1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ছাত্র আন্দোলনকে পথ দেখাচ্ছেন গুরমেহের

রাজীব চক্রবর্তী নতুন দিল্লি
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

দিল্লিতে শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের ‘‌দাদাগিরির' বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সুর শোনা যাচ্ছে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় ও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমা ছাড়িয়ে দেশের অন্য প্রান্ত কাশ্মীরেও৷ আর এতে নতুন মাত্রা এনেছেন গুরমেহের কৌর৷

https://p.dw.com/p/2YImI
Screenshot Twitter Gurmehar Kaur
ছবি: Twitter/Gurmehar Kaur

সম্প্রতি ‘‌অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ'‌ বা এবিভিপি ও ‘‌অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন'‌ বা আইসা-র সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাকে ঘিরে শিরোনামে আসে দিল্লির রামজস কলেজ৷ এই কলেজে আইসা সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে এবিভিপি কর্মী, সমর্থকদের বিরুদ্ধে৷ এ ঘটনায় ক্রমশই কোণঠাসা হচ্ছে বিজেপির ছাত্র সংগঠনটি৷ আর তাতে ইন্ধন জুগিয়েছে দিল্লির লেডি শ্রীরাম কলেজের ছাত্রী গুরমেহের কৌরের টুইট৷

গুরমেহের কার্গিল শহিদ ক্যাপ্টেন মনদীপ সিংহের মেয়ে৷ স্বভাবতই জাতীয়তাবাদের ব্যাপারে প্রবল অস্বস্তিতে পড়েছে দেশপ্রেমের ধ্বজাধারী বিজেপি৷

গত মঙ্গলবার এবিভিপি-র সঙ্গে অন্য ছাত্র সংগঠন ও শিক্ষাবিদদের একাংশের নতুন গোলমাল বেধেছিল৷ দিল্লির রামজস কলেজে এক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখার কথা ছিল পুলিশের খাতায় ‘‌রাষ্ট্রদ্রোহী'‌ জেএনইউ-‌এর ছাত্র নেতা উমর খালিদের৷ তাতেই আপত্তি জানিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ শুরু করে এবিভিপি৷ ফলে শেষমেশ ওই অনুষ্ঠান বাতিল হয়ে যায়৷ পরের দিন, বুধবার এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে বিরোধী এসএফআই ও আইসা প্রতিবাদ মিছিল বার করে৷ কিন্তু, সেই মিছিলের ওপর লাঠি, রড নিয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে এবিভিপি-র বিরুদ্ধে৷ হামলায় ছাত্রদের পাশাপাশি আহত হন বেশ কয়েকজন শিক্ষকও৷ ঘটনার প্রতিবাদে দেশ জুড়ে সরব হন শিক্ষাবিদদের একাংশ৷ প্রতিবাদের ঝড় আছড়ে পড়ছে ফেসবুক, টুইটারেও৷

রাস্তায় নামেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা একাধিক কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা৷ কার্গিল শহিদের মেয়ে গুরমেহেরের বক্তব্য, ‘‘জাতীয়তাবাদের সংজ্ঞা এবিভিপি-র কাছে শিখতে রাজি নই আমি৷'' তাঁর মতে এবিভিপি যা করেছে তা ‘নৃশংস', ‘বিরক্তিকর' এবং ‘গণতন্ত্রের উপর হামলা'৷

গুরমেহেরের জন্ম জলন্ধরে৷ কার্গিলের প্রান্তে দেশের জন্য লড়াই করে বাবা যখন শহিদ হন, গুরমেহের তখন মাত্র দু'বছরের৷ এখন তিনি লেডি শ্রীরাম কলেজে সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করছেন৷ গত বুধবার রামজস কলেজে দুই ছাত্র সংগঠনের সংঘর্ষের ঘটনার পরই ফেসবুকে নিজের প্রোফাইল পিকচার বদলে ফেলেন গুরমেহের৷ তাতে একটি প্ল্যাকার্ড ধরে রয়েছেন তিনি৷ প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘‘আমি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী৷ আমি এবিভিপি-কে ভয় পাই না৷ আমি একা নই৷ দেশের প্রত্যেক পড়ুয়া আমার সঙ্গে আছে৷''

তাঁর আবেদন, এবিভিপি-র ভূমিকা নিয়ে তাঁর সঙ্গে যাঁরা একমত তাঁরাও একইভাবে প্রতিবাদ করুক৷ গুরমেহেরের মতো প্ল্যাকার্ড হাতে সেল্ফি তুলে তা প্রোফাইল পিকচার করুক৷ ‘স্টুডেন্টস এগেইনস্ট এবিভিপি' নাম দিয়ে ওই বক্তব্যগুলি পোস্ট হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সমর্থনের ঢেউ আছড়ে পড়ে৷

এদিকে, এই ফেসবুকে পোস্টের কারণে সোশ্যাল মিডিয়াতেই ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে গুরমেহেরকে৷ গুরমেহের জানিয়েছেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে৷ প্রোফাইল পিকচার খুললেই দেখা যাবে অনেকেই সেখানে আমাকে ভয় দেখাচ্ছেন৷ এমনকি আমাকে দেশবিরোধী আখ্যাও দেওয়া হচ্ছে৷ হুমকি দেওয়া হচ্ছে ধর্ষণের৷ রাহুল নামে এক যুবক কমেন্ট করে জানিয়েছে, কীভাবে সে আমাকে ধর্ষণ করতে চায়৷''

কার্গিল শহিদের মেয়ের এই বক্তব্যের প্রতিবাদে মুখ খোলেননি বিজেপি নেতারা৷ তবে রামজস কলেজের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ায় সাবিত্রীভাই ফুলে পুণে বিশ্ববিদ্যালয়ের এবিভিপি ও এসএফআই সদস্যরা৷

ওদিকে, এই ঘটনার রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে আসরে নেমে পড়েছেন দিল্লির মু্খ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টি প্রধান অরবিন্দ কেজরিবাল৷ তিনি দাবি করেছেন, ‘‘দিল্লি পুলিশ বিজেপির এজেন্ট হিসেবে পড়ুয়াদের উপরে হামলা করেছে৷'' এখন জেএনইউ-এ কানাইয়া কুমার বিতর্কের পর নতুন ছাত্র-‌বিরোধ কতদূর গড়ায় সেদিকেই নজর রাখছে সব মহল৷

বন্ধু, আপনিও কি গুরমেহেরের পাশে আছেন? জানান আমাদের, লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য