জাতীয় পার্টির ঐক্য
২৭ মার্চ ২০১৪৫ই জানুয়ারির একতরফা সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি৷ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদও বিএনপি'র অনুসারী হতে চেয়েছিলেন৷ নির্দেশ দিয়েছিলেন তাঁর দলের সদস্যদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে৷ তবে এরশাদ সফল হননি৷ জাতীয় পার্টির সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদ বাধ সাধেন৷ এবং রওশনেরই জয় হয়৷ শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেয় এবং ৩৪টি আসন পায়৷ জাতীয় পার্টি সংসদে বিরোধী দল এবং রওশন এরশাদ বিরোধী দলীয় নেত্রী হন৷ আর বিরোধী দল হলেও মন্ত্রীত্বও নিয়েছেন তারা৷ এরশাদ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত৷ কিন্তু দূরত্ব বাড়ে এরশাদ-রওশনের৷ মুখ দেখাদেখিও বন্ধ হয়ে যায়৷ রওশন আলাদা অফিসে জাতীয় পার্টির কার্যক্রম শুরু করেন৷ আলোচনায় আসে এরশাদকে বাদ দিয়ে রওশনের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির৷
কিন্তু বৃহস্পতিবার ঢাকায় জাতীয় পার্টির ছাত্র সংগঠন জাতীয় ছাত্রসমাজের কেন্দ্রীয় সম্মেলনে এরশাদ প্রধান অতিথি আর রওশন বিশেষ অতিথি হিসেবে একই মঞ্চে পাশাপাশি বসেন, কথা বলেন, বক্তৃতা দেন৷ রওশন তার বক্তৃতায় বলেন, ‘‘এরশাদের সঙ্গে আমার কোন বিরোধ নেই৷ পার্টি ভাগ হয়ে যাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই৷ ওনাকে (এরশাদ) বাদ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না৷ নির্বাচনে গিয়েছি একটা প্রেক্ষাপটে৷ কিন্তু ভবিষ্যতে আর নির্বাচন করবো না, আর রাজনীতিও করবো না৷''
রওশন আরও বলেন, ‘‘এর আগে উনি (এরশাদ) যখন জেলে ছিলেন, তখনও অনেকে আমাকে পার্টির চেয়ারম্যান হতে বলেছে৷ কিন্তু আমি হইনি৷ তখন হইনি এখনও হবো না৷'' তিনি বলেন, ‘‘নানা বিপত্তি নিয়ে নির্বাচন হয়েছে৷ নির্বাচনটা জরুরি ছিলো৷ তাই নির্বাচনে গিয়েছি৷ এ ব্যাপারে পরে আলাপ-আলোচনা করবো৷''
এরপর সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাপা চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ বলেন, ‘‘রওশনের সঙ্গে আমার কোন দ্বন্দ্ব নেই৷ আমরা এক সাথে রাজনীতি করবো৷ ভবিষ্যতে একসঙ্গে পথ চলবো৷ রওশন এরশাদের উপস্থিতি আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে৷ তিনি (রওশন) বলেছেন, আমাদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই৷''
অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির মহাসচিব রহুল আমীন হাওলাদার ছাড়াও কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন৷ রওশন এবং এরশাদের বক্তৃতায় সময় নেতা-কর্মীরা হাত তালি দিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন৷ অনুষ্ঠান শেষে কেন্দ্রীয় নেতারাও বলেন, ‘‘স্যার আর ম্যাডাম আবার এক হয়েছেন ৷ জাতীয় পার্টিকে কেউ ভাঙতে পারবেনা৷''