কীভাবে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করতে চায় জার্মানি?
১৬ এপ্রিল ২০২০করোনা সংকটের জের ধরে অচলাবস্থা থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসার পরিকল্পনা পেশ করেছে জার্মানির সরকার৷ বুধবার বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে আলোচনার পর চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও ১৬টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা ঐকমত্যে পৌঁছেছেন৷ বর্তমান কড়াকড়ির মেয়াদ ৩রা মে পর্যন্ত বাড়ানোর পাশাপাশি বেশ কিছু পদক্ষেপের মাধ্যমে সতর্কতার সঙ্গে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফেরার পরিকল্পনা পেশ করেছেন তাঁরা৷
সংক্রমণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখেই কিছু ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ শিথিল করতে চায় জার্মানি৷ ফেডারেল পর্যায়ে সার্বিক কিছু সিদ্ধান্তের পাশাপাশি কয়েকটি রাজ্য নিজস্ব কিছু পদক্ষেপও নিচ্ছে৷ পূর্বশর্ত হিসেবে প্রকাশ্যে মানুষের মধ্যে কমপক্ষে দেড় মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে৷ একমাত্র পরিবারের সদস্য অথবা বাইরের একজন ব্যক্তির সঙ্গে প্রকাশ্যে বের হওয়া যাবে৷
ফেডারেল পর্যায়ে ৪ঠা মে থেকে ধাপে ধাপে স্কুল খোলা হবে৷ বিশেষ করে যে সব শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক অথবা মাধ্যমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে উত্তীর্ণ হচ্ছে, তাদের ক্লাসগুলিকে এ ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে৷ নর্থরাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যে ২০শে এপ্রিল থেকেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু পরীক্ষাও নেওয়া হবে৷ তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত কড়া স্বাস্থ্যবিধি কার্যকর করে সবকিছুর আয়োজন করতে হবে৷
বিভিন্ন ধর্মের উপাসনার ক্ষেত্রে এখনই সরকার ছাড়পত্র দিচ্ছে না৷ আগামী দুই সপ্তাহে চার্চ, মসজিদ, সিনাগগ ইত্যাদি সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ নীতিগতভাবে মানুষের সমাবেশ আরও কিছুকাল এড়িয়ে চলতে চায় জার্মানি৷ আগামী ৩১শে আগস্ট পর্যন্ত বড় আকারের অনুষ্ঠান ও সমাবেশ বাতিল করা হচ্ছে৷
প্রকাশ্যে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করছে না জার্মানির ফেডারেল সরকার৷ তবে ট্রামে-বাসে, ট্রেনে মাস্ক পরার পরামর্শ দিচ্ছে সরকার৷ যে সব বন্ধ জায়গায় অন্য মানুষের সঙ্গে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা কঠিন, সেখানে এমন মাস্ক পরা উচিত বলে সরকার মনে করছে৷
সুপারমার্কেট ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কেনাকাটার পরিধির বাইরেও দোকানপাট খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত সরকারের জন্য সহজ ছিল না৷ অনেক তর্কবিতর্কের পর আগামী সপ্তাহ থেকে ধীরে ধীরে কিছু দোকানপাট খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে৷ ৮০০ বর্গমিটার পর্যন্ত আয়তনের দোকান আপাতত খোলা হবে৷ তবে সেখানেও কড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে৷ গাড়ি, সাইকেল ও বইয়ের সব দোকানও একই শর্তে খোলা হবে৷ এমনকি চুল কাটার সেলুনও খোলার অনুমতি দিচ্ছে সরকার৷
ফেডারেল ও রাজ্য সরকারগুলির এই সব সিদ্ধান্ত নিয়ে জার্মানিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে৷ খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে সমালোচনার পাশাপাশি একদল আরও উদার সিদ্ধান্তের আহ্বান জানাচ্ছে৷ অন্য দল এখনই এত ‘সাহসি' পদক্ষেপের বিরোধিতা করছে৷ ম্যার্কেল অবশ্য বুধবার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সবকিছু পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে৷ দুই সপ্তাহ অন্তর পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি, রয়টার্স)