কাশ্মীরে শান্তি ফেরাতে সর্বদলীয় বৈঠক
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১০জম্মু-কাশ্মীরে লাগাতার সহিংসতার আবহে আজ নতুনদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে পাঁচ ঘন্টাব্যাপী সর্বদলীয় বৈঠক শেষে স্থির হয় যে, এক সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল শীঘ্রই কাশ্মীর যাবেন সেখানকার পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে৷
রাজ্যের ক্ষমতাসীন দলের নেতা ফারুক আবদুল্লা বৈঠকটিকে সন্তোষজনক বলে অভিহিত করেন৷ রাজ্যের প্রধান বিরোধী নেত্রী মেহবুবা মুফতি সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর দল বিনা শর্তে আলোচনার দাবি জানিয়েছে৷ মানবিক কারণে কাশ্মীরকে যেন ‘অবরোধমুক্ত‘ করা হয়৷ তবে সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন তুলে নেবার বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি৷
কাশ্মীরসহ দেশের সব বড় বড় রাজনৈতিক দলের নেতারা বৈঠকে যোগ দেন৷ শুরুতে প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং সরকারের কাশ্মীর নীতির পুনরুক্তি করে বলেন, সব স্তরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরকার আলোচনায় রাজি৷ কিন্তু অর্থপূর্ণ আলোচনার জন্য দরকার শান্তির বাতাবরণ৷ সরকার বিশ্বাস করে শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য আলোচনাই একমাত্র পথ৷ চলতি সহিংস বিক্ষোভ সর্বত্র স্বতঃস্ফুর্ত নয়৷ এর পেছনে অভিসন্ধিমূলক এক চক্র কাজ করছে, বলেন প্রধানমন্ত্রী৷ কংগ্রেস সভানেত্রী তথা ইউপিএ চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধী তাঁর বক্তব্যে কাশ্মীরী যুব সম্প্রদায়ের আশা আকাঙ্খা পূরণ করে তাঁদের মনজয় করার ওপর জোর দেন৷
আজকের সর্বদলীয় বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলির অবস্থান এত বিপরীতমুখি যে সহমত গড়ে ওঠার সম্ভাবনা ক্ষীণ৷ সমাধানসূত্রের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে সশস্ত্রবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন তুলে নেয়া বা শিথিল করার বিষয়ে বিভাজন রেখা স্পষ্ট৷ প্রধান বিরোধী দল বিজেপি কাশ্মীর থেকে এই আইন তলে নেবার ঘোরতর বিরোধী৷ দলের মতে এতে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা পাবে বাড়তি বল৷ এমন কী স্বশাসন দেবারও বিরোধী৷ কাশ্মীরের কোয়ালিশন সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার দাবি এই বিতর্কিত আইন তুলে নিতে হবে৷ তা না হলে, কোয়ালিশন থেকে বেরিয়ে আসার প্রচ্ছন্ন হুমকি দেন তিনি৷
শান্তি সূত্র নিয়ে যখন বৈঠক চলছে দিল্লিতে, তখন জম্মু কাশ্মীরে নতুন সংঘর্ষে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয় চারজন৷ আহত ১০ থেকে ১২ জন৷ অ্যামেরিকায় কোরআন পোড়ানোর গুজবে উত্তেজিত জনতা জম্মুর পুঞ্চ জেলায় মেন্ধার শহরে একটি মিশনারি স্কুল পুড়িয়ে দেয়, পুলিশ চৌকি ও সরকারি ভবনে চালায় হামলা৷ কাজেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কারফিউ জারি করতে হয়৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ