1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জামিনে ছাড়া পাচ্ছেন ইয়াবা ব্যবসায়ীরা

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১০ নভেম্বর ২০২০

গত বছর কক্সবাজারে আত্মসমর্পণকারী ইয়াবা ব্যবসায়ীরা জামিনে বের হয়ে আসছেন৷ এরইমধ্যে ২৭ জন জামিনে ছাড়া পেয়েছেন ৷ তাদের মধ্যে সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদির চার ভাইও আছেন৷

https://p.dw.com/p/3l6CM
ছবি: picture-alliance/epa/Barbara Walton

স্থানীয়রা বলছেন, এতদিন গোপনে চললেও আবার ইয়াবা সিন্ডিকেট প্রকাশ্যে এলো৷

যারা জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন তারা সবাই মাদক ও অস্ত্র আইনের চার্জশিটভুক্ত আসামি৷ ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফে স্বারাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ১০২ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করেন৷ আত্মসমর্পণের সময় তারা তিন লাখ পিস ইয়াবা এবং ৩০টি আগ্নেয়াস্ত্র তুলে দেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে৷ এরপর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়৷ তাদের প্রত্যেককে অস্ত্র এবং মাদক আইনের দুইটি মামলায় আসামি করা হয় ৷ ২০ জানুয়ারি দুই মামলায় তাদের সবার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হয় আদালতে৷ ১০২ জনের মধ্যে একজন আটক অবস্থায় মারা গেছেন৷

গত ২৪ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট থেকে পাঁচজন জামিন পান৷ ৫ অক্টোবর কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে জামিন পান সাতজন৷ ওই একই আদালত থেকে ৩ নভেম্বর জামিন পান ১৫ জন৷ তাদের সবাইকে এরইমধ্যে মুক্তিও দেয়া হয়েছে৷ জামিনে মুক্ত সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদির চার ভাই হলেন: আব্দুল শুক্কুর, শফিকুল ইসলাম, ফয়সাল ইসলাম ও আব্দুল আমিন৷ সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদি দাবি করেন, ‘‘তারা ছাড়া পাওয়ার পর আমি তাদের শপথ করিয়েছি তারা আর ইয়াবা ব্যবসার সাথে যুক্ত হবে না৷ তারা ব্যবসা বাণিজ্য বা রাজনীতি করবে৷ শুধু আমার ভাইয়েরা কেন এই অঞ্চলের বাকি যারা আছে তারাও জামিনে বেরিয়ে আসবে৷’’

ছাড়া পাওয়ার পর আমি তাদের শপথ করিয়েছি: আব্দুর রহমান বদি

গত বছর সারাদেশে বিশেষ করে কক্সবাজারে মাদকবিরোধী অভিযান শুরুর পর এরা আত্মসমর্পণ করেন৷ ইয়াবা ব্যবসায় আলোচিত বদিই এই আত্মসমর্পণের আয়োজন করেন বলে কথা আছে৷ যদিও আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে তাকে রাখা হয়নি৷ সেসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও বদির স্ত্রী সংসদ সদস্য শাহীন আকতার উপস্থিত ছিলেন৷

টেকনাফ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশর দাবি করেন, ‘‘বাকি যারা কারাগারে আছেন তাদের জামিনের তদবিরও চলছে৷ আর বদি নিজে তার ভাইসহ অন্যদের জামিনের জন্য তৎপর ছিলেন৷ যারা কারাগারের বাইরে ছিলেন তারা সবাই আত্মসমর্পণকারীদের সিন্ডিকেটেরই সদস্য৷ ফলে কারাগারে বসেও তারা তাদের ইয়াবা সিন্ডিকেট পরিচালনা করেছেন৷ এখন তারা বাইরে আসায় ইয়াবা ব্যবসা আরো বেড়ে যাবে৷ অভিযানের সময় তাদের ক্রসফয়ার থেকে বাঁচাতেই বদি আত্মমসর্পণ করিয়ে তাদের কারাগারে পাঠান৷ এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় তাদের জামিনে বের করে আনছেন৷’’

তারা বাইরে আসায় ইয়াবা ব্যবসা আরো বেড়ে যাবে: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশর

অবশ্য বদি দাবি করেন, ‘‘তারা ভালো হওয়ার জন্যই তো আত্মসমর্পণ করেছে৷ ১৮ মাস বিনা বিচারে কারাগারে ছিল৷ আর কত? বিনা বিচারে কত দিন কারাগারে থাকবে? এখন যদি তারা বের হয়ে আবার ইয়াবা ব্যবসা করে তাদের ক্রসফায়ারে দেয়া হোক৷’’

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রথম তালিকায় ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে তার নিজের নাম জড়িত হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমি কক্সবাজারের চারবারের শ্রেষ্ঠ করদাতা৷ এই এলাকায় আমিই সবচেয়ে জনপ্রিয়৷ তাই আমার নামে অপপ্রচার করা হয়৷’’ তার দাবি কক্সবাজারে ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রোহিঙ্গারা

ইয়ারা ব্যবসায়ীরা জমিন পাওয়ায় কক্সবাজার জেলা পুলিশকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন৷ তারা যাতে নতুন করে ইয়াবা ব্যবসায় জড়াতে না পারে সেদিকে নজর রাখাতে বলা হয়েছে৷ তবে তিনি বলেন, ‘‘জামিন পাওয়া যে কারোর অধিকার৷ আর আদালত জামিন দিলে আমাদের তো কিছু করার নেই৷ তাদের তো কোনো শাস্তি হয়নি৷ মামলা যা আছে চলবে৷ তারা আবার মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়লে আবার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে৷’’

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য চেষ্টা করেও কক্সবাজারের পুলিশ সুপারকে পাওয়া যায়নি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য