কে এই রাম রহিম!
ভারতের পঞ্চকুলায় বিতর্কিত ধর্মীয় নেতা গুরমিত রাম রহিমের সমর্থকেরা সহিংস হয়ে উঠেছিল৷ ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছিল তারা৷
‘রকস্টার বাবা’
শুরুতে এই নামেই পরিচিত ছিলেন রাম রহিম৷ উজ্জ্বল, রংবেরংয়ের কাপড়, এবং গহনা ছিল তার পছন্দের জিনিস৷ স্বঘোষিত এই ‘ঈশ্বরের দূত’ বেশ কয়েকটি সিনেমা প্রযোজনা করেছেন, কয়েকটিতে অভিনয়ও করেছেন৷ তবে তার অর্থ ও সম্পদের উৎস এখনও অজানা৷
সমাজকর্মী সাধু
শুরুতে নিজেকে ‘সামাজিক সাধু’ এবং ‘মানবপ্রেমী’ বলে দাবি করেন রাম রহিম৷ তার অনুসারীদের উদ্যোগে বেশকিছু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং রক্তদান কর্মসূচি আয়োজন হয়৷ ২০১০ সালে একটি গণবিয়ের আয়োজনের করা হয়, যেখানে রাম রহিমের ১০০ অনুসারী স্বেচ্ছায় সাবেক যৌনকর্মীদের বিয়ে করেন৷ তার এ ধরনের কাজ বিপুল পরিমাণ অনুসারীদের আকৃষ্ট করে৷
অপরাধমূলক অভিযোগ
নিজের প্রযোজিত ও অভিনীত একটি চলচ্চিত্রে গোবিন্দ সিং নামে এক শিখ গুরুর বেশ ধরায় শিখ ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়৷ পরবর্তীতে এ ঘটনার জন্য ক্ষমা চাইতে হয় রাম রহিমকে৷ তবে তার বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর সব অপরাধের অভিযোগও রয়েছে৷ ২০০২ সালে একজন সাংবাদিক হত্যার জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে৷ তবে ২০০২ সালে নিজের দুই নারী অনুসারীকে ধর্ষণের অভিযোগেই শেষ পর্যন্ত সাজা হচ্ছে রাম রহিমের৷
রায়ের পর সহিংসতা
রাম রহিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে বলে হাই কোর্টের দেয়া রায়ের পরপরই পঞ্চকুলা, চণ্ডীগড়, দিল্লি এবং সিরসা শহরে বিক্ষোভ শুরু করে তার সমর্থকরা৷ সহিংসতার শুরু হয় পঞ্চকুলায়৷ সেখানে এক লাখেরও বেশি রাম রহিম সমর্থক জড়ো হয়েছিলেন৷
অনেকের মৃত্যু
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী সহিংসতা শুরু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিভিন্ন শহর মিলিয়ে অন্তত ৩১ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে৷ তবে নিহতের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে৷ পরিস্থিতি মোকাবেলায় অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে৷
বিভিন্ন এলাকায় কারফিউ
পঞ্চকুলা, সিরসা, সঙ্গরুর এবং মোগা জেলায় অনির্দিষ্টকালের কালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে৷ দিল্লিতেও একটি ট্রেনের কয়েকটি বগিতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে হামলাকারীরা৷
প্রশাসনিক ব্যর্থতা
হরিয়ানা এবং পাঞ্জাব সরকার আগে থেকেই পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরেছিল৷ কিন্তু তারপরও দুই রাজ্যই হাজার হাজার রাম রহিম সমর্থককে পঞ্চকুলায় প্রবেশ করার অনুমতি দিয়েছিল৷ আগে থেকে ব্যবস্থা নিলে এ অবস্থা সৃষ্টি হতো না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷
যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
সহিংসতা চলাকালে বিভিন্ন অঞ্চলের সাথে চণ্ডীগড়ের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল৷ ভারতীয় রেলওয়ের দুই শতাধিক ট্রেন বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়েছিল৷