কলকাতায় মেট্রো আতঙ্কে অনিশ্চয়তায় নিত্যযাত্রীরা
২২ অক্টোবর ২০১০বুধবার ব্যস্ত অফিস-সময়ে ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গের মধ্যে মেট্রো রেলের কামরার লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ভয় পাইয়ে দিয়েছে বহু মানুষকে, যারা নিত্য প্রয়োজনের নানা কাজে মেট্রো রেলে সফর করতেন৷ এদের মধ্যে যেমন নিয়মিত অফিসযাত্রীরা আছেন, তেমন আছে ছোট ছোট স্কুল ছাত্র-ছাত্রী আর তাদের বাবা-মায়েরা৷ এত মানুষের জীবন মাটির তলার ওই সুড়ঙ্গে পণবন্দি করার অধিকার কে দিল, এ প্রশ্ন মেট্রো কর্তৃপক্ষকে এখনও কেউ করেনি৷ কিন্তু বুধবারের দুর্ঘটনার পর যা জানা গেছে, তা শিউরে ওঠার মত৷ খোদ মেট্রো কর্মী ইউনিয়নের প্রতিনিধি বলছেন, কলকাতা মেট্রোর জন্য ১৮টি রেক এসেছিল ১৯৮১ থেকে ৮৪ সালের মধ্যে৷ অর্থাৎ রেকগুলি ২৫ বছরের বেশি পুরনো৷ রেলের নিয়ম অনুযায়ী, ২৫ বছর বা তার বেশি পুরনো রেক বাতিল করে দেওয়া হয়৷ অথচ কলকাতায় সেই পুরনো রেকগুলিই এখনও চালানো হচ্ছে৷
বোঝাই যাচ্ছে যে কলকাতার মেট্রো রেলের নিত্যযাত্রীরা নিজেরা না জেনেই রোজ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করেন৷ অথচ বুধবারের দুর্ঘটনার পর নিয়মমাফিক একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা ছাড়া অন্য কোনও দায়িত্ববোধ মেট্রো কর্তৃপক্ষের দিকে চোখে পড়েনি৷ এবং এই কমিটি বৃহস্পতিবার সারা দিনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হওয়ার সময়ই পাননি৷ উল্টে রেল সুরক্ষা বাহিনী চরম দুর্ব্যবহার করেছে সাংবাদিকদের সঙ্গে৷ সে ব্যাপারে মেট্রোর জনসংযোগ অধিকর্তার সাফাই, ‘‘মেট্রো রেলের ভিতরে ঢুকতে গেলে কিছু নিয়মকানুন আছে, অনুমতি নেওয়ার ব্যাপার আছে৷ সাংবাদিকরা যদি আগাম অনুমতি নিয়ে রাখতেন তাহলে সমস্যা হত না৷ কিন্তু তারা তা না করায় রেল সুরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে তাদের কিছু বচসা হয়েছে৷ এর জন্যে আমরা দুঃখপ্রকাশ করছি৷''
কলকাতা মেট্রোর বেহাল অবস্থা নিয়ে যথারীতি রাজনৈতিক চাপান-উতোরও শুরু হয়ে গেছে৷ যার আড়ালে চাপা পড়ে যাচ্ছে যাত্রী সুরক্ষার চরম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি৷
প্রতিবেদন: শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন