1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘জালিয়াতির ভোট'

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২ এপ্রিল ২০১৪

উপজেলা নির্বাচনের পঞ্চম ধাপে শতকরা ৫৩ ভাগ ভোট জালিয়াতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের৷ তাদের দাবি, কেন্দ্র দখল, ব্যালট পেপারে সিল, জাল ভোট আর সহিংসতা মিলিয়ে এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতার মাপকাঠিতে উত্তীর্ণ হয়নি৷

https://p.dw.com/p/1Ba9D
Bangladesch Stimmenauszählung 05.01.2014
ছবি: Munir Uz Zaman/AFP/Getty Images

বুধবার ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ – ইডাব্লিউজি সংবাদ সম্মেলনে জানায় যে, পঞ্চম পর্যায়ের উপজেলা নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির হার ৫৩ শতাংশ৷ তাদের সূত্র অনুযায়ী, ৫০ শতাংশ ভোটকেন্দ্রে সহিংসতা হয়েছে, ৭৬ শতাংশ ভোটারকে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে, ২০ শতাংশ ভোটারকে ভোট দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে, ৫৯ শতাংশ পোলিং এজেন্টকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে এবং ৩৮ শতাংশ পর্যবেক্ষককে গণনা পর্যবেক্ষণ করতে দেওয়া হয়নি৷

ইডাব্লিউজি-র পরিচালক মো. আবদুল আলীম জানান, ‘‘নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ভোটদানের গড় হার ৬১ দশমিক ৬৫ শতাংশ বলা হলেও, পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে আমরা মনে করি যে, জাল ভোট ও অনিয়মের কারণে এই পরিসংখ্যানে ভোট দানের প্রকৃত হারের প্রতিফলন ঘটেনি৷''

তাদের সংগঠনের নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে অনিয়মের কিছু উদাহরণ দেয়া হয়৷ যেমন, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় তিনটি ভোটকেন্দ্রে ব্যালট বাক্সের মধ্যে আগে থেকে বিপুল সংখ্যক ব্যালট পেপার ভরা ছিল৷ ঐ বাক্সগুলো ভোট গ্রহণে ব্যবহার করা হয়েছে৷ লক্ষ্মীপুর সদর, সাতক্ষীরা সদর ও টাঙ্গাইল উপজেলায় বেশ কিছু ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের কক্ষের ভেতরে নিয়ে গিয়ে আঙুলে কালি লাগানো হয়৷ এরপর তাঁদের ভোট দিতে বাধা দিয়ে চলে যেতে বলা হয়৷ এর কারণ জানতে চাইলে ভোটারদের বলা হয় যে, তাঁদের ভোট দেওয়া হয়ে গেছে৷

অন্যদিকে বেলকুচি উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনেই এক প্রার্থীর সমর্থকেরা কেন্দ্রে ঢুকে নিজেরাই সিল মেরে বাক্সে ঢুকিয়ে দেন৷ বেলকুচির একটি কক্ষে একজন প্রার্থীর ১৩ জন সমর্থক ব্যালট ছিনিয়ে নেয়৷ এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি৷ গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা ভোট গণনার সময় একজন প্রার্থীর লোকজন প্রবেশ করে গণনা বন্ধ করে অসত্য তথ্য দিয়ে চূড়ান্ত ফল দিতে চাপ দেয়৷ তাদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ৮ভাগ ভোট কেন্দ্রে গণনা প্রক্রিয়া নিয়ে আপত্তি করতে দেখা যায়৷ এছাড়া ১২ ভাগ কেন্দ্রে ফল টাঙ্গিয়ে দেননি প্রিসাইডিং অফিসার৷

ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রপের সদস্য ও জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ ডয়চে ভেলেকে বলেন, প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনে মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ছিল৷ কিন্তু দ্বিতীয় দফা থেকে পরিস্থিতির অবনতি ঘটে৷ তৃতীয় দফায় সহিংসতার মাত্রা বেড়ে যায়৷ চতুর্থ দফায় নতুন নতুন কৌশল করে জাল ভোট দেওয়া হয় ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে৷ আর সর্বশেষ পঞ্চম দফায় সহিংসতা কম হলেও জাল ভোট দেওয়ার জন্য অভিনব প্রয়োগ করতে দেখা গেছে৷

তিনি ভোট জালিয়াতির হার ৫৩ শতাংশের ব্যখ্যা দেন৷ তিনি জানান, ‘‘পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়ায় নানা ধরণের অনিয়ম এবং সহিংসতাকে বিবেচনা করে এই গড় হার তৈরি করা হয়েছে৷ তার মানে হলো, নির্বাচনে মোট অনিয়মের গড় হার শতকার ৫৩ ভাগ৷ তাই এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতার গড় মানের অনেক নীচে৷''

নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ ডয়চে ভেলের আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘সব মিলিয়ে পুরো নির্বাচন বাতিলযোগ্য কিনা তা শেষ ধাপের নির্বাচনের পরেই বোঝা যাবে৷ তারা এ নিয়ে কাজ করছেন৷ তাদের পর্যবেক্ষকরা তথ্য-উপাত্ত গভীরভাবে বিশ্লেষণ করছেন৷''

এদিকে পঞ্চম ধাপের নির্বাচন শেষে নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন শান্তিপূর্ণ এবং গ্রহণযোগ্য হয়েছে৷ তাছাড়া নির্বাচনে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা তো ঘটতেই পারে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য