করোনা নেই, উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা
৮ এপ্রিল ২০২০করোনার আক্রমণ ঠেকাতে ইউরোপের আগেই প্রস্তুতি শুরু করেছিল উত্তর কোরিয়া৷ জানুয়ারির শেষে সরকারি পত্রিকা ‘রডং সিনমুম’ করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধকে জাতীয় অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সঙ্গে তুলনা করেছিল৷
এরপর থেকে এখন পর্যন্ত উত্তর কোরিয়ায় ঢোকা ও বের হওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে৷ বিমান ও ট্রেন চলাচল স্থগিত আছে৷ স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ আছে৷ কূটনীতিকসহ সব বিদেশিদের ৩০ দিনের কোয়ারান্টিনে রাখা হয়েছিল৷
এমনকি দেশটির সামরিক বাহিনীও লকডাউন অবস্থায় ছিল বলে গত ১৩ মার্চ জানিয়েছিলেন সাউথ কোরিয়ায় নিয়োজিত যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল রবার্ট অ্যাডামস৷ টানা ২৪ দিন উত্তর কোরিয়ার বিমানবাহিনীর কোনো বিমান ওড়েনি বলেও জানান তিনি৷
লকডাউন শেষে উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনী আবার নিয়মিত কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন জেনারেল অ্য়াডামস৷
ইতিমধ্যে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার খবর পাওয়া গেছে৷ এর মধ্যে তৃতীয় পরীক্ষার পরদিন ২২ মার্চ উত্তর কোরিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা কেসিএনএ জানায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প কিম জং উনকে একটি ব্যক্তিগত চিঠি লিখেছেন৷ চিঠিতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের পাশাপাশি করোনা মোকাবিলায় সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে বলে জানায় কেসিএনএ৷ হোয়াইট হাউস চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করলেও বিস্তারিত জানায়নি৷
এখন পর্যন্ত কেউ করোনায় আক্রান্ত হননি বলে জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া৷
তবে এই তথ্য বিশ্বাসযোগ্য মনে করছেন না অনেকে৷ তাঁরা বলছেন, জানুয়ারির শেষ দিকে উত্তর কোরিয়া চীনের সঙ্গে মানুষের যাতায়াতের সব পথ বন্ধ করে দিলেও পণ্য় পরিবহণের একটি পথ খোলা রেখেছে৷ এরপর দুইমাস ধরে করোনা চীনে বিস্তার লাভ করলেও সীমানায় গিয়ে ভাইরাস আটকে যেতে পারে বলে মনে করছেন না তাঁরা৷
ব্রিটিশ গবেষক আন্দ্রে আব্রাহামিয়ান বলছেন, এটা ‘একেবারে অসম্ভব’ যে উত্তর কোরিয়ায় কোনো করোনা নেই৷ তিনি সাউথ কোরিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করেন৷ সাউথ কোরিয়ায় এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১০ হাজার জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন ২০০ জন৷
মার্কিন জেনারেল অ্যাডামসও বলছেন, উত্তর কোরিয়ায় কোভিড-১৯ থাকার ব্য়াপারে মার্কিন সেনাবাহিনী ‘প্রায় নিশ্চিত'৷
সাউথ কোরিয়ায় থেকে উত্তর কোরিয়া নিয়ে কাজ করা দৈনিক পত্রিকা ‘এনকে' ৯ মার্চ এক প্রতিবেদনে জানায়, উত্তর কোরিয়ার ১৮০ জন সেনা ‘এমন লক্ষণ নিয়ে মারা গেছেন যা করোনা ভাইরাসের কারণে হতে পারে৷’
এর দুই সপ্তাহ পর আরেক প্রতিবেদনে পত্রিকাটি শ্বাসপ্রশ্বাসের অসুখে কয়েকজন কারাবন্দির মৃত্যুর খবর দিয়েছিল৷ এরপর ঐ কারাগারে জীবাণুনাশক ছিটানো হয় বলে জানায় ঐ পত্রিকাটি৷
এসব খবর পরিবেশনের সময় অন্তত দুটি সূত্রের সঙ্গে তথ্য মিলিয়ে দেখা হয়েছে বলে ডয়চে ভেলের কাছে দাবি করেছে ডেইলি এনকে৷
এস্থার ফেলডেন/জেডএইচ