এবার ক্যারি লামের পদত্যাগ দাবিতে হংকংয়ে বিক্ষোভ
১৭ জুন ২০১৯আগের দিন প্রায় ২০ লাখ লোকের বিক্ষোভের পর সোমবারও রাস্তায় নামে হংকংয়ের হাজার হাজার মানুষ৷ শুরুতে বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করলেও পুলিশের অনুরোধে রাস্তা ছেড়ে দেন তাঁরা৷
এরপর ক্যারি লামের কার্যালয়ের সামনে সরে গিয়ে তাঁর পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা৷ এ সময় পদত্যাগ দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা৷
এর মধ্যে বিকেলে হংকংয়ের তরুণ নেতা জোসুয়া ওংকে জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হলে নতুন মাত্রা পায় চলমান বিক্ষোভ৷ ২০১৪ সালে হংকংয়ে ব্যাপক বিক্ষোভের পর ওই ‘আন্দোলনের মুখ' ওংয়ের বিরুদ্ধে অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছিল৷
ওই অভিযোগে এক মাস আগে তাঁকে দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল৷ সাম্প্রতিক বিক্ষোভের কারণে সাজার মেয়াদ এক মাস বাকি থাকতেই সোমবার মুক্তি পেলেন তিনি৷ জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর সরাসরি নগর কার্যালয়ের সামনের বিক্ষোভে যোগ দেন ওং৷
বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে মিলে এই তরুণ নেতাও ক্যারি লামের পদত্যাগের দাবি জানান৷ ‘‘আমব্রেলা মুভমেন্টের পর বলেছিলাম, আমরা আবারও রাস্তায় ফিরব৷ শেষ পর্যন্ত পাঁচ বছর পর আমরা ঠিকই এসেছি,'' সেখানে বলেন তিনি৷
ওং আরো বলেন, ‘‘এটা সৌভাগ্যের যে, বেইজিং আর ক্যারি লাম একটি তরুণ প্রজন্মকে সাধারণ নাগরিক থেকে তাদের বিরোধী হিসাবে রূপান্তরিত করেছে৷ এর মূল্য বেইজিংকে পরিশোধ করতেই হবে৷''
২০১৪ সালে ‘আমব্রেলা মুভমেন্ট' নাম পাওয়া আন্দোলনে টানা এক সপ্তাহ হংকংয়ের রাস্তায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিলেন হাজার হাজার মানুষ৷ সে সময় সরাসরি ভোটে নেতা নির্বাচনের পথ বন্ধ করার জন্য হতে চলা আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছিলেন তারা৷
৯ জুন বন্দি প্রত্যর্পণ বিল প্রস্তাব করার পর থেকেই হংকংয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়৷ চীনের প্রস্তাব করা এ বিলটি নিয়ে গত বুধবার সকালে সংসদে বিতর্ক হওয়ার কথা ছিল৷ আইনটি পাস হলে চীন, তাইওয়ান ও ম্যাকাওয়ে আদালত আদেশের মাধ্যমে কোনো অভিযুক্তকে সেসব দেশে ফেরত পাঠাতে পারবে হংকং৷
বিক্ষোভে ও সংঘর্ষের মধ্যে শনিবার সংবাদ সম্মেলনে বিলটি পাসের উদ্যোগ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করার ঘোষণা দেন ক্যারি লাম৷ বিলটি পুরোপুরি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ চলছে৷
১৯৯৭ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে শহরের দায়িত্ব চীনের কাছে হস্তান্তরের পর প্রস্তাবিত প্রত্যর্পণ বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভটিই ছিল সবচেয়ে বড়৷
‘লামকে পদত্যাগ করতে দেবে না চীন'
এদিকে ক্যারি লাম পদত্যাগ করতে চাইলেও চীন তা ‘হতে দেবে না‘ বলে তাঁর ঘনিষ্ঠ একজনের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স৷
হংকং স্বায়ত্বশাসনে চললেও ক্যারি লামের বিরুদ্ধে চীনের ইচ্ছার বাস্তবায়ন করার অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে করে আসছে বিরোধীরা৷
বিক্ষোভের কারণে লাম সরে যাওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তার বরাতে জানায় রয়টার্স৷ ‘‘তবে এটা শেষ পর্যন্ত হচ্ছে না,'' রয়টার্সকে বলেন তিনি৷
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘‘তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারা মনোনীত৷ এ কারণে তাঁর পদত্যাগের জন্য উচ্চপর্যায়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্তের প্রয়োজন৷‘‘
এমবি/কেএম (এপি, রয়টার্স)