1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘উন্নয়নশীল দেশে করোনার পরীক্ষা হচ্ছে না’

১৭ মার্চ ২০২০

ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তানের মতো দেশে পরীক্ষাই হচ্ছে না করোনার। সতর্ক করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। অ্যামেরিকায় প্রথম ভ্যাক্সিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ।

https://p.dw.com/p/3ZYLY
ছবি: picture-alliance/I. Safwat

পরীক্ষা করতেই হবে। সর্দি-কাশির সামান্য লক্ষ্যণ দেখলেই যেতে হবে চিকিৎসকের কাছে। করোনা ভাইরাস নিয়ে নতুন সতর্ক বার্তা জারি করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তাদের বার্তার সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লাইন-- 'টেস্ট, টেস্ট টেস্ট'। এরই মধ্যে ভারতে করোনায় মৃত্যু হল আরও একজনের।

ইউরোপ, অ্যামেরিকার মতো পশ্চিম বিশ্বে কার্যত মহামারির চেহারা নিয়েছে করোনা ভাইরাস। তার আগে চীনে মৃত্যু হয়েছে হাজার হাজার মানুষের। গোটা বিশ্ব কার্যত অবরুদ্ধ। ইটালি, জার্মানি, ফ্রান্স, অ্যামেরিকায় প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। কিন্তু সেই তুলনায় ভারতীয় উপমহাদেশ কিংবা আফ্রিকায় আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই কম। এর কারণ কি এ সমস্ত জায়গায় করোনার প্রকোপ কম, না কি সাধারণ মানুষ করোনার লক্ষণ থাকা সত্ত্বেও হাসপাতালে যাচ্ছেন না? এটাই এখন সব চেয়ে বড় প্রশ্ন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কবার্তাতেও সে প্রশ্নেরই ইঙ্গিত রয়েছে। তথ্য বলছে, অপেক্ষাকৃত গরিব দেশগুলিতে সাধারণ মানুষ শরীর খারাপ হলেও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাচ্ছেন না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী, দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রতি ১০ লক্ষে চার হাজার ৮০০ জন মানুষ করোনার পরীক্ষা করাচ্ছেন। সেখানে ভারতে প্রতি ১০ লক্ষে করোনা পরীক্ষা করাতে যাচ্ছেন মাত্র তিন জন। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, অপেক্ষাকৃত গরিব দেশগুলিতে করোনার সংক্রমণ কতটা ঘটছে, এখনও তা স্পষ্ট করে বোঝাই যাচ্ছে না। প্রথম পর্বে চিকিৎসা হলে করোনার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। কিন্তু তা চেপে রাখলে মৃত্যুর আশঙ্কা বাড়ে। ফলে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে মৃত্যুর হার হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। পাশাপাশি আরও একটি প্রশ্ন উঠছে। এ সমস্ত দেশে করোনা পরীক্ষা করার যথেষ্ট বন্দোবস্ত আছে তো?

ভারতে এখনও পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১২৮। মঙ্গলবার মুম্বইয়ে মৃত্যু হয়েছে আরও একজনের। সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল তিন।যদিও সোমবার থেকেই আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। পাকিস্তানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা একদিনে অনেকটা বেড়ে আপাতত ১৮৪। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী দুই সপ্তাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে করোনার সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুল, কলেজ। জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। কোথাও কোথাও বন্ধ সিনেমা হলও। কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে একটাই, অসুখধরা পড়ছে তো?

ইউরোপের অবস্থা গত এক দিনে আরও আশঙ্কাজনক হয়েছে। ইটালিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। মোট আক্রান্ত প্রায় ২৮ হাজার। মাত্র চার দিন আগেই সংখ্যাটা ছিল ১৫ হাজার। ফ্রান্সের অবস্থাও ভয়াবহ। সে দেশে এখনও পর্যন্ত ১৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত ছয় হাজার ৬০০ জন। দেশ জুড়ে সতর্কবার্তা আগেই ঘোষণা করেছিল ফরাসি সরকার। মঙ্গলবার থেকে রাস্তায় নামানো হচ্ছে এক লক্ষ পুলিশ। যাদের দায়িত্ব হবে মানুষের গতিবিধির উপর নজর রাখা। অপ্রয়োজনে কেউ রাস্তায় বেরলেই ১৩৫ ইউরো জরিমানা করা হবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এরই মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প দেশে একসঙ্গে ১০ জনের বেশি ব্যক্তির জমায়েতের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। রেস্তোরাঁ, ফুড কোর্ট, বার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। হোয়াইট হাউস করোনা ভাইরাস নিয়ে নতুন অ্যাডভাইসারি জারি করেছে।

জার্মানিতেও ভাইরাসের সংক্রমণ ক্রমশ বাড়ছে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছয় হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। পোল্যান্ডেও ছড়াচ্ছে ভাইরাস। সোমবার সে দেশের পরিবেশমন্ত্রীর শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ মিলেছে। পোল্যান্ডে এখনও পর্যন্ত ১৫৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এরই মধ্যে রাশিয়া মে মাস পর্যন্ত সমস্ত ভিসা বাতিল করেছে। অর্থাৎ, মে পর্যন্ত সে দেশে বিদেশ থেকে কোনও নাগরিক যেতে পারবেন না।

এ দিকে সোমবার অ্যামেরিকার একটি সংস্থা দাবি করেছে, করোনার ভ্যাকসিনের প্রথম পরীক্ষা তারা করেছে সিয়াটেলে। ৪৩ বছরের এক মহিলার শরীরে পরীক্ষামূলক ভাবে ভ্যাক্সিন দেওয়া হয়েছে। যদিও তার ফলাফল বোঝার জন্য এখনও বহুমাস অপেক্ষা করতে হবে।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)