1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
রাজনীতিতুরস্ক

এর্দোয়ানের বিরুদ্ধে বিরোধী প্রার্থী কিলিচদারোলু কে?

৯ মার্চ ২০২৩

তুরস্কে এর্দোয়ানের বিরুদ্ধে বিরোধীদের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হলেন কেমাল কিলিচদারোলু। আগামী মে মাসে এই নির্বাচন হবে।

https://p.dw.com/p/4OQNV
ছবি: Dilara SenkayaREUTERS

প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ানের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারার মতো একজন জবরদস্ত প্রার্থী খুঁজছিলেন বিরোধীরা। অবশেষে তারা সেই প্রার্থী খুঁজে পেলেন। রিপাবলিকান পিপলস পর্টির নেতা কিলিচদারোলু হবেন তাদের সম্মিলিত প্রার্থী, যিনি আগামী ১৪ মে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এর্দোয়ানকে টক্কর দেবেন।

গত প্রায় ২০ বছর ধরে ক্ষমতায় আছেন এর্দোয়ান। তাকে কি সরাতে পারবেন কিলিচদারোলু?

বর্ষসেরা আমলা'

কিলিচদারোলুর জন্ম ১৯৪৮ সালে। বাবা একজন সরকারি চাকুরে ছিলেন। সাত সন্তানের মধ্যে তিনি চতুর্থ। তিনিই পরিবারের একমাত্র সদস্য যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে পড়েছেন। আঙ্কারার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ইকনমিক্স ও ফিন্যান্স নিয়ে পড়েন। তারপরই ১৯৭১ সালে  তিনি তুরস্কের অর্থ ও রাজস্ব মন্ত্রণালয়ের পরামর্শদাতা হিসাবে যোগ দেন।

১৯৯২ সালে তিনি সোস্য়াল সিকিউরিটি অথরিটি(এসএসএ)-র ডিরেক্টর হন। দুই বছর পর একটি পত্রিকার বিচারে তিনি বর্ষসেরা আমলা নির্বাচিত হন। ১৯৯৯ সালে তিনি অবসর নেন।

কিলিচদারোলু সৎ ও দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসাবে সুপরিচিত। আমলা হিসাবে যতদিন কাজ করেছেন, ততদিন দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে কঠোর হাতে ব্যবস্থা নিয়েছেন।

২০০২ সালে তিনি সিএইচপি পার্টির প্রার্থী হয়ে পার্লামেন্টের নির্বাচনে জেতেন। একই বছরে এর্দোয়ান ক্ষমতায় আসেন। ২০০৭ সালে তিনি ডেপুটি স্পিকার হন। সেসময় তিনি তুরস্কে দুর্নীতির তথ্যপ্রমাণ প্রকাশ করেন। ফলে মিডিয়ায় রীতিমতো জনপ্রিয় হন তিনি।

২০১০ সালে সিএইচপি পার্টির  তৎকালীন নেতার নাম যৌন কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে। কিলিচদারোলু নেতা নির্বাচিত হন। তিনি ২০১৭ সালে মার্চ ফর জাস্টিসে অংশ নেন এবং সাড়ে চারশ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন।

'আমি হতাশ হই না'

দেশোর ত্রয়োদশ বা ১৩ নম্বর প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য লড়বেন কিলিচদারোলু। তাকে 'তুরস্কের গান্ধী' বা 'গান্ধী কেমাল' বলেও ডাকা হয়। তার স্ত্রী সেলভা বলেছেন, তিনি এতটাই শান্ত থাকেন যে, কখনো চিৎকার করেন না। নিজের যুক্তিতর্ক একেবারে শান্তভাবে দেন।

তাকে অনেকবার হত্যার চেষ্টা হয়েছিল। ২০১৯-এ আঙ্কারায় তাকে পিটিয়ে মারার চেষ্টা হয়। তার এক সহকর্মী জানিয়েছেন, ''আক্রান্ত হওয়ার পর আমরা তার বাড়ি গেলাম। তিনি দরজা খুললেন। তার মুখে ও দেহে ক্ষতচিহ্ন। তিনি আমাদের বসার ঘরে নিয়ে বসালেন। বললেন, শান্ত থাকুন। এই আক্রমণ নিয়ে বাড়াবাড়ি করার দরকার নেই। আমরা তার থেকে অনেক বেশি উত্তেজিত ছিলাম।''

কুর্দদের সংগঠন পিকেকে তার উপর সশস্ত্র হামলা করেছিল, পার্লামেন্ট আক্রমণ ও মার্চ ফর জাস্টিসের উপর বোমা হামলা থেকেও তিনি বেঁচে যান।

তিনিই কি সেরা প্রার্থী?

তার এত ইতিবাচক দিক থাকা সত্ত্বেও তুরস্কের জনগণের একটা অংশ মনে করে, তিনি এর্দোয়ানের সমকক্ষ প্রার্থী নন। তার সেই ক্যারিশমা নেই।

কিলিচদারোলু ছয় বিরোধী দলের প্রার্থী হয়েছেন। কিন্তু তাকে প্রার্থী করা নিয়েও এই ছয় দলের মধ্যে দ্বিধা ছিল। গত একবছর ধরে এই ছয় বিরোধী দল একজোট হয়েছে। বহুবার তারা বৈঠকে বসেছে প্রার্থী ঠিক করার জন্য। এমনকী তাকে প্রার্থী করা হলে ন্যাশনাল গুড পার্টি জোট ছেড়ে যাবে বলেও হুমকি দিয়েছিল।

তারপর অনেক আলোচনার পর বিরোধ মিটেছে। এখন কিলিচদারোলু বিরোধী প্রার্থী। এর্দোয়ানকে তিনি হারাতে পারবেন কি না, সেটাই এখন দেখার।

গুলসেন সোলাকের/জিএইচ(ডিডাব্লিউ)