একটু ব্যায়াম, একটু সুষম খাবার শীতের ডিপ্রেশন কাটাতে মোক্ষম
২৪ ডিসেম্বর ২০১০প্রবল শীতে মন খারাপ থাকার একটা কারণ হল মেলাটনিন নামের হর্মোন৷ যখন সব কিছু অন্ধকারে ঢেকে যায়, সেই সময় দেহে এই বিশেষ হর্মোনটির নিঃসরণ ঘটে৷ আমরা কতটা ঘুমাচ্ছি বা ঘুমাচ্ছি না সেক্ষেত্রে এই হর্মোন একটা ভূমিকা রাখে৷
জার্মানির জারব্র্যুকেন শহরে অবস্থিত জার্মান হাই স্কুল ফর প্রিভেনশন অ্যান্ড হেল্থ ম্যানেজমেন্ট'এর কোরিনা রুটেমান উপদেশ দিয়েছেন, নিজেকে ফিট আর সজাগ রাখতে দিনের আলোর সদ্ব্যবহার করা উচিৎ৷ লাঞ্চের বিরতির সময় খোলা হাওয়ায় একটু হেঁটে নেয়া যেতে পারে৷
শরীর চর্চা আর দিনের আলো আমাদের দেহে সেরোটনিন হর্মোনের নিঃসরণ ঘটায়৷ মন মেজাজ ভাল রাখার সহায়ক এই হর্মোনটি৷ রুটেমান বলছেন, ‘‘সবচেয়ে ভাল হয় যদি হাঁটতে বেরুনোর সময় সঙ্গী হিসেবে কাউকে পাওয়া যায়৷ এতে ইতিবাচক সামাজিক সংযোগ ঘটবে৷ আর সেই সংযোগ মনটাকে অনেক বেশি প্রফুল্ল রাখতে সাহায্য করবে৷''
সাধারণ কিছু খাবার দাবারও মন ভাল রাখার সহায়ক হতে পারে৷ বিজ্ঞানীরা বলে থাকেন যে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড আর এমিনো অ্যাসিড ট্রিপটোফ্যান আমাদের মন মেজাজের ওপর ইতিবাচক প্রভাব রেখে থাকে৷ রুটেমান বলছেন, ‘‘টাটকা মাছ, ফল, তরিতরকারি আর বাদামের মত সুষম খাবার খেলে বেশ ভাল ফল পাওয়া যাবে৷ তাছাড়া ভাবনাচিন্তাগুলো যেন নেতিবাচক না হয়৷ হলে তা দ্রুত মানুষকে ডিপ্রেশনের এক দুষ্ট বৃত্তে টেনে নিয়ে যেতে পারে৷''
নেতিবাচক ভাবনা তাড়ানোর দাওয়াই দিয়েছেন রুটেমান৷ ওরকম ভাবনা এলে মনে মনে প্রশ্ন করতে হবে, আদৌ ব্যাপারটা নেতিবাচক কিনা৷ অথবা অন্য আর কীভাবে দেখা যেতে পারে ব্যাপারটাকে? এতে কাজ হতে পারে৷ রুটেমান'এর পরামর্শ : ‘‘মরশুমের যে প্রাকৃতিক বৃত্ত সেটার বিরুদ্ধে লড়াই করার চেষ্টা করবেননা৷ মনে করুন শীতের মাসগুলো বিশ্রামের সময়৷ এটা মনে রেখেই সময়টা স্বাভাবিকভাবে উপভোগ করার চেষ্টা করুন৷''
শীতের ডিপ্রেশন অর্থাৎ বিষাদগ্রস্ততা, মন-মরা ভাব ছোট ছোট ছেলেমেয়ে এবং তরুণদের ওপরও ক্ষতিকর প্রভাব রাখতে পারে৷ তার প্রথম আভাস মেলে তিরিক্ষি মেজাজ আর স্কুলে খারাপ মার্কস'এর মাঝে৷ মনঃসংযোগ হারিয়ে ফেলা, উৎসাহ কমে যাওয়া এবং অনিয়মিত ঘুমও ডিপ্রেশনের লক্ষণ, জানিয়েছে জার্মান সোসাইটি ফর চাইল্ড অ্যান্ড ইয়ং অ্যাডাল্ট সাইকিয়াট্রি, সাইকোসোম্যাটিক্স অ্যান্ড সাইকোথেরাপি (ডিজিকেজেপি)৷ এই সংস্থা সুপারিশ করেছে যে, লক্ষণগুলো যদি খুব তীব্র না হয়, তাহলে সতেজ হাওয়ায় প্রচুর হাঁটাচলা করে ভাল ফল পাওয়া যেতে পারে৷ মেঘাচ্ছন্ন বৃষ্টিভেজা দিনও যে পরিমাণ আলো দেয় তা বৈদ্যুতিক বালব'এর চেয়েও বেশি৷
প্রতিবেদন: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ