ইরানে গোপন পরমাণু কার্যকলাপ রয়েছে: আইএইএ
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১০আইএইএ'র প্রধান ইউকিয়া আমানো সংস্থার পরিচালকমণ্ডলীর কাছে তাঁর প্রথম রিপোর্টে লিখেছেন, যে ইরানে অতীতে অথবা বর্তমানে পরমাণু কর্মসূচির ক্ষেত্রে গোপন কার্যকলাপ সংক্রান্ত কিছু তথ্য পাওয়া গেছে৷ আগামী মাসে পরিচালকমণ্ডলী এই রিপোর্টের বিষয়ে আলোচনা করবে৷ দীর্ঘ সময় ধরে সংগৃহীত এই তথ্য অত্যন্ত বিস্তারিত ও বিশ্বাসযোগ্য বলে ১০ পাতার ঐ রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে৷ খুঁটিনাটি প্রযুক্তিগত বিষয়, কার্যকলাপের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা, যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এই গোপন কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত – তাদের বিষয়েও তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে৷ ইরান তার স্বঘোষিত নীতি অনুযায়ী ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরনের মাত্রা যে সত্যি বাড়িয়ে দিয়েছে, রিপোর্টে তার সত্যতা স্বীকার করা হয়েছে৷ তবে ইরান আইএইএ-কে আনুষ্ঠানিকভাবে এই নীতির কথা জানালেও আন্তর্জাতিক পরিদর্শকরা পৌঁছানোর আগেই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছিল৷ ইরানের কাছে যে প্রায় ২,০৬৫ কিলোগ্রাম লঘু মাত্রার সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে বলে ধারণা করা হয়, তার মধ্যে প্রায় ১,৯৫০ কিলোগ্রাম ইতিমধ্যেই সরিয়ে নিয়ে গিয়ে উচ্চ মাত্রায় রূপান্তরের কাজ শুরু হয়ে গেছে৷ রিপোর্টে আমানো অভিযোগ করেছেন, যে আইএইএ'র লাগাতার অনুরোধ সত্ত্বেও ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির অভিযোগ সম্পর্কে কোন আলোচনা করতে চাইছে না৷ উল্লেখ্য, ইউরেনিয়াম রূপান্তর, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরকের পরীক্ষা এবং ক্ষেপণাস্ত্রগুলিকে পরমাণু অস্ত্র বহনের উপযোগী করে তোলার মত গোপন কর্মসূচি সংক্রান্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখছে আইএইএ৷
আইএইএ'তে ইরানের দূত আলী আসগর সোলতানিয়ে আমানোর দুশ্চিন্তার কারণগুলি উড়িয়ে দিয়েছেন৷ তিনি আরও একবার জোর দিয়ে বলেছেন, যে ইরানের পরমাণু কর্মসূচির উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ এবং তা কোন সামরিক কর্মসূচির অংশ নয়৷ এমনকি তিনি আরও এক ধাপ এগিয়ে আমানোর রিপোর্টের ইতিবাচক মূল্যায়ন করে বলেন, যে গত ৬ বছরে আইএইএ'র সব রিপোর্টে যা পাওয়া গিয়েছিল, বর্তমান রিপোর্টেও তার সপক্ষে যুক্তি দেখানো রয়েছে৷
মার্কিন প্রশাসন আইএইএ'র নতুন রিপোর্টের আলোকে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সম্পর্কে আবার সংশয় প্রকাশ করেছে৷ তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেছেন, রিপোর্টে উল্লিখিত তথ্য সত্য হলে ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে আরও বহু বছর অপেক্ষা করতে হবে৷ তাছাড়া এই কর্মসূচির মধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত সমস্যার ইঙ্গিতও পাওয়া যাচ্ছে৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন, সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম