করোনা টিকা আবিষ্কার করতে চায় ইউরোপ
৫ মে ২০২০বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞের মতে, করোনা সংকট কাটিয়ে গোটা বিশ্বে ‘স্বাভাবিক’ পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার একমাত্র উপায় টিকা৷ শুধু আবিষ্কার নয়, যত দ্রুত সম্ভব সেই টিকা ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সবার নাগালে নিয়ে আসতে হবে৷ মানবজাতির সামনে এমন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে গবেষণার জন্য প্রায় ৭৫০ কোটি ইউরোপ প্রয়োজন, এমনটাই ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ টিকা আবিষ্কার হওয়া পর্যন্ত নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি ও আরও ভালো পরীক্ষার ব্যবস্থা করতেও এই অর্থ ব্যয় করা হবে৷ জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস অবশ্য বলেন, সব মানুষের হাতে এই গবেষণার সুফল পৌঁছে দিতে এই অঙ্কের পাঁচ গুণ প্রয়োজন হতে পারে৷
সোমবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতৃত্বে একাধিক বিশ্বনেতা ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা ৭৪০ কোটি ইউরো ব্যয়ের অঙ্গীকার করলেন৷ ইইউ-র মতে, আগামী কয়েক দিনে সামান্য এই ঘাটতিও পূরণ হয়ে যাবে৷ ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েনের নেতৃত্বে এক ভিডিও কনফারেন্সে বিশ্ব নেতা ও শীর্ষ কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন৷ তাঁদের মতে, এই উদ্যোগ সবে শুরু হচ্ছে৷ করোনা ভাইরাস পরাস্ত করতে বেশ কিছুকাল সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে৷ প্রায় তিন ঘণ্টার সম্মেলনের পর ফন ডেয়ার লাইয়েন বলেন, এই অর্থ দিয়ে অভূতপূর্ব আন্তর্জাতিক সহযোগিতা শুরু হচ্ছে৷
সমালোচকেরা অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছেন, যে এই অঙ্কের অর্থ মোটেই কোনো তহবিলে জমা হচ্ছে না৷ এর একটা অংশ সরাসরি ব্যয় করা হলেও বাকি অর্থ ঋণ ও জাতীয় খাতে উদ্যোগের অংশ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে৷
বিশ্বের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ দেশ একযোগে করোনা ভাইরাস মোকাবিলার অঙ্গীকার করলেও সম্মেলনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার অনুপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো৷ চীন অংশ নিলেও কোনো শীর্ষ নেতার বদলে রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে বক্তব্য রেখেছে৷ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ বলেন, এ হলো সময়ের বিরুদ্ধে এক লড়াই৷ ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন টিকা আবিষ্কারের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার বদলে বিভিন্ন দেশের মধ্যে সবচেয়ে জরুরি সহযোগিতার উল্লেখ করেন৷ বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের সহ সভাপতি মেলিন্ডা গেটস মনে করিয়ে দেন, যে বিশ্বের সব জায়গায় মানুষের কাছে প্রতিষেধক পৌঁছে না দিলে এই মহামারি শেষ হবে না৷
চলতি সপ্তাহে ইউরোপসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে লকডাউন ও কড়াকড়ি শিথিল করা হচ্ছে৷ আরও বেশি মানুষ বাসা ছেড়ে কাজের জায়গা বা কেনাকাটার জন্য বের হবার ফলে নতুন সংক্রমণের হার বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ এমনকি প্রথমবারের তুলনায় আরও মারাত্মক এক ‘দ্বিতীয় ঢেউ' নিয়েও জল্পনাকল্পনা চলছে৷ এমনটা হলে কোনো দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবা অবকাঠামো বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারে৷
এসবি/কেএম (এপি, এএফপি)