1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

৫৯ জন বিদেশিকে সম্মাননা

সমীর কুমার দে, ঢাকা২ অক্টোবর ২০১৩

মুক্তিযুদ্ধে যেসব হৃদয়বান মানুষ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন, তাদের ধারাবাহিকভাবে সম্মাননা জানাচ্ছে বাংলাদেশ৷ মঙ্গলবার সপ্তম পর্বে আরো ৫৯ জন বিদেশি বন্ধুকে সম্মাননা জানানো হয়৷

https://p.dw.com/p/19sQU
ছবি: DW/S. Dey

বাংলাদেশের নির্যাতিত ও মুক্তিপ্রাণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে এসব বিদেশি বন্ধুরা প্রমাণ করেছিলেন যে, মানবমুক্তির লড়াইয়ে দেশ, রাষ্ট্র, জাতি কোনো বাধা নয়৷ বিশ্বজুড়ে স্বার্থ, হানাহানি ও ঘৃণ্য রাজনীতির বিপক্ষে দাঁড়িয়ে তাঁরা বলেছিলেন মানুষকে ভালোবাসার কথা৷ তাই বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধে অকৃত্রিম বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেয়া এসব মহত্‍প্রাণ মানুষদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন৷ জাতীয় সংসদের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রীবর্গ, প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টাগণ, সংসদ সদস্যবর্গ, কূটনীতিকবর্গ এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এই সম্মাননা অনুষ্ঠানে যোগ দেন৷ অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এ সমস্ত হৃদয়বান মানুষদের অবদানের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন৷ আর সম্মাননা হিসেবে প্রত্যেককে দেয়া হয় ২২ ভরি রূপার উপর এক ভরি স্বর্ণ দিয়ে খচিত জাতীয় স্মৃতিসৌধ সংবলিত পদক৷

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভবিষ্যতে আর কেউ বাংলাদেশের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারবে না৷ তিনি বলেন, ‘‘যারা আমাদের মা-বোন, বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল তারাই ক্ষমতায় এসেছিল৷ তারা ক্ষমতায় ছিল ২১ বছর৷ মানুষকে এ জন্য অনেক যন্ত্রণার শিকার হতে হয়েছে৷ ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আবার উজ্জীবিত করি৷ আমাদের ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনে এ সুযোগ দেয়ার জন্য দেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানাই৷'' প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ নিয়ে কাজ করতে হবে৷ এর সুফল জনগণের মধ্যে আমরাই ছড়িয়ে দিতে পারবো৷ বিদেশি যেসব বন্ধুরা আমাদের সহযোগিতা করেছিল তাঁদের আমরা সম্মানিত করেছি৷ আমরা একটি কৃতজ্ঞ জাতি৷ যাঁরা যতটুকু করেছে আমরা যেন তা স্মরণ করি৷''

Indien Ministerpräsidentin Indira Gandhi
একাত্তরে বিশেষ অবদানের জন্য ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীসহ ৫৯ জন বিদেশি বন্ধুকে সম্মাননা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকারছবি: picture-alliance/KPA

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে মিত্রবাহিনীসহ বিভিন্ন দেশের রাজনীতিক, কূটনীতিক, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন সংগঠন সে সময় নানাভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সহযোগিতা করেন৷ বিশ্বের কাছে তাঁরা তুলে ধরেন পাকিস্থানি বাহিনীর বর্বর গণহত্যার কথা, বাঙালির স্বাধীকারের দাবির কথা৷ মুক্তিযুদ্ধের ৪০ বছর পর আরো একবার প্রমাণিত হলো যে বাঙালি জাতি এক বিশাল হৃদয়ের অধিকারী৷ দেরিতে হলেও তারা ভোলেনি এই বন্ধুদের অবদান৷ দেশ, রাষ্ট্র, জাতিতে ভিন্নতা যতই থাকুক মনুষত্বই মানুষের পরিচয়৷ মহান মুক্তিযুদ্ধে যখন বাঙালিরা যুদ্ধ করছে তখন বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন অসংখ্য মানুষ৷

মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা বিদেশি বন্ধুদের মধ্যে এবার সম্মাননায় ভারতের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ফখরুদ্দিন আলী আহমদ ও প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী গুলজারিলাল নন্দকে ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা' দেয়া হয়৷ এছাড়া অন্য ৫৭ ব্যক্তি ও মিশরভিত্তিক সংগঠন আফ্রো-এশিয়ান পিপলস সলিডারিটি অর্গানাইজেশনকে দেয়া হয় ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা'৷ ফখরুদ্দিন আলী আহমদের পক্ষে তাঁর ছেলে পারভেজ আহমদ ও গুলজারিলাল নন্দের পক্ষে তাঁর ছেলে তেজুস নাইক সম্মাননা গ্রহণ করেন৷ এবার সম্মাননা পাওয়াদের মধ্যে পাকিস্তানের রাজনীতিবিদ খান আবদুল গাফফার খান ও খান আবদুল ওয়ালী খান, ভারতের বিখ্যাত লেখক অনিরুদ্ধ রায়, জাপানের সমাজকর্মী কেন আরিমিটসুসহ ডাক্তার, সেনা অফিসার, সাংবাদিক ও রাজনীতিকরা রয়েছেন৷

এবারের সম্মাননা প্রাপ্তদের তালিকায় ছিলেন ভারতের ৪৪ জন, পাকিস্তানের চার জন, যুক্তরাষ্ট্রের চার জন, যুক্তরাজ্যের দু'জন, জাপানের দু'জন এবং শ্রীলঙ্কার, তুরস্ক ও মিশরের একজন করে৷ ২০১১ সালের ২৫ জুলাই ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে ‘বাংলাদেশ স্বাধীনতা সম্মাননা' দেয়ার মাধ্যমে বন্ধুদের সম্মাননা জানানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়৷ ইন্দিরা গান্ধীর পক্ষে তাঁর পুত্রবধূ ও ভারতের কংগ্রেস পার্টির সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে সম্মাননা গ্রহণ করেন৷ এছাড়া গত ৪ মার্চ ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি গ্রহণ করেন ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা' পদক৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য