এক পা পিছিয়ে নিলেন এর্দোয়ান
২৬ অক্টোবর ২০২১অ্যামেরিকা, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস-সহ ১০ দেশের রাষ্ট্রদূতের বিরুদ্ধে 'পার্সোনা নন গ্রাটা' বা অবাঞ্ছিত দূতের নোটিস জারি করেছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ান। সোমবার নিজের সেই অবস্থান থেকে সামান্য সরে এসেছেন তিনি।
পার্সোনা নন গ্রাটা কথাটি তিনি সরিয়ে নিয়েছেন। কোনো দেশের রাষ্ট্রদূতকে পার্সোনা নন গ্রাটা ঘোষণা করার অর্থ, এরপর তাকে সে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার বিধান দেয়া হবে। সাধারণত এই নোটিস জারি হলে রাষ্ট্রদূত নিজেই দেশে ফিরে যান। এর্দোয়ানও বলেছিলেন, দশ দেশের রাষ্ট্রদূত তুরস্কে অবাঞ্ছিত। কূটনীতিকদের অনেকেই মনে করেছিলেন, এরপর ওই রাষ্ট্রদূতদের দেশে ফিরে যেতে বলা হবে। কিন্তু সোমবার এর্দোয়ান জানিয়েছেন, আপাতত ওই রাষ্ট্রদূতদের ফিরে যেতে হবে না। তাদের উপর জারি করা নোটিস ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
কেন অবস্থান বদল
প্রশ্ন উঠছে, কেন নিজের অবস্থান বদল করলেন এর্দোয়ান। এর্দোয়ান নিজে বলেছেন, ওই ১০ দেশের রাষ্ট্রদূত নিজেদের অবস্থান বদল করেছেন। সে কারণেই তিনি কিছুটা নরম হয়েছেন। তুরস্কের দাবি, ১০ দেশের রাষ্ট্রদূত একটি নতুন বিবৃতি জারি করেছেন। সেখানে তারা বলেছেন, তুরস্কের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তারা মন্তব্য করতে চান না। বস্তুত, আন্তর্জাতিক কূটনীতির নীতি অনুযায়ী কোনো রাষ্ট্রদূত সে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারেন না। ১০ দেশের রাষ্ট্রদূত তা স্বীকার করেছেন। এরপরেই বরফ কিছুটা গলেছে বলে তুরস্কের প্রশাসনের দাবি। ওই বিবৃতির পরেই এর্দোয়ান পার্সোনা নন গ্রাটা-র নোটিস তুলে নেন বলে জানানো হয়েছে।
কূটনৈতিক চাপ
১০টি শক্তিশালী পশ্চিমা দেশের বিরুদ্ধে পার্সোনা নন গ্রাটা জারি করেছিলেন এর্দোয়ান। কূটনীতিকদের বক্তব্য, ওই নোটিস জারি রাখলে ১০ দেশের রাষ্ট্রদূতকে দেশে ফিরতে হতো। যা তুরস্কের সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বের সম্পর্ক কার্যত তলানিতে নিয়ে যেত। এমনিতেই তুরস্কের সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বের সম্পর্ক ক্রমশ জটিল হচ্ছে। তার মধ্যে এর্দোয়ান এ কাজ করলে কার্যত সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হতো বলেই মনে করছেন কূটনীতিকরা। এর্দোয়ানও তা আঁচ করতে পেরেছিলেন বলেই সামান্য হলেও নরম হয়েছেন বলে কূটনীতিকদের মত। অন্যদিকে, ১০টি দেশও প্রকাশ্যে সংঘাতের রাস্তায় যেতে চায়নি। তাই নতুন বিবৃতি জারি করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিতর্কের কারণ
তুরস্কের জেলে দীর্ঘদিন ধরে বন্দি মানবাধিকার কর্মী ওসমান কাভালা। তার মুক্তির দাবিতে বিবৃতি জারি করেছিলেন ১০টি দেশের রাষ্ট্রদূত। তারপরেই বিতর্কের শুরু।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এএফপি)