ইবোলার বিরুদ্ধে সংগ্রাম দীর্ঘ হবে
১২ নভেম্বর ২০১৪বাদুড়ই ইবোলা ভাইরাসের স্বাভাবিক বাহক৷ অথচ তাদের এতে কোনো ক্ষতি হয় না৷ কিন্তু যে সব মানুষ সংক্রমিত মাংস খায় তাদের রেহাই নেই৷ যেমন গিনির এই শিশুটি৷ এভাবেই সবকিছু শুরু হয়েছিল৷
৭৮ জন রোগীর রক্তে জিনোম পরীক্ষা করে মার্কিন গবেষকরা এই ভাইরাসের প্রসার সম্পর্কে আরও জানতে পেরেছেন৷ কী ভাবে ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে, তার পরিবর্তন ঘটে, কেন সেটি আগ্রাসী হয়ে ওঠে – এমন জিনোম বিশ্লেষণ প্রক্রিয়া তা বুঝতে সাহায্য করে৷ জার্মানির মারবুর্গ শহরের বিশ্ববিদ্যালয় ক্লিনিকের ভাইরোলজিস্টরাও তা জানতে চান৷
তাঁদের হাই-সিকিউরিটি ল্যাবে ছবি তোলার অনুমতি নেই৷গবেষকদের কাছে মূল প্রশ্ন হলো – এই ভাইরাস মানুষের প্রাণ নেয়, কিন্তু বাদুড়কে কেন রেহাই দেয়? ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক সিগফ্রিড বেকার বলেন, ‘‘দেখা যাচ্ছে, বাদুড়ের শরীরের ইমিউন সিস্টেম এই সংক্রমণ ভালোই সামলাতে পারে, মানুষ যা পারছে না৷ আমাদের বিশ্বাস, ইমিউনিটির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাক্রোফেজ হোয়াইট ব্লাড সেল বাদুড় ও মানুষের এবোলা সংক্রমণের ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা প্রতিক্রিয়া দেখায়৷''
কারণ ভাইরাস সবার আগে এই হোয়াইট ব্লাড সেলের উপর হামলা চালায়, যার ফলে মারাত্মক ‘চেন রি-অ্যায়কশন' ঘটে৷ ইমিউন সিস্টেম বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে, মাত্রাতিরিক্ত সেমিও-কেমিক্যালস তৈরি করে, যা আবার ব্লাড ভেসেল-এর উপর হামলা চালায়৷ তখন সেগুলি পাতলা হয়ে যায়, তরল ধরে রাখতে পারে না৷ ফলে ইন্দ্রীয়গুলি বিকল হয়ে পড়ে৷
বিজ্ঞানীদের সামনে অনেক অমীমাংসিত প্রশ্ন রয়েছে৷ যেমন কোষের মধ্যে কী ঘটে? ভাইরাস বংশবৃদ্ধি করতে সেগুলি কী ভাবে ব্যবহার করে? চিকিৎসার রূপরেখা খুঁজতে গবেষকরা এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন৷
তবে এর জন্য আরও সময় লাগবে৷ কয়েকটি টিকা নিয়ে অবশ্য আশার আলো দেখা যাচ্ছে৷ অধ্যাপক বেকার বলেন, ‘‘বানরের ক্ষেত্রে তা ভালোই কাজ করেছে এবং একশো ভাগ সুরক্ষা দিয়েছে৷ মানুষের ক্ষেত্রেও সেটা হুবহু ঘটবে কি না, আমরা তা এখনো জানি না৷ দুটি টিকা নিয়েই পরীক্ষার পরিকল্পনা রয়েছে৷ তবে অনেক দেরি হয়ে গেছে৷ এই ক্লিনিকাল স্টাডি আগেই শুরু করা উচিত ছিল৷''
বর্তমান মহামারির শেষ এখনো দেখা যাচ্ছে না৷ আরও অনেক মানুষ এই ভাইরাসের শিকার হবেন৷