উত্তরসূরি বাছাইয়ে থাকতে চান না ম্যার্কেল
১৪ এপ্রিল ২০২১ডুবন্ত জাহাজ যত দ্রুত সম্ভব মেরামতি করে আবার সমুদ্রের উপর ভাসিয়ে তোলাই সবচেয়ে জরুরি কাজ৷ তারপর গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করতে হয়৷ জার্মানির সরকারি জোটের প্রধান শরিক সিডিইউ ও সিএসইউ দলের ইউনিয়ন এই মুহূর্তে এমন অস্তিত্বের সংকট কাটাতে ব্যস্ত৷ আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে কোন নেতাকে সামনে রেখে দীর্ঘ ১৬ বছর পরেও ক্ষমতা আঁকড়ে রাখা যায়, সেই প্রশ্নের দ্রুত নিষ্পত্তি চাইছে ইউনিয়ন শিবির৷ অথচ চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী বাছাইয়ের কোনো নির্দিষ্ট আনুষ্ঠানিক কাঠামো বা প্রক্রিয়া নেই৷ অতীতে একাধিক প্রার্থী এগিয়ে এলে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে একজনকে বেছে নেওয়া হয়েছে৷ দুই প্রার্থীর মধ্যে একজন স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ালে সেই বিড়ম্বনা কাটতে পারে৷ কিন্তু এখনও কেউ হাল ছাড়তে প্রস্তুত নন৷
আরমিন লাশেট ও মার্কুস স্যোডার ইউনিয়ন শিবিরের বিভিন্ন স্তরে নিজেদের জনপ্রিয়তা যাচাই করতে ব্যস্ত৷ দুই জনই যে যার দলের শীর্ষ নেতা এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী৷ সংখ্যার বিচারে লাশেট জাতীয় স্তরে শক্তিশালী হলেও জনপ্রিয়তার বিচারে তিনি অনেক পিছিয়ে রয়েছেন৷ তাঁর নেতৃত্বে ভোটারদের সামনে গেলে গোটা শিবিরকে বিরোধী আসনে বসতে হবে বলে খোলাখুলি আশঙ্কা প্রকাশ করছেন দুই দলের অনেক নেতা৷ অন্যদিকে শুধু বাভেরিয়া রাজ্যের নেতা হলেও জনমত সমীক্ষায় স্যোডার চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী হিসেবে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য৷ বিশেষ করে করোনা সংকটের সময়ে তাঁর ‘বলিষ্ঠ' ভূমিকা ভোটারদের মন কাড়ছে৷
মঙ্গলবার সংসদীয় দলের প্রায় ২৫০ জন সদস্য চার ঘণ্টা ধরে দুই সম্ভাব্য প্রার্থীর সঙ্গে মত বিনিময় করেন৷ দুই প্রার্থীই সমর্থন আদায় করার চেষ্টা করেন৷ তারা সবাই ঐক্য এবং দ্রুত বিষয়টির নিষ্পত্তির পক্ষে সওয়াল করেছেন৷ আঙ্গেলা ম্যার্কেলের প্রস্থানের পরেও ক্ষমতার শীর্ষে থাকা জরুরি বলে তারা মনে করছেন৷ বিষয়টি নিয়ে আরও জলঘোলা হলে শেষ পর্যন্ত সবুজ দলই ক্ষমতার শীর্ষ স্থান ছিনিয়ে নেবে বলে শিবিরের অনেক সংসদ সদস্য আশঙ্কা করছেন৷ জনমত সমীক্ষায় সবুজ দল সিডিইউ-সিএসইউ দলকে পেছনে ফেলে এগিয়ে চলেছে৷
সম্ভাব্য উত্তরসূরি বাছাই পর্ব থেকে দূরত্ব বজায় রাখছেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ তিনি যে এই নাটকে হস্তক্ষেপ করতে চান না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন৷ এমনকি দুই দল তার শূন্যস্থান পূরণ করতে ব্যর্থ হতে পারে, এমন আশঙ্কা সত্ত্বেও তিনি নিজস্ব অবস্থানে অনড় রয়েছেন৷
চলতি সপ্তাহেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আশা করছে দুই দল৷ দুই প্রার্থীও সেটাই চাইছেন৷ দুজনেই শিবিরের ঐক্যের উপর জোর দিচ্ছেন৷ তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পর বিরোধ ভুলে দুই প্রার্থীর সমর্থকরা কতটা ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে জয়ের লক্ষ্যে কাজ করবেন, সে বিষয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে৷ বিশেষ করে স্যোডার কাণ্ডারী হলে ‘ওয়ান ম্যান শো' সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন লাশেট৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)