ইরানকে নিয়ে উদ্বেগ, শঙ্কা
৮ জুলাই ২০১৯রোববার সংবাদ সম্মেলন করে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার বেধে দেয়া সীমা অতিক্রম করার ঘোষণা দেন ইরান সরকারের মুখপাত্র আলি রাবিয়েই৷ বার্তা সংস্থা এপি বলছে, ঘোষণার পর কাজও শুরু হয়ে গেছে৷ অর্থাৎ ২০১৫ সালে জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামে এক চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে তিন দশমিক ৬৭ মাত্রার তিনশ' কিলোগ্রাম পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার যে সীমা বেধে দেয়া হয়েছিল ইরান সেই সীমা লঙ্ঘন শুরু করেছে৷
গত বছর ডনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে এই চুক্তি থেকে সরিয়ে নিয়ে ইরানের ওপর কঠোর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ শুরু করেন৷ ইরান বলে আসছিল, অবরোধ তুলে না নিলে, অথবা অবরোধের ক্ষতি পূরণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এগিয়ে না এলে তারা আর চুক্তি মানবে না৷
ব্যাপক প্রতিক্রিয়া
ইরান ইউরেনিয়াম বাড়ানোর নির্ধারিত সীমা অতিক্রমের ঘোষণা দেয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ক্ষুব্ধ৷ রোববার প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘ইরান সতর্ক হলে ভালো হয়৷'' তিনি আরো বলেন, ‘‘অনেক খারাপ কাজ করছে ইরান৷'' যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, ‘‘আণবিক কর্মসূচির বিস্তারের এই ঘোষণা ইরানকে আরো একাকিত্ব এবং অবরোধের দিকে নিয়ে যাবে৷''
‘‘ইরান পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হলে তা সারা বিশ্বের জন্য আরো বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াবে''— এমন শঙ্কা প্রকাশ করে পম্পেও জানান, যুক্তরাষ্ট্র মনে করে সব দেশের উচিত ইরানকে বাধা দেয়া৷
জার্মানিও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে৷ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘চুক্তির সঙ্গে যায় না এমন সব বিচ্যুতি বন্ধ করা বা তা থেকে সরে আসার জন্য আমরা ইরানের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি৷''
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মনে করেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার সীমা অতিক্রম করে ইরান আসলে পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত হওয়ার পথে যাত্রা শুরু করেছে৷ চুক্তি স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর প্রতি ইরানের ওপর আরো কঠোর অবরোধ আরোপের আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি৷ গত সপ্তাহে সিরিয়ায় তেল নেয়ার সময় ইরানের একটি তেলবাহী ট্যাঙ্কার জব্দ করে ব্রিটিশ রয়্যাল মেরিন৷ সেই থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে৷ তেহরানের রোববারের ঘোষণার প্রতিক্রিয়া কড়া ভাষাতেই প্রকাশ করেছে ব্রিটেন৷ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘ইরানকে থামতেই হবে৷''
এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নও বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের মুখপাত্র মায়া কোচিয়ানিচ জানিয়েছেন, ২০১৫ সালের চুক্তিতে স্বাক্ষর করা দেশগুলোকে এখন পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে ভাবতে হবে৷
এসিবি/ কেএম (এপি, রয়টার্স)