1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

একই ছবির দুটি রূপ!

৫ মার্চ ২০২০

মিউজিয়াম বা গ্যালারিতে গিয়ে ছবির কদর করতে হলে ঠিক জায়গায় দাঁড়ানো জরুরি৷ স্পেনের এক শিল্পী এমন ছবি আঁকছেন, বিভিন্ন কোণ থেকে দেখলে যেগুলির রূপ বদলে যায়৷ তরুণী পরিণত হয়ে যায় বৃদ্ধায়৷

https://p.dw.com/p/3Yv7O
প্রতীকী ছবিছবি: AP

এক নারীর মুখচ্ছবিতে ব্যথার ছাপ ছড়িয়ে পড়ছে৷ হাসিখুসি একটি মেয়ের মুখে উগ্র মনোভাবের একটি ছেলের অভিব্যক্তি৷ স্যার্শি কাদেনাস-এর ছবির কদর করতে হলে পরিপ্রেক্ষিত বদলে ফেলতে হবে৷ স্পেনের এই চিত্রশিল্পী তাঁর শিল্পকর্মের মধ্যে দুই রকম অর্থ ফুটিয়ে তুলতে ভালোবাসেন৷ তিনি বলেন, ‘‘ছোটবেলায়ই লেন্টিকুলার বা মসূরাকার ছবি পছন্দ করতাম৷ তৈলচিত্রের ক্ষেত্রেও এই পদ্ধতি প্রয়োগ করার আইডিয়া মাথায় এলো৷ এভাবে দর্শকদের অবাক করে দেই৷''

কাটালুনিয়া প্রদেশে জিরোনা শহরের কাছেই ৪৭ বছর বয়সি এই শিল্পীর স্টুডিও৷ নিজেই তিনি আঁকার কাজ শিখেছেন৷ আপাতত তিনি একটি মেয়ের প্রতিকৃতি নিয়ে ব্যস্ত৷ পরিপ্রেক্ষিত বদলে গেলেই ছবিতে মেয়েটিকে বৃদ্ধার মতো দেখায়৷

বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরাই সাধারণত তাঁর মডেল হন৷ সবার আগে তিনি তাঁদের ছবি তোলেন৷  প্রত্যেক ছবির জন্য স্যার্শি কাদেনাসের এক মাস সময় লাগে৷ কিন্তু কীভাবে এমন বিভ্রম সৃষ্টি হয়? কাদেনাস আসলে বিশেষ ধরনের রং ব্যবহার করে দ্ব্যর্থ ছবির রিলিফ সৃষ্টি করেন৷

কেকে ক্রিম দেবার সিরিঞ্জ তাঁর গোপন হাতিয়ার৷ এর কারণ ব্যাখ্যা করে কাদেনাস বলেন, ‘‘আমার প্রতিবেশী ছিলেন কেক প্রস্তুতকারক৷ এটা তাঁর কাছ থেকে পেয়েছি৷ তাঁকে কাজ করতে দেখে সেটি ব্যবহারের আইডিয়া মাথায় আসে৷’’

দিক বদলালে রূপও বদলায়

মিশ্রণটি দুই দিন শোকাতে হবে৷ তারপর ছেনি দিয়ে সবকিছু নিখুঁত করে তুলতে হয়৷ তারপর ছোটখাট ত্রুটি দূর করার পালা৷ সবশেষে ছবিদুটি আঁকতে আমার দু'টি নিখুঁত সারফেসের প্রয়োজন হয়৷ প্রত্যেক দিকে একটি করে ছবি থাকে৷

প্রথমে তিনি একটি স্কেচ করে নেন৷ স্যার্শি কাদেনাস এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে বলেন, ‘‘রং দিয়ে আঁকার সময় তরুণ থেকে বৃদ্ধ হবার রূপান্তর চোখে পড়ে৷ স্কেচ করার সময় খেয়াল রাখতে হয়, যাতে দু'টি মোটিফের রেখা মোটামুটি একই জায়গায় থাকে৷ শেষে বৃদ্ধার ত্বকের ভাঁজগুলি আঁকতে হয়, তরুণীর ক্ষেত্রে যা থাকে না৷ ব্যস আর কিছু নয়৷ দু'জনেরই গালের অংশটি হুবহু এক থাকে৷’’

তারপর তিনি তেল রং দেন৷ সবসময়ে ৪৫ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেল বা কোণ বজায় রাখতে হয়৷ গোটা প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করে স্যার্শি বলেন, ‘‘এখান থেকে আমি শুধু একটি ছবি দেখতে পাই৷ ফ্ল্যাট সারফেসে আঁকার রীতি অনুযায়ীই আঁকতে হয়৷ রেখাগুলি যাতে একটানা না হয়, সেই কায়দা শিখতে হয়৷ ক্যানভাসের মধ্যেই প্রবেশ ও বেরোনোর পথ থাকতে হবে৷ প্রথমে একটি ছবি শেষ করি৷ তারপর অন্যদিক থেকে পরের ছবিটি আঁকি৷’’

জিরোনা শহরের চলচ্চিত্র মিউজিয়াম থেকেও স্যার্শি কাদেনাস প্রেরণা পান৷ সেখানে তিনি ঊনবিংশ শতাব্দীর শিল্পকর্মে বিভ্রমগুলি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসেন৷ তাঁর মতে, অতীতে এ সব মানুষকে প্রেরণা জুগিয়েছে, বিস্ময় সৃষ্টি করেছে৷ সেই বিস্ময় ও জাদু তাঁর সবচেয়ে ভালো লাগে৷

গোটা বিশ্বে মূলত ব্যক্তিগত সংগ্রহেই তাঁর ছবি শোভা পাচ্ছে৷ এরই মধ্যে কিছু মিউজিয়ামও তাঁর কাছ থেকে ছবি কিনেছে৷ ম্যারিলিন মনরো একই ছবিতে আলব্যার্ট আইনস্টাইনে রূপান্তরিত হচ্ছেন৷ স্যার্শি কাদেনাস ভবিষ্যতেও চিত্রশিল্পের মধ্যে এমন বিভ্রম সৃষ্টি করতে চান৷ থ্রিডি চশমায় দেখা যায়, এমন তৈলচিত্র আঁকার আইডিয়া তাঁর মাথায় এসেছে৷

ক্রিস্টিনা লাউবে/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান