ইভ্যালি অফিস আবার খুলছে, ভিড় না করার অনুরোধ
২০ আগস্ট ২০২১গত জুলাইয়ে নতুন ই কমার্স নীতিমালা প্রকাশের এক সপ্তাহ আগেই গত ২৭ জুন ঢাকার ধানমণ্ডির ইভ্যালির কার্যালয় বন্ধ করে কার্যক্রম সীমিত করে প্রতিষ্ঠানটি৷
মোহাম্মদ রাসেল বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুক লাইভে এসে আগামী রোববার তাদের কার্যালয় চালু করার ঘোষণা দেন৷ তবে পাওনাদারদের এক সঙ্গে কার্যালয়ে এসে বিশৃঙ্খলা না করার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি৷
রাসেল বলেন, ‘‘অনেকে বলছেন ক্রেতারা দলবেঁধে আসবেন, কিছু একটা হবে৷ অনেকে ওই দিন লাইভ করতে যাচ্ছেন৷ এভাবে জোর করে যেহেতু বেনিফিট আসছে না, আপনারা চেষ্টা করুন, অ্যাপয়েন্টমেন্টের বাইরে না আসার৷’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘রোববার থেকে অন্তত ১৫টা দিন অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়া আসবেন না, গ্রুপ করে আইসেন না৷ কারণ আপনারা আসবেন পজিটিভ সেন্সে, এইটাকে ক্যাপিটালাইজ করে একটা অ্যাক্সিডেন্ট হবে৷ আপনাদের ছোট্ট কিছু ভুলের জন্য সবগুলো ব্যাপার এলোমেলো হয়ে যাবে৷ ব্যাড ইনটেনশনের লোক যখন চান্স নিতে আসবে না, তখন আপনারা আইসেন৷ মিডিয়া ইজ ফ্যান্টাসটিক৷ কিন্তু মিডিয়াকর্মী সবাই একরকম নয়৷ কেউ কেউ হয়ত শুধু নেগেটিভ জিনিসগুলো হাইলাইট করবেন৷’’
এতদিন অফিস না খোলার কারণ জানাতে গিয়ে রাসেল বলেন, ‘‘আমরাও বুঝতে পারছিলাম না এই লকডাউনটা আবার দেবে কিনা৷’’
ইভ্যালি অগ্রিম টাকা নিয়েও মাসের পর মাস গ্রাহকের পণ্য বুঝিয়ে না দেওয়া এবং বাজারমূল্যের চেয়ে অর্ধেক বা তার চেয়েও কম দামে পণ্য বিক্রির ঘোষণা দিয়ে বেচাকেনার স্বাভাবিক ভারসাম্য রক্ষা করতে না পারায় সমালোচিত হচ্ছিল৷
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক তদন্তে ইভ্যালির প্রায় সাড়ে তিনশ কোটি টাকার দায়ভার সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি আলোচনায় আসার পর তুমুল আলোচনা শুরু হয় এবং তাদের ব্যবসা নীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়৷ রাসেলের বিদেশ যাওয়ায়ও নিষেধাজ্ঞা আসে৷ রাসেল বৃহস্পতিবার লাইভে এসে নানা প্রশ্নের উত্তর দেন৷
‘পালাবো না’
রাসেল বলেন, ‘‘অনেকে সন্দেহ পোষণ করেন যে আমরা দেশ ছাড়ি কিনা ৷ আমার মাথায় এটা কখনোই আসেনি ৷ বাংলাদেশ ব্যাংকও দেখেছে আমার কোনো অ্যাসেট নেই, তাহলে আমি কী নিয়ে পালাবো?
অস্বাভাবিক মূল্যছাড় দিতে গিয়ে প্রায় সাড়ে তিনশ কোটি টাকার দায়ভার সৃষ্টি হলেও ব্যাপারটিকে এখনো অস্বাভাবিকভাবে দেখেন না বলে দাবি করে সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা রাসেল৷ তিনি বলেন, ‘‘কোনো বিনিয়োগই নিজস্ব বিনিয়োগ থাকে না৷ কেউ ব্যাংক থেকে নেন, কেউ নেন অন্যদের থেকে৷''
কোম্পানিগুলো সাপ্লায়ারের, ডিলার এবং গ্রামীণফোনেও তাদের আগাম টাকা জমা দেওয়া আছে বলে জানান তিনি৷ এখনো মাসে ১০০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি হচ্ছে দাবি করে রাসেল বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের দুটি পথ খোলা আছে৷ হয়ত তহবিল সংগ্রহ করতে হবে, নয়ত বিক্রিটা নিয়মিত রাখতে হবে৷ যমুনা গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হয়, বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে সময় লাগবে৷’’
রাসেল গ্রাহকদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘যতই প্রেসার দেন না কেন চেক দেওয়ার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই, আমরা পণ্যই দেবো৷ আপনারা যদি বলেন চেক না দিলে আর সময় দেবো না, তাহলে আর সময়ও চাইতে পারবো না৷ দিলে পরদিনই মন্ত্রণালয় থেকে বড় ধরনের অ্যাকশন আসবে৷’’
প্রায়োরিটি পয়েন্ট যাদের বেশি তাদের ডেলিভারি এখন দ্রুত হচ্ছে, তাই প্রায়োরিটি পয়েন্টে কেনাকাটা বাড়ানোর অনুরোধ জানান ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল৷
এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)