উপকূলে গৃহহীনদের জন্য বানানো ঘর যেন আরেক বিপদ
২৮ মে ২০১২ঐসব ঘরে বসবাসকারীরা প্রতিনিয়ত এখন বন্যা আর জলোচ্ছ্বাসের শিকার৷ বিশ্লেষকরা বলছেন এই ঘর নির্মাণে কোন সুষ্ঠু পরিকল্পনা ছিলনা৷ আর ভুক্তভোগীরা বলছেন, সরকারের টাকা জলে ঢালা হয়েছে৷
উপকূলীয় বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার বদনী খালির চর৷ প্রমত্তা বিষখালী নদীর তীরের এই চরেই সিডর এবং আইলার পর গৃহহীনদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়৷ কিন্তু সব হারিয়ে যারা এইসব ঘরে আশ্রয় পেয়েছেন তারা এখন নতুন করে বিপদে পড়েছেন৷ সিডর আইলা তাদের একবার ভাসিয়েছে৷ আর এখন প্রতিদিন ভাসছেন বিষখালী নদীর জলে৷ সারাক্ষণ তারা থাকেন ভয় আর আতঙ্কের মধ্যে৷
স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মী খলিলুর রহমান এবং ইউপি সদস্য আব্দুস সোবহান শিকদার জানান, ৬০টি পরিবারকে এই চরে ঘর দেয়া হয়েছিল৷ কিন্তু অনেকেই টিকতে না পেরে চলে গেছেন নিরাপদ কোনো আশ্রয়ে৷
দক্ষিণের ১১ জেলায় এরকম প্রায় ২৭ হাজার ঘর বানানো হয়৷ এরমধ্যে জাপান সরকারের সহায়তায় ৭২৪টি ব্যারাক, সৌদি সরকারের সহায়তায় ১৬,৫০০টি ঘর এবং ভারতের অর্থ সহায়তায় ২,৮০০টি ঘর বানানো হয়েছে৷ আর জলবায়ু ট্রাস্টের ফান্ডে ৮,১০০ ঘরের নির্মাণ কাজ এখন চলছে৷ এর কোনোটি আধাপাকা আবার কোনোটি টিনের তৈরি৷
নদী তীরেই বানানো হয়েছে এসব ঘর৷ ফলে বিপদ পিছু ছাড়েনি৷ কিন্তু ঢাকায় ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. জহিরুল হক ডয়চে ভেলেকে জানান, নদীর তীরেই সরকারের অধিকাংশ খাস জমি৷ তাই তারা সেখানেই ঘর তৈরি করেছেন৷
তবে একথা মানতে নারাজ বাংলাদেশ সেন্টার ফর এ্যাডভান্স স্টাডিজ-এর নির্বাহী পরিচালক ড. আতিক রহমান৷ তিনি জানান কোন সমন্বিত পরিকল্পনা ছাড়াই এসব ঘর বানানো হয়েছে৷ এক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্তদের মতামত নেয়া হয়নি৷ ফলে এসব ঘর তেমন কাজে আসছে না৷
বাংলাদেশে উপকূলীয় এলাকায় সিডর বা আইলার মত প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর সহায়তা আসে৷ আসে বিদেশি অর্থ৷ আর তা খরচ হয় দুর্গতদের নামে৷ কিন্তু তাদের বিপদ কাটেনা৷
প্রতিবেদন: হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা
সম্পাদনা: জাহিদুল হক