উদ্বাস্তু নীতির কেঁচে গণ্ডূষ
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫সিদ্ধান্তটা হঠাৎই এলো৷ জার্মানি ‘‘সাময়িকভাবে'' অস্ট্রিয়া সীমান্তে আবার নিয়ন্ত্রণ চালু করছে, বলে জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টোমাস ডেমেজিয়ের, রবিবার দুপুরে সাততাড়াতাড়ি ডাকা একটি সংবাদ সম্মেলনে৷ জার্মানি উদ্বাস্তুদের সাহায্য করতে প্রস্তুত, কিন্তু সেই আতিথেয়তার উপর মাত্রাধিক চাপ দিলে চলবে না৷
সোজা কথায় বলতে গেলে, ডেমেজিয়ের স্বীকার করলেন যে, সিরীয় উদ্বাস্তুদের বিনা বাধায় জার্মানিতে প্রবেশ করতে এবং রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করতে দেওয়ার যে নীতি গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চালু ছিল – তা ব্যর্থ হয়েছে৷ আগস্ট মাসের শেষাশেষি যাবৎ ৬০ হাজারের বেশি উদ্বাস্তু মিউনিখে পৌঁছেছেন – যা কিনা মিউনিখ অথবা জার্মানি, কারো পক্ষেই সামাল দেওয়া সম্ভব নয়৷ সারা দেশ জুড়ে উদ্বাস্তুদের জন্য উপযুক্ত আবাসনের অভাব৷ উদ্বাস্তুরা গতকাল মিউনিখ রেলওয়ে স্টেশনে মাটিতে রাত কাটিয়েছেন৷
সাময়িকভাবে সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ আবার চালু করার সিদ্ধান্তের অর্থ, সর্বাধিক কী পরিমাণ রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী জার্মানিতে আসতে পারেন, সংবিধানে তার কোনো উল্লেখ না থাকলেও, বাস্তবে সেই সীমা মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই অতিক্রান্ত হয়েছে৷
জার্মান সরকারের এই সিদ্ধান্তের স্বল্পমেয়াদি ফলশ্রুতি নাটকীয়: অস্ট্রিয়া আর হাঙ্গেরির সঙ্গে রেল চলাচল আপাতত বন্ধ৷ জার্মান-অস্ট্রিয়ান সীমান্তে শত শত পুলিশ পাঠানো হয়েছে৷ চেক প্রজাতন্ত্র আর পোল্যান্ডের সীমান্তেও তল্লাসি ব্যবস্থা আবার চালু করার কথা ভাবা হচ্ছে, বলে প্রকাশ৷ অর্থাৎ উদ্বাস্তুরা ঘুরপথেও জার্মানিতে পৌঁছাতে পারবেন না৷
বহির্বিশ্বের প্রতিক্রিয়া
গোড়ায় জার্মানির ‘‘স্বাগতিক মনোভাবের'' ছবি দেখার পর এখন সীমান্তে পুলিশের ২১টি কোম্পানি সক্রিয় হবার ছবি দেখছে আরব বিশ্ব৷ জার্মানি যে তার শরণার্থী গ্রহণের সীমায় পৌঁছেছে, এ কথা আরব দুনিয়ার মানুষ মেনে নিতে রাজি হবেন কিনা, বলা শক্ত৷
সিরিয়া থেকে আগত উদ্বাস্তুদের অবাধ জার্মানিতে প্রবেশ করতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে জার্মানি পূর্ব ইউরোপের দেশগুলির বিরাগভাজন হয়েছে৷ তাদের যুক্তি ছিল, শেঙেন চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে সর্বাগ্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বহির্সীমান্তগুলি নিশ্চিত করা দরকার৷ সে অনুযায়ী জার্মানিতে অবাধ অনুপ্রবেশ চলতে পারে না৷