করোনা কালে অনলাইনে জমজমাট ইফতার বাজার
২৮ এপ্রিল ২০২০ফলে অনলাইনগুলোর বিক্রি দ্বিগুণ/তিনগুণ বেড়ে গেছে৷ অন্যদিকে কর্মী ও পরিবহন সংকটে তাদের পণ্য ডেলিভারি দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে৷
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় শুধু রোজা উপলক্ষে অন্তত অর্ধশত নতুন ফেসবুক পেজ চালু হয়েছে, যারা হোম ডেলিভারি দিচ্ছে বলে জানান কয়েক বছর ধরে এ ব্যবসায় জড়িত প্রবীর কুমার সরকার৷
করোনা সংকট এবং রমজানে নিজের ফেসবুক পাতা ‘ভালো ফল’-এর অবস্থা নিয়ে টেলিফোনে ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা বলেন তিনি৷
বলেন, ‘‘দেশে করোনা প্রাদুর্ভাবের পর আমার বিক্রি দুই-তিন গুণ বেড়ে গেছে৷ এমনকি দেশের বাইরে থেকেও অনেকে পরিবারের জন্য খাদ্যপণ্য অর্ডার করছেন৷ এদিকে, কর্মী কমে যাওয়ায় এত চাপ সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে৷ গণপরিবহন না থাকায় বিশেষ ব্যবস্থায় পণ্য ডেলিভারি দিতে হচ্ছে৷ ফলে ডেলিভারি খরচ কিছুটা বেড়ে গেছে৷’’
নিত্যপণ্যের পাশাপাশি রোজার একমাস ইফতার সামগ্রী বিক্রি করছেন জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘‘এ বছর রাস্তায় ইফতার সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে না৷ তাই অনেকেই অনলাইনে এগুলো বিক্রি করছেন৷ আমরাও শুরু করেছি৷ একদিন আগে অর্ডার নিয়ে পরদিন পণ্য ডেলিভারি দিচ্ছি৷ এবার ইফতার সামগ্রীর চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে৷
‘‘উবারইট, ফুডপান্ডার মতো অ্যাপ ব্যবহার করেও অনেকে বড় বড় রেস্তোরাঁ থেকে ইফতার কিনছেন৷ ওইসব রেস্তোরাঁ বন্ধ আছে, কিন্তু হোম ডেলিভারির অর্ডার নিচ্ছে৷’’
মালয়েশিয়ার সিতি জাবেদাহ আব্দুল ওয়াবের পরিবার গত ১৫ বছর ধরে শুধু রোজার মাসে ঘরে তৈরি খাবার, বিশেষ করে ‘মুরতাবাক' (মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জনপ্রিয় একটি ডিশ) বিক্রি করেন৷
কিন্তু এ বছর করোনা ভাইরাস সংক্রমণের বিস্তার রোধে মালয়েশিয়াসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো রমজান মাসেও লকডাউন হয়ে আছে৷ ফলে এবার ইফতার বাজার সম্পূর্ণ বন্ধ৷
তাই সিতি জাবেদাহদের পারিবারিক ব্যবসা ‘মুরতাবাক মামি অ্যান্ড মুরতাবাক সুলতান' থেকে এবার হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুকে অর্ডার নেওয়া হচ্ছে৷
সিতি জাবেদাহ বলেন, ‘‘এই প্রথম আমরা অনলাইনে খাবার বিক্রি করছি৷ রমজান মাস শুরু কয়েকদিন আগে থেকেই আমরা অনলাইনে পাতা খুলে ফেলি, যেন ক্রেতারা আমাদের খুঁজে পান৷’’
মালয়েশিয়া সরকার মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত আংশিক লকডাউন জারি করে দেশজুড়ে ইফতার বাজার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে৷
ফলে রাস্তায় খাবার বিক্রি করতেন এমন অনেক হকার এখন অনলাইনের মাধ্যমে ব্যবসা করছেন৷ প্রতিবেশী ইন্দোনেশিয়ায়ও হকাররা রোজায় অনলাইনে ইফতার ও সেহরির সামগ্রী বিক্রি করছেন৷
সেখানে মালয়েশিয়ান মালয় হকার্স অ্যান্ড স্মল ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রুসলি সুলাইমান বলেন, ‘‘ইন্দোনেশিয়ায় আপনি অ্যাপ থেকে যেকোনো খাবার অর্ডার করতে পারবেন৷ তবে এজন্য হকারদের কিছু প্রশিক্ষণ দিতে হচ্ছে৷ তারা এতদিন রাস্তায় খাবার বিক্রি করতো৷ ফলে প্রযুক্তির ব্যবহার করে অর্ডার ও কার্ডের মাধ্যমে বিল নেওয়া তাদের শেখাতে হচ্ছে৷’’
মালয়েশিয়ায় ফেসবুকে রমজান বাজার নামে অনেক পাতা খোলা হয়েছে৷ যেগুলোর প্রায় অধিকাংশই ক্রেতাকে পণ্য হাতে পাওয়ার পর দাম পরিশোধের সুযোগ দিচ্ছে৷ পাশের দেশ সিঙ্গাপুরেও একই ভাবে রমজানের বাজার চলছে৷
এসএনএল/ এসিবি (রয়টার্স)