‘ইউরো বাঁচাতে শক্ত প্রাচীর, তবে যথেষ্ট নয়’
১০ ডিসেম্বর ২০১১ইউরো অঞ্চলের অর্থনৈতিক কাঠামোকে আরো শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে ব্রাসেলস বৈঠকে একমত হয়েছে ইউরো অঞ্চলের ১৭টি দেশ এবং এই উদ্যোগের ব্যাপারে ইতিবাচক সম্মতি মিলেছে ইউরো চালু নেই এমন নয়টি সদস্য দেশেরও৷ তবে নতুন এই অর্থ কাঠামো চুক্তির ক্ষেত্রে একমত নয় শুধু যুক্তরাজ্য৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ বৈঠকে প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভেটো দেওয়ার পর যুক্তরাজ্যের অবস্থান নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা৷
একদিকে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনকে বীরোচিত সংবর্ধনা জানিয়েছে তাঁর দেশের ইইউ-বিমুখ মনোভাবের রাজনীতিক মহল এবং জোটের শরিক দলগুলো৷ তবে অন্যদিকে ক্যামেরনের এমন শক্ত অবস্থানের ফলে ইইউ-তে যুক্তরাজ্যের প্রভাব হ্রাসের আশঙ্কা ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে বিভিন্ন মহলে৷ ব্রিটিশ পত্রিকা ‘ডেইলি মেল' ক্যামেরনের ভূমিকাকে স্বাগত জানিয়েছে৷ এছাড়া ট্যাবলয়েড ‘সান' যুদ্ধকালীন নেতা উইন্সটন চার্চিলের মতো পোশাকে ডেভিড ক্যামেরনকে তুলে ধরেছে তাদের প্রথম পাতায়৷ অন্যদিকে, ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট' এবং ‘গার্ডিয়ান' পত্রিকার দৃষ্টিতে ‘যুক্তরাজ্যকে ত্যাগ করেছে ইইউ' এবং ‘ক্যামেরন যুক্তরাজ্যকে বিভক্ত করে ফেলেছে'৷
ব্রাসেলস বৈঠকে নতুন ইউরোপীয় অর্থকাঠামো চুক্তির ব্যাপারে অগ্রগতির পর ইউরো'র উপর এর প্রভাব সম্পর্কে অবশ্য ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন ব্রিটিশ অর্থ মন্ত্রী জর্জ অসবোর্ন৷ বিবিসি রেডিও'কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অসবোর্ন বলেছেন, ‘‘আমি মনে করি যে পরিস্থিতি এখন আগের চেয়ে ভালো হয়েছে, কারণ তারা এখন তাদের বাজেট নীতিমালার ক্ষেত্রে নিজেদের মধ্যে একটি সমন্বয় করতে যাচ্ছে যা আসলেই প্রয়োজন৷ তবে এটা প্রয়োজনীয় একটি পদক্ষেপ হলেও ইউরো'কে আরো কার্যকরী ভূমিকায় উন্নীত করতে এটি যথেষ্ট নয়৷''
ব্রাসেলস বৈঠকে মূলত এই নতুন অর্থকাঠামো চুক্তির পক্ষে প্রধান ভূমিকা রেখেছে ইউরোপের শীর্ষ অর্থনীতির দুই দেশ জার্মানি এবং ফ্রান্স৷ তাই ইইউ সম্মেলনে এই নতুন চুক্তির কার্যকারিতার ব্যাপারে জার্মান অর্থ মন্ত্রী ভোল্ফগাঙ্গ শোয়েবলে বলেন, এই সম্মেলনে যে ঐকমত্য হয়েছে তা ইউরো অঞ্চলের ঋণ সংকট দূর করবে৷ এছাড়া এর মাধ্যমে জার্মানি একটি শক্তিশালী ইউরোপ গড়ে তুলতে চায় বলেও উল্লেখ করেন শোয়েবলে৷ তবে অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর ভেরন্যার ফাইমান ব্রাসেলস বৈঠকের চুক্তিকে যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেছেন শনিবার৷
দৈনিক পত্রিকা জালসবুর্গার নাখরিশটেন'কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘ইউরোকে বাঁচাতে একটি শক্ত প্রাচীর তৈরি হয়েছে তবে আগামী বছরগুলোতে অর্থনৈতিক বাজারের উপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলার জন্য এটি যথেষ্ট শক্তিশালী নয়৷'' উল্লেখ্য, ব্রাসেলস বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুসারে এই নতুন অর্থ কাঠামো চুক্তি আগামী বছরের মার্চ মাস নাগাদ চূড়ান্ত রূপ লাভ করবে৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: জাহিদুল হক