকে প্রতিবাদ আন্দোলন দমনে সরঞ্জাম ও সাহায্য দিয়েছে৷
মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট আসাদের জাতির প্রতি প্রদত্ত ভাষণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিশেষ সন্তুষ্ট হতে পারেনি৷ এই নতুন পদক্ষেপ সম্ভবত তারই প্রতিক্রিয়া৷ আরো বড় কথা, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ফ্রান্স ইত্যাদি দেশের আনা নিন্দা প্রস্তাবটি রাশিয়া এবং চীনের আপত্তি থাকায় আপাতত পাশ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই৷ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন গত মঙ্গলবার তাঁর ফ্রান্স সফরের অবকাশেই বলেছেন, একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের নিজস্ব বিষয়ে হস্তক্ষেপ থেকে কোনো সুফল হয় না৷ এই পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আসাদের উপর চাপ বৃদ্ধি না করার আর কোনো পন্থা ছিল না৷
তবে আসাদ দৃশ্যত প্রতিবেশী ও বন্ধুদেশ তুরস্কের সমালোচনাতেই সবচেয়ে বেশি দুঃখ পেয়েছেন৷ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ালিদ মুয়াল্লেম দামেস্কে যা বলেছেন, তা থেকে তাই মনে হতে পারে৷ একদিকে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরে থেকে হস্তক্ষেপ সম্পর্কে সাবধানবাণী৷ অন্যদিকে তুরস্কের উদ্দেশ্যে বহুদিনের সুসম্পর্কের দোহাই৷ ‘‘আমরা তুরস্কের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে বিশেষভাবে আগ্রহী,'' মুয়াল্লেম বলেছেন৷ ‘‘আমরা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক সৃষ্টির বহু বছরের প্রচেষ্টা নস্যাৎ করতে চাই না৷'' তুরস্ক তার অবস্থান পুনর্বিবেচনা করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন মুয়াল্লেম৷
কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য আদৌ অতোটা নরম নয়৷ ‘‘সিরিয়ার বাইরে থেকে কেউ আমাদের উপর তার দৃষ্টিভঙ্গি চাপিয়ে দিতে পারবে না,'' বলেছেন মুয়াল্লেম৷ আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রসমাজ সিরিয়ার বিরুদ্ধে একটি সামরিক অভিযান শুরু করবে বলেও তিনি মনে করেন না৷ ফ্রান্স যেহেতু নিরাপত্তা পরিষদে নিন্দা প্রস্তাব আনার জন্য বিশেষভাবে সচেষ্ট, সেহেতু ফ্রান্সের বিরুদ্ধেই সবচেয়ে তিক্ত মন্তব্য করেছেন মুয়াল্লেম৷ ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আল্যাঁ জুপে সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য: ‘‘মিস্টার জুপে এখনও ফরাসি ঔপনিবেশিক আমলের স্বপ্নে মেতে রয়েছেন৷''
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন