‘ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না যুক্তরাষ্ট্র'
১৫ মে ২০১৯ইরানের সাথে এখনই কোনো যুদ্ধের ইচ্ছা নেই যুক্তরাষ্ট্রের৷ রাশিয়া সফরে গিয়ে এভাবেই আশ্বস্ত করলেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও৷ ‘‘আমরা মূলত ইরানের সাথে কোনো যুদ্ধ চাচ্ছি না,'' রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সাথে রুদ্ধদার বৈঠক শেষে বলেন তিনি৷ ‘‘কিন্তু আমরা ইরানকে এটিও পরিস্কারভাবে জানিয়েছি যে, আমাদের স্বার্থে কোনো আঘাত হানা হলে আমরা অবশ্যই যথাযথ উপায়ে তার জবাব দেবো,'' এমনটাও উল্লেখ করেছেন পম্পেও৷
ওয়াশিংটন পারস্য উপসাগরে বিমানবাহী রণতরী ও বি-৫২ বোমারু বিমান মোতায়েন করেছে৷ইরানের সম্ভাব্য হামলা প্রতিহত করতেই ওয়াশিংটন এই পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানিয়েছে তারা৷ গত বছর পরামাণু চুক্তি থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরে আসার ঘোষণার পর ওয়াশিংটন তেহরানের উপর নতুন করে অবরোধও আরোপ করেছে৷ অন্যদিকে পাল্টা হুমকি দিয়ে রেখেছে ইরানও৷ এ অবস্থায় পারস্য উপসাগরে নতুন যুদ্ধের শঙ্কা তৈরি হয়েছে৷
সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সম্পর্কে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন মার্কিন প্রশাসনের ইরান সংক্রান্ত দূত ব্রায়ান হুক৷ ইরানের হুমকি প্রদর্শনের কারণেই যুক্তরাষ্ট্র তার প্রতিরক্ষমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে দাবি করেন তিনি৷ বলেন, ‘‘সমস্যা হলো, ইরানের শান্তিপূর্ণ অবস্থান ছাড়া শান্তিপূর্ণ মধ্যপ্রাচ্যের চিন্তা করা অসম্ভব৷ আর তাই ইরানকে আমরা স্বাভাবিক আচরণ করতে বলছি৷''
রাশিয়ার সাথে সম্পর্কের উন্নয়ন
নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করতে চায় রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র৷ পম্পেও বলেন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের পারস্পরিক স্বার্থের সত্যিকারের কিছু বিষয় রয়েছে, যার মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে চায়৷ এ নিয়ে নিজের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন পুটিনও৷ ‘‘আমাদের দিক থেকে আমরা বারবার বলেছি যে, পরিপূর্ণ সম্পর্ক পুনরায় চালু করতে চাই আমরা৷ আশা করছি এজন্য প্রয়োজনীয় শর্তগুলো তৈরি করা হবে,'' বলেন তিনি৷ তবে পম্পেওর সফরে দুই দেশের মতপার্থক্যগুলোও উঠে এসেছে৷ সংবাদ সম্মেলনে লাভরভ সেদিকে ইঙ্গিত করে বলেন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যে অবিশ্বাস রয়েছে, তা দুই দেশের নিরাপত্তার জন্যই অন্তরায়৷
পম্পেওর সাথে বৈঠকের শুরুতে পুটিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের বিষয়ে দেয়া মুলারের প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ টেনে আনেন৷ বলেন, এটি প্রমাণ হয়েছে, যে অভিযোগ আনা হয়েছিল তা সম্পূর্ণ মিথ্যা৷ তিনি আশা করেন দুই দেশের সম্পর্কের যে টানাপোড়েন রয়েছে, সেই পরিস্থিতি আগামীতে বদলে যাবে৷
আলোচনায় ভেনেজুয়েলা ইস্যুও প্রাধান্য পেয়েছে৷ মাদুরোকে সহযোগিতা না দেয়ার জন্য রাশিয়ার প্রতি আহবান জানান পম্পেও৷ মাদুরো ভেনেজুয়েলার জনগণের জন্য দুর্দশা তৈরি করছে উল্লেখ করে তিনি দাবি করেন, দেশটিতে যাতে গণতন্ত্র ফিরে আসে, যুক্তরাষ্ট্র সেই চেষ্টা করছে৷ ‘‘আমরা আশা করছি মাদুরোকে রাশিয়ার দেয়া সহায়তার অবসান ঘটবে,'' বলেন পম্পেও৷
তবে সংবাদ সম্মেলনেই তাঁর সাথে দ্বিমত প্রকাশ করে লাভরভ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন ভেনেজুয়েলার সরকারকে যে হুমকি প্রদর্শন করছে তার সাথে গণতন্ত্রের কোনো সম্পর্ক নেই৷
এফএস/এসিবি (এপি,ডিপিএ,রয়টার্স)